কলসেন্টার খুলে কলকাতা থেকে মার্কিণ মুলুকে নেশার ট্যাবলেট সরবরাহের বড়সড় চক্রের হদিশ পেলেন এনসিবি (নারকোটিক কন্ট্রোল ব্যুরো)-র গোয়েন্দারা।
গড়ফা থানা থেকে সামান্য দূরে পূর্বাচলে একটি ফ্ল্যাটে গত ছ’বছর ধরে রমরমিয়ে চলছিল ওই কলসেন্টার। রাত ন’টা থেকে সকাল ছ’টা পর্যন্ত কাজ চলত ওই কলসেন্টারে। এনসিবির গোয়েন্দাদের দাবি, কয়েকমাস আগে দিল্লিতে একটি ক্যুরিয়ারের প্যাকেটে প্রচুর পরিমান নেশার ট্যাবলেট উদ্ধার হয়।
এনসিবি-র দিল্লি শাখা প্রাথমিক তদন্তের পর জানতে পারে, ক্যুরিয়ারটি বুক করা হয়েছিল কলকাতা থেকে। সেই তথ্য সংস্থার কলকাতা শাখাকে জানানোর পর তদন্ত শুরু হয়। হদিশ মেলে গণেশ পান নামে এক ব্যক্তির। মহেশতলার একটি অভিজাত আবাসন থেকে গ্রেফতার করা হয় গণেশকে। তাঁর কাছ থেকে উদ্ধার হয় তিন হাজারের বেশি নেশার ট্যাবলেট।
আরও পড়ুন: মৃত্যু হল অ্যাসিড ‘খাওয়া’ বধূর
আরও পড়ুন: আমরি-মামলায় সাত বছরে শুনানি মাত্র এক জনের!
এক তদন্তকারী আধিকারিক বলেন, গণেশ হল চক্রের অন্যতম মূল মাথা। তাঁর দায়িত্ব ছিল, আমেরিকা থেকে যারা এই নেশার ট্যাবলেটের অর্ডার করত, সেগুলো সেই ঠিকানাতে পাঠানো। ক্যুরিয়ারের মাধ্যমে পাঠানো হত এই ট্যাবলেট। গণেশকে আদালতে পেশ করে পাঁচ দিনের হেফাজতে নেওয়া হয়। তাঁর কাছ থেকেই হদিশ মেলে পূর্বাচলের কলসেন্টারের। বুধবার রাতে সেই কলসেন্টারে হানা দেন গোয়েন্দারা। পাকড়াও করা হয় কলসেন্টারের মালিক ক্নিমেল্ট ফিলিপকে।
ফিলিপকে জেরা করে জানা যায়, ভারতে এমন অনেক ওষুধ আছে যা আমেরিকায় নিষিদ্ধ এবং সেখানে ওই ওষুধ নেশার কাজে ব্যবহার করা হয়। কলসেন্টারের ছ’জন কর্মীর মাধ্যমে সেই অর্ডার নেওয়া হত। ক্রেতার কার্ডের মাধ্যমে দাম চোকানো হত। এক তদন্তকারী বলেন, “মোটা মুনাফায়, দ্বিগুন বা তিনগুন দামে ওই ওষুধ বিক্রি করত ফিলিপ।”
ফিলিপের কাছ থেকেই গোয়েন্দারা হদিশ পান ওষুধের সরবরাহকারী সুনীল অগ্রবালের। উত্তর ২৪ পরগনার শ্যামনগরের বাসিন্দা সুনীলের একটি ওষুধের দোকান আছে। যদিও ২০১৭ সালে তাঁর লাইসেন্সের মেয়াদ শেষ হয়ে গিয়েছে। কিন্তু সে পুরনো লাইসেন্স দেখিয়েই ওষুধের হোলসেলারদের কাছ থেকে ওষুধ কিনে ফিলিপকে সরবরাহ করত। সুনীলের দোকানে হানা দিয়ে এরকম প্রচুর নেশার ট্যাবলেট উদ্ধার করেছেন গোয়েন্দারা। তাঁদের সন্দেহ,একই ভাবে আরও কলসেন্টার সক্রিয় কলকাতায়। বৃহস্পতিবার সুনীল এবং ফিলিপকে আদালতে তোলা হবে।
(কলকাতা শহরের রোজকার ঘটনা, কলকাতার আবহাওয়া, কলকাতার হালচাল জানতে চোখ রাখুন আমাদের কলকাতা বিভাগে।)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy