স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক ঘুরে রাহুলের অভিযোগপত্র চলে আসে সোজা রাজ্য স্বরাষ্ট্র দফতর এবং রাজ্য পুলিশের ডিজির কাছে।
কুয়েতে চাকরি দেওয়ার নামে প্রতারণাচক্র চলছে এই শহরে। কলকাতা পুলিশের কাছেঅভিযোগটা এসেছিল খোদ বিদেশ মন্ত্রক থেকে!
বৌবাজার থানা থেকে ঢিল ছোড়া দূরত্বে সেন্ট্রাল অ্যাভিনিউয়ের ঠিকানা দিয়ে পশ্চিম এশিয়ার বিভিন্ন দেশে চাকরি দেওয়ার জন্য বিভিন্ন ওয়েব সাইটে বিজ্ঞাপন দিয়েছিল মেসার্স সানসাইন রিক্রুটার নামে একটি সংস্থা।সেই বিজ্ঞাপন দেখে চাকরির দরখাস্ত করেছিলেন নয়ডার বাসিন্দা রাহুল শর্মা। তিনি পেশায় চিকিৎসক। তাঁকে ওই সংস্থা কুয়েতের স্বাস্থ্য দফতরে দন্ত চিকিৎসকের চাকরির প্রস্তাব দেয়। রাহুল শর্মা সেই চাকরির জন্য রাজি হয়ে যান। ২০১৭ সালের সেপ্টেন্বর মাসে কুয়েতের স্বাস্থ্য দফতর থেকে নিয়োগের চিঠিও পেয়ে যান রাহুল। চিঠি পাওয়ার পর এজেন্ট হিসেবে সানসাইন রিক্রুটার নামে সংস্থাকে তাঁদের পাওনা মিটিয়ে দেন রাহুল। কিন্তু তারপরেই বুঝতে পারেন যে, তিনি প্রতারিত হয়েছেন।
কারণ নিয়োগের চিঠি থাকলেও, কবে, কত টাকা বেতনে তিনি কাজে যোগ দেবেন,সে বিষয়ে কোনও স্পষ্ট তথ্য ছিল না তাতে। আর সেই তথ্য জানতে তিনি ওই এজেন্সির সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করলে তাঁরা কোনও তথ্য দিতে পারেনি।
রাজ্যের ডিজির হাত ঘুরে বিদেশমন্ত্রকের এই চিঠি পৌঁছয় লালবাজারে।
আরও পড়ুন: ছ’তলার পাইপ বেয়ে নেমে এল আসামি, আর জি করে হুলস্থুল
এর পরেই সোজা বিদেশ মন্ত্রকের কাছে অভিযোগ দায়ের করেন রাহুল। সেখান থেকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক ঘুরে তাঁর অভিযোগপত্র চলে আসে সোজা রাজ্য স্বরাষ্ট্র দফতর এবং রাজ্য পুলিশের ডিজির কাছে। স্বরাষ্ট্র দফতরের বিশেষ সচিব অরুণিমা দে সেই অভিযোগপত্র পাঠিয়ে দেন কলকাতার পুলিশ কমিশনারের কাছে। তদন্তের ভার পড়ে বৌবাজার থানার উপর। পুলিশ সূত্রে খবর, নয়ডার বাসিন্দা রাহুলের স্ত্রী জম্মু-কাশ্মীরের বাসিন্দা। তিনি আবার সেই রাজ্যের এক শীর্ষ আমলার ঘনিষ্ঠ আত্মীয়,যিনি বিদেশ মন্ত্রকে কর্মরত।
বৌবাজার থানার আধিকারিকরা তদন্তে নেমে দেখেন, সেন্ট্রাল অ্যাভিনিউয়ের যে ঠিকানা দেওয়া আছে তার অস্তিত্ব থাকলেও কোম্পানিটি শুধু খাতায় কলমেই আছে।কোম্পানির মালিক পার্থ দাসের হদিশ পাওয়া যায়।বিদেশ মন্ত্রক থেকে আসা অভিযোগ, তাই স্বভাবতই কোনও ঝুঁকি নিতে পারেননি তদন্তকারীরা।শিলিগুড়ির শালবাড়ি এলাকায় পার্থর শ্বশুরবাড়ি থেকে তাঁকে গ্রেফতার করে পুলিশ। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, পার্থর মূল বাড়ি হাওড়াতে। অটোমোবাইল ইঞ্জিনায়ারিং পড়ে শিলিগুড়িতেই একটি গাড়ির শো-রুমে চাকরি করতেনতিনি। পরে কলকাতায় চলে আসেন।
পার্থকে গ্রেফতার করে কলকাতায় ব্যাঙ্কশাল আদালতে তাঁকে হাজির করানো হয়। তাঁর বিরুদ্ধে প্রতারণা এবং এমিগ্রেশন অ্যাক্টের ২৩ এবং ২৪ নম্বর ধারায়, বেআইনি ভাবে বিদেশে নিয়োগের ব্যবসা চালানোর অভিযোগ আনা হয়। যদিও কয়েকদিনের মধ্যেই জামিন পেয়ে যান তিনি। কারণ, রাহুলকে পাঠানো কুয়েতের স্বাস্থ্য দফতরের নিয়োগের চিঠি যে জাল ছিল, এমন কোনও প্রমাণ দিতে পারেনি পুলিশ। তাই আদৌ প্রতারণা হয়েছে কি না, সেটাই স্পষ্ট নয়।
আরও পড়ুন: মাদকে মার্কিন জেরা ৫ চিনাকে
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy