গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
আমহার্স্ট স্ট্রিট থানায় অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনা নিয়ে আবার মামলা কলকাতা হাই কোর্টে। এ বার আবেদনকারী পক্ষের অভিযোগ, মৃত অশোককুমার সিংহের দেহ দিচ্ছে না পুলিশ। আদালতের নির্দেশে মরদেহ এখন এসএসকেএম হাসপাতালে রয়েছে। সেই দেহ মৃতের পরিবারকে দেওয়ার আর্জি জানিয়ে কলকাতা হাই কোর্টের দৃষ্টি আকর্ষণ করলেন আইনজীবী প্রিয়ঙ্কা টিবরেওয়াল।
প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম এবং বিচারপতি হিরণ্ময় ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চের কাছে শনিবার এ সংক্রান্ত আবেদন জানান প্রিয়ঙ্কা। তাঁর বক্তব্য, যে হেতু দ্বিতীয় ময়নাতদন্তের প্রয়োজনীয়তা নেই, তাই পরিবার চাইছে দেহ নিয়ে নিতে। কিন্তু পুলিশ দিতে রাজি নয়। তারা বলছে কোর্টের নির্দেশ ছাড়া মরদেহ দেওয়া যাবে না।
প্রধান বিচারপতি জানান, সরকারি আইনজীবীকে বিষয়টি জানানো হোক। শনিবারই এ বিষয়ে শুনানি হবে হাই কোর্টে। আমহার্স্ট স্ট্রিট থানায় রহস্যজনক ভাবে মৃত অশোকের দেহ কলকাতা পুলিশ মর্গ থেকে এসএসকেএম হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার জন্য শুক্রবার নির্দেশ দিয়েছিল প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ। পাশাপাশি, আমহার্স্ট স্ট্রিট থানার সিসিটিভি ফুটেজ সংরক্ষণ করতে কলকাতার পুলিশ কমিশনারকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আগামী বৃহস্পতিবার এই মামলার পরবর্তী শুনানি হবে। তার আগেই দেহ ফেরতের আবেদন জানানো হল মৃতের পরিবারের তরফে।
মৃতের পরিবারের তরফে আইনজীবী অমৃতা পাণ্ডে দ্বিতীয় ময়নাতদন্তের নির্দেশ দেওয়ার আবেদন জানালেও শক্রবার বা খারিজ করে দিয়েছে হাই কোর্ট। অমৃতা রেলের হাসপাতালে দ্বিতীয় ময়নাতদন্ত আবেদন জানানোর পরে প্রধান বিচারপতি তাঁর পর্যবেক্ষণে বলেছিলেন, ‘‘দ্বিতীয় বা তৃতীয় বার ময়নাতদন্তের নির্দেশ তখনই দেওয়া হয়, যখন দেখা যায় যে দেহে কোনও আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। কিন্তু এখানে ময়নাতদন্তের রিপোর্টে তেমন উল্লেখ করা হয়নি। ব্রেন হেমারেজের কারণেই মৃত্যু হয়েছে বলে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন। এখনও পর্যন্ত পুলিশ কোনও অবৈধ পদক্ষেপ করেছে বলে আমরা মনে করছি না।’’
প্রসঙ্গত, বুধবার মধ্য কলকাতার আমহার্স্ট স্ট্রিট থানায় ডেকে পাঠিয়ে অশোক সিংহ নামে এক যুবককে পিটিয়ে খুনের অভিযোগ তোলে তাঁর পরিবার। এই ঘটনার জেরে বুধবার সন্ধ্যায় অবরুদ্ধ হয়ে যায় কলেজ স্ট্রিট। পরিবারের দাবি, চুরির মোবাইল কেনার অভিযোগে যুবককে ডেকে পাঠানো হয় থানায়। জিজ্ঞাসাবাদ চলাকালীন মারধরেই তাঁর মৃত্যু হয়েছে বলে মনে করছে পরিবার। এই ঘটনায় সিবিআই তদন্তের দাবি জানান বিজেপি নেতা সজল ঘোষ। একই সঙ্গে আমহার্স্ট স্ট্রিট থানার ওসিকে অবিলম্বে অপসারণের দাবিও তোলেন তিনি।
সূত্রের খবর, পানের দোকানের মালিক অশোককে চুরি যাওয়া মোবাইল বেআইনি ভাবে কেনার অভিযোগে তলব করা হয়েছিল থানায়। সেখানে তাঁকে এ ব্যাপারে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। পুলিশ সূত্রে দাবি করা হয়, খুন তো দূরের কথা, ওই ব্যক্তিকে মারধরই করা হয়নি। তিনি নিজেই থানায় অসুস্থ হয়ে জ্ঞান হারিয়ে পড়ে যান। তাতেই মাথা ফেটে যায় তাঁর, মুখ দিয়ে গ্যাঁজলা বেরিয়ে আসে। ‘অসুস্থ’ ব্যক্তিকে মেডিক্যাল কলেজে নিয়ে যাওয়া হলে জানা যায় তাঁর মৃত্যু হয়েছে।
যদিও মধ্য কলকাতার আমহার্স্ট স্ট্রিট থানায় করা একটি ফেসবুক লাইভের দৃশ্যে দেখা গিয়েছে, ওই ব্যক্তির দেহ পড়ে রয়েছে থানার একটি ঘরের মেঝেতে। তাঁর দু’চোখ খোলা। দেহ নিথর। আত্মীয়স্বজনদের চিৎকার-চেঁচামেচির জবাবে কোনও কথা বলছেন না থানায় উপস্থিত কর্মীরা। পরে অবশ্য তাঁদের দেখা যায় কিছুটা সক্রিয় হয়ে ওই যুবকের দেহটিকে সেখান থেকে তুলে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করতে। যদিও ওই ফেসবুক লাইভের সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার অনলাইন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy