প্রতীকী ছবি।
মানসিক রোগের চিকিৎসা কেন্দ্রে এক রোগীর মৃত্যুতে অনিচ্ছাকৃত মৃত্যু ঘটানোর মামলায় গ্রেফতার করা হল চিকিৎসক রূপেন্দ্র কুমার ব্রহ্মকে (৭৫)। সোমবার রাতে সল্টলেক থেকে গ্রেফতার হন তিনি। মঙ্গলবার তাঁকে বিধাননগর আদালতে পেশ করা হয়। ১৪ দিনের জন্য জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
পুলিশ জানায়, ২০ মে, সল্টলেকে, বিধাননগরের দক্ষিণ থানা এলাকার একটি মানসিক রোগের ক্লিনিকে মৃত্যু হয় হরিণাভির বাসিন্দা রণদীপ বসুর (৪১)। তাঁর মৃত্যুতে পরিবারের তরফে চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ করা হয়। ময়না-তদন্তে দেখা যায়, মৃত্যুর কারণ মস্তিষ্ক, পাকস্থলি, ডায়াফ্রামে ক্ষত। তাঁর সারা দেহে আঘাতেরও চিহ্ন ছিল। ঠোঁট ও নখ নীল হয়ে গিয়েছিল।
প্রাথমিক তদন্তে অনুমান, তাঁকে মারধর করা হয়েছে। কিন্তু পুলিশের দাবি, তদন্তে সহযোগিতা করেননি ওই ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ বা ধৃত চিকিৎসক। এমনকী, চিকিৎসা সংক্রান্ত নথিও পায়নি পুলিশ। জটিলতা বাড়িয়েছিল ডেথ সার্টিফিকেটও। তাতে বলা হয়েছিল, হৃদ্রোগে মৃত্যু হয়েছে রণদীপের। পরিবারের অভিযোগ, ডেথ সার্টিফিকেটে মৃত্যুর সময় যা বলা হয়েছে, তা-ও ঠিক নয়। এর পরে মৃত্যুর কারণ হিসেবে ময়না-তদন্তের রিপোর্টে উঠে আসে অন্য তথ্য।
পুলিশ জানায়, ৩ এপ্রিল, মানসিক অবসাদের চিকিৎসা করাতে সল্টলেকের একটি ক্লিনিকে ভর্তি হন রণদীপ। ২০ মে ওই রোগীর মৃত্যুর কথা পরিবারকে জানানো হয়। পরিবারের অভিযোগ, ভর্তির পরে তাঁদের রোগীর সঙ্গে দেখা করতে দেওয়া হয়নি। ১৯ মে চিকিৎসক জানিয়েছিলেন, রোগী ভাল আছেন। ২০ মে রোগীকে দেখতে যাওয়ার কথা ছিল তাঁর পরিবারের। সে দিনই জানানো হয়, রোগীর মৃত্যু হয়েছে।
এ দিন আদালতে, সরকার পক্ষের আইনজীবী ময়না-তদন্তের রিপোর্ট এবং ওই ক্লিনিকের অসহযোগিতার দিকগুলি তুলে ধরেন। অভিযুক্তের তরফে আইনজীবী জানান, রূপেন্দ্র কুমার ব্রহ্ম প্রতিষ্ঠিত চিকিৎসক। প্রতিদিন অসংখ্য মানুষের চিকিৎসা করেন তিনি। তাঁকে তলব না-করে সরাসরি গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
অভিযোগকারীর আইনজীবী জানান, গাফিলতির অভিযোগে মামলা হয়। কিন্তু তার পর তদন্তে অন্য তথ্য উঠে আসে। তার ভিত্তিতে পুলিশ অনিচ্ছাকৃত মৃত্যু ঘটানোর ধারা যুক্ত করতে আদালতে আবেদন করে। আদালত আবেদন গ্রহণ করেছে। খুন কিংবা অনিচ্ছাকৃত খুনের ধারায় তদন্ত চালানোর ক্ষেত্রে পুলিশকে স্বাধীনতা দিয়েছেন আদালত। এ দিন তথ্য প্রমাণ গোপন করারও অভিযোগ উঠেছে ধৃত চিকিৎসকের বিরুদ্ধে।
তবে পুলিশ ওই চিকিৎসককে হেফাজতে নেওয়ার আবেদন করল না কেন, এ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। পুলিশের একাংশের বক্তব্য, চিকিৎসকের বয়স ও শারীরিক অবস্থা বিবেচনা করে হেফাজতের আবেদন করা হয়নি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy