Advertisement
৩০ অক্টোবর ২০২৪

বন্ধ ঘরে মা-ছেলের দগ্ধ দেহ, রহস্য

এই ঘটনাটি ঘিরে রহস্য দেখা দিয়েছে। কেন বাড়ির বাকিরা কিছু টের পেলেন না বা মিতাদেবী ও মৈনাক কেন বাঁচার চেষ্টা করলেন না, সেটাই প্রশ্ন আত্মীয়দের। পুলিশ সূত্রে খবর, বছর বারো আগে চকপাড়ার বাসিন্দা রতন চন্দের সঙ্গে মিতাদেবীর বিয়ে হয়।

ভস্মীভূত: এই ঘরেই মায়ের সঙ্গে পুড়ে গিয়েছে ছোট্ট মৈনাক (ইনসেটে)। শুক্রবার, লিলুয়ায়। —নিজস্ব চিত্র।

ভস্মীভূত: এই ঘরেই মায়ের সঙ্গে পুড়ে গিয়েছে ছোট্ট মৈনাক (ইনসেটে)। শুক্রবার, লিলুয়ায়। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ০২ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০১:৪৮
Share: Save:

জানলা দিয়ে গলগল করে বেরোনো ধোঁয়া প্রথম চোখে পড়েছিল আত্মীয় ও পড়শিদেরই। তাঁরা গিয়ে দরজা ভেঙে ঘরে ঢুকে দেখেন, বিছানায় পড়ে রয়েছে মা-ছেলের দগ্ধ দেহ। ঘটনাটি ঘটেছে শুক্রবার সকালে, লিলুয়ার চকপাড়ায়। পুলিশ জানিয়েছে, মৃতার নাম মিতা চন্দ (৩৭) ও তাঁর ছেলের নাম মৈনাক চন্দ (৭)। মিতাদেবীর স্বামী বছর সাতেক ধরে নিখোঁজ। তাই ছোট ছেলের সঙ্গে তিনি একাই থাকতেন। মিতাদেবীর বড় ছেলে ময়ূখ থাকেন তাঁর এক পিসির কাছে।

এই ঘটনাটি ঘিরে রহস্য দেখা দিয়েছে। কেন বাড়ির বাকিরা কিছু টের পেলেন না বা মিতাদেবী ও মৈনাক কেন বাঁচার চেষ্টা করলেন না, সেটাই প্রশ্ন আত্মীয়দের। পুলিশ সূত্রে খবর, বছর বারো আগে চকপাড়ার বাসিন্দা রতন চন্দের সঙ্গে মিতাদেবীর বিয়ে হয়। কিন্তু দ্বিতীয় সন্তান হওয়ার আগেই হঠাৎ নিখোঁজ হয়ে যান রতনবাবু। রতনবাবুরা দুই বোন, এক ভাই। বোনেদের বিয়ে হয়ে গিয়েছে।

রতনবাবুদের দোতলা বাড়ির একতলায় এক ভাড়াটে থাকেন। অন্য ঘরটি গুদাম ঘর হিসেবে ভাড়া দিয়েছিলেন মিতাদেবী। ভাড়ার টাকায় সংসার চলত। মিতাদেবীদের বাড়ির আশপাশেই রতনবাবুর জ্যাঠতুতো দাদা-ভাইয়েরা থাকেন। তাঁদেরই এক জন অরুণ চন্দ জানান, তিনিই প্রথম মিতাদেবীর ঘর থেকে ধোঁয়া বেরোতে দেখে সকলকে ডাকেন। পুলিশ এসে দেহ দু’টি ময়না-তদন্তে পাঠায়।

অরুণবাবু বলেন, ‘‘আমরা কোনও শব্দ শুনিনি। কী ভাবে আগুন লাগল, ওরা কেন বাঁচার চেষ্টা করল না, বুঝতে পারছি না।’’ একই প্রশ্ন রতনবাবুর বোন মিঠু চন্দেরও। তিনি বলেন, ‘‘আগুন লাগার পরে ওরা কেন চিৎকার করল না, জানি না। পুলিশের কাছে তদন্তের দাবি জানাচ্ছি।’’

মা-ছেলের মৃত্যু নিয়ে ধন্দে তদন্তকারীরাও। পুলিশ জানিয়েছে, বিছানা ছাড়া ঘরের অন্য আসবাব তেমন পোড়েনি। তবে বিছানায় একটি হ্যারিকেন পড়ে ছিল। হ্যারিকেনটি কেন ওখানে এল এবং যে ভাবে মিতাদেবী ও মৈনাক পুড়ে গিয়েছে, তার পরেও ঘরে আগুন কেন ছড়াল না, সেটাই ভাবাচ্ছে তদন্তকারীদের। তাঁদের দাবি, এ সব প্রশ্নের উত্তর ফরেন্সিক-তদন্ত ছাড়া মিলবে না। এ দিনই ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞেরা গিয়ে নমুনা সংগ্রহ করেন। পুলিশের

দাবি, ওই রিপোর্ট পেলেই ঘটনাটি স্পষ্ট হবে।

অন্য বিষয়গুলি:

Burnt Body Rescue
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE