কামারডাঙা রেল কলোনিতে জমা জলে ভাসছে মশার লার্ভা। বুধবার। —নিজস্ব চিত্র।
শহরে ডেঙ্গি পরিস্থিতি ক্রমেই ভয়াবহ আকার নিচ্ছে। দক্ষিণ কলকাতার পাশাপাশি এ বার উত্তরের একাধিক ওয়ার্ডেও ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা বাড়তে থাকায় চিন্তায় পুর প্রশাসন।
কলকাতা পুরসভার স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্রের খবর, গত বছর সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি পর্যন্ত ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়েছিলেন ২৪০০ জন। চলতি বছরে সেই সংখ্যাটা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৬০০। গত দু’সপ্তাহে দক্ষিণের পাশাপাশি উত্তর কলকাতার একাধিক ওয়ার্ডেও ডেঙ্গির প্রকোপ বেড়েছে। পুর স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, উত্তরের কাশীপুর, পাইকপাড়া, টালা, শ্যামবাজার, বাগবাজার, মানিকতলা, শিয়ালদহ, বৌবাজার, উল্টোডাঙা এলাকায় গত এক সপ্তাহে ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েছে কয়েক গুণ। পুর স্বাস্থ্য দফতরের এক আধিকারিকের কথায়, ‘‘সেপ্টেম্বরের শেষ থেকেই ডেঙ্গির সংক্রমণ খুব বেড়ে যায়। চলতি বছরে দক্ষিণ কলকাতার পাশাপাশি উত্তরেও যে হারে ডেঙ্গির প্রকোপ বাড়ছে, তাতে আমরা সব দিক থেকেই সতর্ক রয়েছি। স্বাস্থ্যকর্মীদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে। স্বাস্থ্যকর্মীরা যাতে প্রতিটি বাড়িতে যান, সে বিষয়ে জোর দিতে বলা হয়েছে।’’
মঙ্গলবার পুরসভার ডেপুটি মেয়র তথা মেয়র পারিষদ (স্বাস্থ্য) অতীন ঘোষ জানান, ৫৬ নম্বর ওয়ার্ডে, এন্টালির কামারডাঙা রেল কলোনি কার্যত মশার আঁতুড়ঘরে পরিণত হয়েছে। বুধবার তিনি স্বাস্থ্য বিভাগের আধিকারিকদের নিয়ে ওই এলাকা পরিদর্শন করেন। সেখানে ওই পরিস্থিতির জন্য রেলের ভূমিকায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তাঁর অভিযোগ, ‘‘রেলকে বার বার বলা সত্ত্বেও এলাকা পরিষ্কারের কাজ হচ্ছে না। আবর্জনায় জল জমে মশার লার্ভা জন্মাচ্ছে।’’ এ দিন তিনি জমা জলে মশার লার্ভার নমুনা রেল আধিকারিকদেরও দেখান। অতীনের হুঁশিয়ারি, ‘‘রেল কলোনি পরিষ্কার করার জন্য রেল কর্তৃপক্ষকে ৪৮ ঘণ্টা সময় দিলাম। কাজ না হলে পুরসভা আবর্জনা সাফাই করে রেলের থেকে টাকা আদায় করবে।’’ রেলের পাল্টা দাবি, ‘‘এ নিয়ে কোনও সুনির্দিষ্ট অভিযোগ আসেনি। অভিযোগ এলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’
পুর স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্রের খবর, শহরের ১৬টি বরো এলাকার মধ্যে ১০, ১২, ১৩ নম্বর বরো এলাকায় ডেঙ্গি সংক্রমণের হার ঊর্ধ্বমুখী। উত্তরের ১ নম্বর বরো এলাকায় ডেঙ্গি গত দু’-এক সপ্তাহে বেড়েছে। উত্তরের একাধিক ওয়ার্ডে ঘরে ঘরে জ্বর। পুরসভার স্বাস্থ্য ক্লিনিকে জ্বরে আক্রান্তের ভিড় বাড়ছে। পুরসভা সূত্রের খবর, এ বছর ১০ নম্বর বরো এলাকার ৮১ নম্বর ওয়ার্ড, ১৩ নম্বর বরো এলাকার ১১৮ নম্বর ওয়ার্ড ও ১ নম্বর বরো এলাকার ছ’নম্বর ওয়ার্ডে ডেঙ্গি আক্রান্ত সব চেয়ে বেশি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy