কানাডার নতুন প্রধানমন্ত্রীর নাম জানা যাবে রবিবারই। দেশের লিবারাল পার্টির নেতা নির্বাচিত হবেন ভোটাভুটির মাধ্যমে। তিনিই প্রধানমন্ত্রী হিসাবে দায়িত্ব নেবেন। জাস্টিন ট্রুডোর উত্তরসূরি হওয়ার দৌড়ে আছেন মোট চার জন। তাঁদের মধ্যে এখনও পর্যন্ত সবচেয়ে এগিয়ে মার্ক কার্নে। ব্যাঙ্ক অফ কানাডার গভর্নর ছিলেন তিনি। পরে ব্যাঙ্ক অফ ইংল্যান্ডের প্রথম অ-ব্রিটিশ গভর্নর হিসাবেই নির্বাচিত হয়েছিলেন। কার্নে নির্বাচনে জয়ী হলে তিনি হবেন কানাডার প্রথম প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রিসভায় যাঁর কোনও পূর্ব অভিজ্ঞতা নেই।
কার্নে ছাড়াও ট্রুডোর উত্তরসূরির দৌড়ে আছেন প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী ক্রিস্টিয়া ফ্রিল্যান্ড। গত ডিসেম্বরে ট্রুডোর মন্ত্রিসভা থেকে তিনি ইস্তফা দেন। তার পর থেকেই ট্রুডোর বিরুদ্ধে মন্ত্রিসভায় এবং তাঁর দলের অন্দরে অসন্তোষ প্রকট হয়ে উঠেছিল। এর ফলে জানুয়ারি মাসে পদত্যাগের কথা ঘোষণা করেছিলেন ট্রুডো। কার্নে এবং ক্রিস্টিয়াকেই লিবারাল পার্টিতে ট্রুডোর বিরুদ্ধে ‘প্রকৃত’ প্রতিদ্বন্দ্বী বলে মনে করা হচ্ছে। এ ছাড়া আরও দু’জন লড়াইয়ে আছেন। তাঁরা হলেন করিনা গোল্ড। কনিষ্ঠতম সদস্য হিসাবে কানাডার মন্ত্রিসভায় স্থান পেয়েছিলেন তিনি। আর আছেন শিল্পপতি ফ্র্যাঙ্ক বেলিস।
আরও পড়ুন:
কানাডার লিবারাল পার্টির প্রায় ১ লক্ষ ৪০ হাজার সদস্য নতুন নেতা নির্বাচনের উদ্দেশ্যে গোপন ভোট দিয়েছেন। তার ফলাফল ঘোষণা করা হবে রবিবার। মনে করা হচ্ছে, নতুন প্রধানমন্ত্রী দায়িত্ব নেওয়ার পরই দেশে সাধারণ নির্বাচনের আয়োজন করবেন। তা যদি না-করা হয়, বিরোধী দল চলতি মাসেই অনাস্থা ভোটের মাধ্যমে সাধারণ নির্বাচন আয়োজন করতে বাধ্য করতে পারে সরকারকে।
প্রতিবেশী আমেরিকায় ডোনাল্ড ট্রাম্প ক্ষমতায় আসার পর থেকে কানাডার বিরুদ্ধে একের পর এক হুমকি দিয়ে গিয়েছেন। কখনও কানাডা সীমান্ত দিয়ে অবৈধ অনুপ্রবেশ ঠেকাতে বার্তা দিয়েছেন তিনি। কখনও কানাডার পণ্যের উপর ২৫ শতাংশ বাড়তি কর চাপানোর কথা বলেছেন। যদিও কর চাপানোর সিদ্ধান্ত আপাতত স্থগিত রেখেছে আমেরিকা। এর মাঝে কানাডার প্রধানমন্ত্রীর কুর্সিতে যে লিবারাল নেতাই বসুন না কেন, তাঁর সামনে প্রধান চ্যালেঞ্জ হতে চলেছেন ট্রাম্প।
কানাডার প্রধানমন্ত্রীর দৌড়ে থাকা চার নেতাই কট্টর ট্রাম্পবিরোধী। প্রচারে বার বার তাঁদের মুখে ট্রাম্পের প্রসঙ্গ উঠে এসেছে। কার্নে তো আমেরিকার নতুন প্রেসিডেন্টকে এক বার ‘ভলডেমর্ট’ বলেও কটাক্ষ করেছিলেন। জনপ্রিয় ব্রিটিশ নভেল ‘হ্যারি পটার’-এর কাহিনির প্রধান খলনায়ক ‘ভলডেমর্ট’। তাঁর সঙ্গে তুলনা করে ট্রাম্পের ‘স্বেচ্ছাচার’কে কটাক্ষ করেছিলেন কার্নে।
এখনও পর্যন্ত চার লিবারাল প্রার্থীর মধ্যে দলে সর্বোচ্চ জনপ্রিয়তা পেয়েছেন কার্নে। তিনি দলের তহবিলে সবচেয়ে বেশি অর্থও সঞ্চয় করতে পেরেছেন। ব্যাঙ্কের গভর্নর হিসাবে দায়িত্ব পালনের অভিজ্ঞতা থাকায় যে কোনও অর্থনৈতিক সঙ্কট তিনি সহজে মোকাবিলা করতে পারবেন বলে মনে করছেন অনেকে। আশঙ্কা, আমেরিকা শুল্ক আরোপ করলে অর্থনৈতিক সঙ্কটের মুখোমুখি হতে পারে কানাডা।