Advertisement
০৮ নভেম্বর ২০২৪
Swimmers

অনুমতি পেলেও অনুশীলনের জল নেই দক্ষ সাঁতারুদের

কলেজ স্কোয়ারে রয়েছে পাঁচটি সাঁতার প্রশিক্ষণ কেন্দ্র। একটির কর্মকর্তা সন্তোষ দাস জানান, পাঁচটি সাঁতার ক্লাবের জনা কুড়ি সাঁতারু জাতীয় স্তরে সাঁতার কাটেন।

অব্যবহার্য: লকডাউনের সময় থেকে এখনও বন্ধ সুইমিং পুল। জমে আছে পুরনো জল। রবিবার, কলেজ স্কোয়ারে। ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক

অব্যবহার্য: লকডাউনের সময় থেকে এখনও বন্ধ সুইমিং পুল। জমে আছে পুরনো জল। রবিবার, কলেজ স্কোয়ারে। ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক

আর্যভট্ট খান 
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৪ ডিসেম্বর ২০২০ ০৩:০৭
Share: Save:

সাঁতারের মরসুম প্রতিবার সাধারণত শেষ হয় সেপ্টেম্বরে। কিন্তু এ বার করোনার কারণে সাঁতার বন্ধ ছিল। এখনও সাঁতার প্রশিক্ষণের অনুমতি দেয়নি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। তবে জাতীয় স্তর কিংবা বড় প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারী সাঁতারুদের অবশ্য স্বাস্থ্য বিধি মেনে সাঁতার কাটার অনুমতি মিলেছে মাস কয়েক আগেই। যদিও শহরের কিছু সাঁতার প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের কর্মকর্তাদের অভিযোগ, পরিকাঠামোর অভাবে দক্ষ সাঁতারুরা এ বার গোটা বছরই প্রায় অনুশীলনের বাইরে থাকলেন। তাঁদের বক্তব্য, কলেজ স্কোয়ার বা হেদুয়ার মতো সুইমিং পুলে জমা জল ফেলে দ্রুত নতুন করে জল ভরে দিলে দক্ষ সাঁতারুরা অন্তত অনুশীলন করতে পারবেন।

কলেজ স্কোয়ারে রয়েছে পাঁচটি সাঁতার প্রশিক্ষণ কেন্দ্র। একটির কর্মকর্তা সন্তোষ দাস জানান, পাঁচটি সাঁতার ক্লাবের জনা কুড়ি সাঁতারু জাতীয় স্তরে সাঁতার কাটেন। বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় সাঁতার কাটতে অন্য রাজ্যেও যান। তাঁরা কেউই এ বার অনুশীলন করতে পারেননি। সন্তোষবাবু বলেন, ‘‘কলেজ

স্কোয়ারের জলে এখন সাঁতার কাটা যাবে না। কারণ এক বছর ধরে জল জমে দূষিত হয়ে রয়েছে। পুরসভার কাছে আর্জি দ্রুত ওই জল ফেলে নতুন জল ভরে দিলে দক্ষ সাঁতারুরা সাঁতারের আগামী মরসুম শুরু হলেই অনুশীলন করতে পারবেন। তাঁদের সাঁতার কাটার অনুমতিও তো দিয়েছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক।’’ সন্তোষবাবু জানান, দক্ষ সাঁতারুরা এখন সাঁতার কাটতে পারছেন না, কলেজ স্কোয়ারে এসে শারীরচর্চা করে চলে যাচ্ছেন।

শহরের আর এক সাঁতার প্রশিক্ষণ কেন্দ্র হেদুয়ার একটি ক্লাবের কর্মকর্তা সনৎ ঘোষ বলেন, ‘‘এই করোনা পরিস্থিতিতে সাঁতার প্রশিক্ষণের তো প্রশ্নই নেই। কিন্তু দক্ষ সাঁতারুদের জন্য হেদুয়ার জল দ্রুত পরিষ্কার করে নতুন জল ভরে দিলে ভাল হত। এ নিয়ে আমরা পুর প্রশাসনকে ইতিমধ্যেই অনুরোধ করেছি।’’

রবীন্দ্র সরোবেরের একটি সাঁতার প্রশিক্ষণ কেন্দ্রর এক কর্মকর্তা অমিত বসু বলেন, ‘‘রবীন্দ্র সরোবরের যেখানে আমাদের প্রশিক্ষণ হয় বা দক্ষ সাঁতারুরা সাঁতার কাটেন, সেখানের জল তো তো এখনও সাফ হয়নি। তাই পাশের একটি পুকুরে কয়েক জন দক্ষ সাঁতারু মাঝেমধ্যে এসে অনুশীলন করছেন ঠিকই, কিন্তু এই অনুশীলন যথেষ্ট নয়।’’

হেদুয়ায় সাঁতারের অনুশীলন করেন জাতীয় স্তরের সাঁতারু সিদ্ধার্থ বসাক। তিনি বলেন, ‘‘আমি শেষ বার ২০১৯ সালে ভূপালে সিনিয়র ন্যাশনাল প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেছিলাম। এ বার তো কিছুই হল না। অন্তত হেদুয়ায় পরিষ্কার জল পেলে পরের বারের জন্য অনুশীলন শুরু করে দিতে পারব।’’ যদিও পুরসভার প্রশাসকমণ্ডলীর সদস্য তথা প্রাক্তন মেয়র পারিষদ (উদ্যান) দেবাশিস কুমার বলেন, ‘‘যত দিন পর্যন্ত না সাঁতার প্রশিক্ষণের অনুমতি না মেলে, তত ক্ষণ এই জল পরিষ্কার করার পরিকল্পনা নেই।’’

সাঁতারু বুলা চৌধুরী মনে করেন জাতীয় স্তরের সাঁতারুদের অনুশীলনের জন্য সরকারের উদ্যোগী হওয়া দরকার। তিনি বলেন, ‘‘করোনার মধ্যে আমজনতার সাঁতারের প্রশিক্ষণের কথা বলছি না। তবে দক্ষ সাঁতারুদের তো সাঁতারের অনুশীলনের একটা পরিকাঠামো রাজ্যে থাকা দরকার। জাতীয় স্তরে যাঁরা সাঁতার কাটেন অনুশীলন করতে না পারায় তাঁদের এ বার প্রচুর ক্ষতি হল।’’

বুলা জানান, জাতীয় পর্যায়ে যাঁরা এলিট গ্রুপের সাঁতারু, তাঁদের দুবাইয়ে নিয়ে গিয়ে সাঁতারের অনুশীলন করানো হচ্ছে বলে শুনেছেন। কিন্তু সেই সুযোগ তো খুব কম সংখ্যক সাঁতারু পেয়েছেন। বেলেঘাটায় সুভাষ সরোবেরে সুইমিং পুল সরকার রক্ষণাবেক্ষণ করে। ওই সুইমিং পুলের জল পরিস্রুত করে করোনা স্বাস্থ্যবিধি মেনে জাতীয় স্তরের বা বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করা সাঁতারুদের সাঁতার অনুশীলনের সুযোগ করে দেওয়া যেতে পারে বলে মনে করেন বুলা।

অন্য বিষয়গুলি:

Swimmer Not enough water to practice College Square
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE