Advertisement
০৬ নভেম্বর ২০২৪

পুলিশের হাতে জাল পাসপোর্ট চক্রের পাণ্ডা

এ ভাবেই মঙ্গলবার বাংলাদেশ পেট্রাপোল সীমান্ত থেকে গ্রেফতার করা হল ওই ব্যক্তিকে। ধৃতের নাম ইলিয়াস গাজি।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ১৪ জুন ২০১৮ ০২:৪৬
Share: Save:

দেশে ফেরত যাবে বলে সীমান্তের অভিবাসন দফতরে পাসপোর্ট জমা দিয়েছিল বাংলাদেশি এক ব্যক্তি। সেটি পরীক্ষা করার পরে সহকর্মীদের কিছু বললেন অভিবাসন দফতরের এক কর্মী। ওই ব্যক্তিকে পাসপোর্ট ফেরত না দিয়ে পৃথক ঘরে নিয়ে গেলেন তাঁরা। সেখানে তাকে নজরবন্দি করার পরে খবর
গেল পুলিশে।

এ ভাবেই মঙ্গলবার বাংলাদেশ পেট্রাপোল সীমান্ত থেকে গ্রেফতার করা হল ওই ব্যক্তিকে। ধৃতের নাম ইলিয়াস গাজি। তার বিরুদ্ধে লুক আউট নোটিস থাকায় এ দেশ থেকে সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশ যাওয়ার পথে তাকে প্রথমে আটক করে অভিবাসন দফতর। পরে তাকে কলকাতা পুলিশের গুন্ডা দমন শাখার অফিসারেরা গ্রেফতার করে কলকাতায় নিয়ে যান। তালতলা থানায় দায়ের হওয়া জাল পাসপোর্ট তৈরি-সহ একাধিক প্রতারণার মামলায় ঢাকার বাসিন্দা ইলিয়াসের বিরুদ্ধে লুক আউট নোটিস জারি করেছিলেন তদন্তকারীরা। বুধবার ইলিয়াসকে ব্যাঙ্কশাল আদালতে তোলা হলে বিচারক তাকে চোদ্দো দিনের পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন।

তদন্তকারীরা জানান, একটি চক্র দীর্ঘদিন ধরেই বৈধ পাসপোর্টের মাধ্যমে বাংলাদেশের বাসিন্দাদের এ রাজ্যে নিয়ে এসে তাঁদের ভারতীয় পরিচয়পত্র তৈরি করাত। পরে সেই পরিচয়পত্র দেখিয়ে ভারতীয় জাল পাসপোর্ট করে ইউরোপের বিভিন্ন দেশে তাঁদের পাঠাত চক্রটি। কারণ বাংলাদেশ থেকে ইউরোপের দেশে ভিসা পেতে সমস্যা হয় বলেই এ দেশকে এ ভাবে ব্যবহার করা হত।

পুলিশের দাবি, ইলিয়াস ওই চক্রেরই অন্যতম পাণ্ডা। বাংলাদেশি নাগরিকদের জাল ভারতীয় পাসপোর্ট বানিয়ে বিদেশে চাকরি পাইয়ে দেওয়ার নামে প্রতারণা করাই ছিল তার কাজ। ওই চক্রের আট সদস্যকে গত মার্চে গ্রেফতার করা হয়েছিল। তাদের মধ্যে মানিক হোসেন এবং মহম্মদ আজিজ ওরফে মহিরুদ্দিন মোল্লার বাড়ি ঢাকায়। তারা পর্যটক ভিসা নিয়ে এ দেশে ঢুকেছিল। বাকি ছয় ভারতীয়ের মধ্যে অসীম মণ্ডল, সঞ্জয় প্রসাদ এবং মহম্মদ ওয়াসিম তালতলা থানা এলাকায় অফিস খুলে চক্রটি চালাচ্ছিল। ইলিয়াসও ওই চক্রে তাদেরই সঙ্গী।

প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশ জানিয়েছে, ইলিয়াসের দায়িত্ব ছিল বাংলাদেশ থেকে বাসিন্দাদের বৈধ পাসপোর্ট দিয়ে এ দেশে এনে কলকাতার বিভিন্ন হোটেলে রাখা। মাসখানেক এখানে থাকার পরে জাল পাসপোর্ট তৈরি করে তাদের ফেরত পাঠানো হত। চক্রের সদস্যেরা প্রথমে রাজ্যের বাইরে কাজ করা শ্রমিকদের নামের তালিকা তৈরি করত। পরে স্থানীয় যোগসাজশে ওই শ্রমিকদের নামে ভোটার কার্ড-সহ বিভিন্ন পরিচয়পত্র তৈরি করে পাসপোর্টের জন্য আবেদন করত। এক তদন্তকারী অফিসার জানান, ওই পাসপোর্ট তৈরির আগে সুকৌশলে শ্রমিকের ছবি সরিয়ে বাংলাদেশ থেকে আসা বাসিন্দাদের ছবি বসিয়ে দেওয়া হত। এর পরে এক শ্রেণির অসাধু সরকারি কর্মীর সাহায্যে ভুয়ো পাসপোর্ট তৈরি করে আবেদনকারীকে ইউরোপের বিভিন্ন দেশে চাকরির জন্য পাঠাত ধৃতেরা।

অন্য বিষয়গুলি:

Main culprit fake passport Arrest
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE