ভাঙাচোরা এই ফিডার বক্স স্পর্শ করতেই তড়িদাহত হয়ে মৃত্যু হয় প্রসেনজিতের। নিজস্ব চিত্র
ঘাতক সেই ফিডার বক্স!
দশ মাস আগেই একবালপুরের ডেন্ট মিশন রোডের একটি ফিডার বক্সে আগুন ধরে গিয়েছিল। জমা জলে তড়িদাহত হয়ে মৃত্যু হয়েছিল দু’জনের। তার পরে খিদিরপুরের ফিডার বক্সে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যু হল এক জনের। ফিডার বক্স থেকে ধারাবাহিক দুর্ঘটনা ঘটলেও সে দিকে কেন নজর দেওয়া হচ্ছে না, স্বাভাবিক ভাবেই তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। আঙুল উঠেছে কলকাতা পুরসভার দিকেও।
কারণ, গত বছরেই বৃষ্টির মরসুম শুরুর আগে মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায় জানিয়েছিলেন, জমা জলে বা খোলা ফিডার বক্স থেকে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হওয়া রুখতে সিইএসসি-সহ সংশ্লিষ্ট সব দফতর, সংস্থার সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করা হবে। বাড়তি নজরদারি চালানো হবে শহর জুড়ে। কিন্তু বাস্তবে কতটা তা করা হচ্ছে, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন পুর আধিকারিকদের একাংশই। এক পুর আধিকারিকের কথায়, ‘‘গত বছর বর্ষার আগে কোথায় এ রকম সমস্যা রয়েছে, সে ব্যাপারে পরিদর্শন করা হয়েছিল বটে। কিন্তু এ ক্ষেত্রে ধারাবাহিক ভাবে যে নজর রাখা দরকার, তা হয়নি। সত্যি বলতে কী, সেই পরিকাঠামোও তো নেই।’’
তবে শুধু খিদিরপুরই নয়, সারা শহর জুড়েই এমন ফিডার বক্সের বিপজ্জনক ফাঁদ পাতা। কোনওটির দরজা খোলা, কোনওটির আবার দরজাই উধাও। বেশির ভাগ ফিডার বক্স থেকেই বিপজ্জনক ভাবে বেরিয়ে রয়েছে বিদ্যুতের তার। পার্ক সার্কাস, মৌলালি, শিয়ালদহ-সহ একাধিক গুরুত্বপূর্ণ এলাকাতেও বাতিস্তম্ভ-ফিডার বক্স রয়েছে অত্যন্ত বিপজ্জনক ভাবে। পুরসভা জানাচ্ছে, সব ক’টিই তাদের নয়। শহর জুড়ে এই হাজারো বিদ্যুৎ স্তম্ভ-ফিডার বক্সের কোনওটি পুরসভার, কোনওটি পূর্ত দফতর আবার কোনওটি সিইএসসি-র। অভিযোগ, এ সব বাতিস্তম্ভ-ফিডার বক্সের বেহাল দশা নিয়ে বারবার অভিযোগ উঠলেও সুরাহার ব্যবস্থা করা হয় না। তাই বিপদ মাথায় নিয়েই ফুটপাথ দিয়ে হাঁটতে হয় শহরবাসীকে।
যদিও পুর কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, বর্ষার আগে পুরসভার যে সব ফিডার বক্সে সমস্যা রয়েছে, সেগুলি মেরামতি করা হয়। তা ছাড়া শহরের যে সব জায়গায় জল জমে, সেই জায়গাগুলিতে বিপজ্জনক ভাবে কোনও ফিডার বক্স রয়েছে কি না, তাও চিহ্নিত করার কাজ শুরু হয়েছে। আলো বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত মেয়র পারিষদ মনজর ইকবাল জানান, ফিডার বক্সের অবস্থা কেমন, খতিয়ে দেখতে সিইএসসি-র সঙ্গে যৌথ ভাবে পরিদর্শন করা হচ্ছে। মনজারের কথায়, ‘‘পুরসভার ফিডার বক্সে কোনও সমস্যা থাকলে আমরা তা মেরামতি করে দিই। এমনিতে নির্দিষ্ট সময় অন্তর ফিডার বক্সগুলির অবস্থা কেমন, তা পরীক্ষা করে দেখা হয়।’’ তবে খিদিরপুরে কী হয়েছে, তা নিয়ে রিপোর্ট পাওয়ার পরেই মন্তব্য করবেন বলে জানিয়েছেন মেয়র পারিষদ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy