শৈলেন অধিকারী
তপসিয়া রোডের একটি লেদ কারখানা থেকে উদ্ধার হল এক ব্যক্তির দেহ। পুলিশ জানায়, শৈলেন অধিকারী (৫৪) নামে ওই ব্যক্তিই কারখানাটির মালিক। তাঁর বাড়ি পিকনিক গার্ডেনে। তিনি শুক্রবার থেকে নিখোঁজ ছিলেন। রবিবার বেলা সাড়ে ১১টা নাগাদ বস্তা চাপা দেওয়া অবস্থায় তাঁর দেহ মেলে। পুলিশ জানায়, তাঁর মাথার পিছনে হাতু়ড়ি জাতীয় ভারী কিছু দিয়ে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। তাঁর পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে খুনের মামলা রুজু করে তদন্তে নেমেছে তিলজলা থানা। রাত পর্যন্ত কেউ গ্রেফতার হয়নি।
পুলিশ সূত্রের খবর, ওই কারখানায় সালাম নামে এক যুবক রাতে ঘুমোতেন। কারখানাটি মহম্মদ ইসমাইল ও মহম্মদ ইসরাইল নামে দুই ভাইয়ের কাছ থেকে ভা়ড়া নিয়েছিলেন শৈলেনবাবু। সালাম, ইসমাইল ও ইসরাইল-সহ কয়েক জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে পুলিশ। খুনের কারণ বুঝতে কথা বলা হয়েছে শৈলেনবাবুর স্ত্রী জয়িতাদেবী এবং ছেলে, প্রথম বর্ষের কলেজপড়ুয়া অভীকের সঙ্গেও। এই ঘটনায় আনোয়ার নামে স্থানীয় এক ব্যক্তির নামও উঠে এসেছে। তবে এ ব্যাপারে কিছু খোলসা করতে চাননি তদন্তকারীরা। তবে ওই ব্যক্তির খোঁজ চলছে।
পুলিশ সূত্রের খবর, তপসিয়া রোডে শৈলেনবাবুর আর একটি পুরনো কারখানা রয়েছে। এই কারখানাটি তিনি গত বছরের নভেম্বর মাসে ভাড়া নেন। মাসে ২২০০ টাকা ভাড়া দিতে হত। শুক্রবার এই নতুন কারখানায় আসার কথা বলেই তিনি বাড়ি থেকে বেরোন। রাতে তিনি না ফেরায় শনিবার জয়িতাদেবী কসবা থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করেন। শনিবারই জয়িতাদেবীকে নিয়ে পুলিশ ওই কারখানায় যায়। কিন্তু সে সময়ে সেখানে কিছু মেলেনি। ওই দিনই ইসমাইলরা খবর পান, আনোয়ার চাবি দিয়ে কারখানার তালা খুলে কিছু জিনিস নিয়ে পালাচ্ছেন। ইসমাইলরা তাঁকে আটকান এবং জয়িতাদেবীরা এসে চাবিটি নিয়ে নেন। রবিবার ফের তল্লাশি করার সময়ে কারখানার অন্ধকার কোণে একটি বস্তা পড়ে থাকতে দেখা যায়। বস্তা সরালেই শৈলেনবাবুর দেহ মেলে। অভীক বাবার দেহ শনাক্ত করেন। পুলিশের একাংশের অনুমান, শনিবার শৈলেনবাবুকে খুন করা হয়ে থাকতে পারে, কারণ দেহটিতে সে ভাবে পচন ধরেনি। তবে এক পুলিশকর্তার মন্তব্য, ‘‘ময়না-তদন্তের পরেই এ ব্যাপারে নিশ্চিত হওয়া সম্ভব।’’
পুলিশের একটি সূত্রের দাবি, জয়িতাদেবী তাঁদের জানিয়েছেন, কারখানার চাবি শৈলেনবাবু এবং সালামের কাছে থাকত। সালাম রাতে কারখানায় ঘুমোতেন এবং সকালে চলে যেতেন। প্রশ্ন উঠেছে, আনোয়ার চাবি পেলেন কোথায়? এ-ও প্রশ্ন উঠেছে, সালাম শনিবার রাতে কারখানায় ঘুমোলেও কেন কিছু টের পেলেন না? তা হলে কি অন্য কোথাও খুন করে রবিবার সকালেই দেহ কারখানায় ফেলে যাওয়া হয়েছিল? তদন্তকারীদের একাংশের দাবি, কিছু সূত্র মিলেছে। শীঘ্রই রহস্যের জট কাটবে।
এ দিন বিকেলে পিকনিক গার্ডেনে গিয়ে দেখা গেল, একটি বহুতল আবাসনের চারতলায় শৈলেনবাবুর ফ্ল্যাট। সেখানেই স্ত্রী, ছেলে এবং মেয়েক নিয়ে থাকতেন তিনি। এ দিন সেখানে গেলে জানলা খুলে এক কিশোরী বলে, ‘‘আমরা কথা বলার অবস্থায় নেই। মা, দাদা থানায় আছে। সেখানেই যান।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy