ছবি সংগৃহীত।
নামেই ‘সাইলেন্স জোন’। কিন্তু কলকাতার হাসপাতাল, নার্সিংহোম, আদালত, গ্রন্থাগার, বিধানসভা, রাজভবন লাগোয়া রাস্তা ও এলাকায় শব্দে কান ঝালাপালা হয়। শব্দবিধি অনুযায়ী, ওই সব জায়গায় শব্দ ৪৫ ডেসিবেলের বেশি থাকার কথা নয়। বাস্তবে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ, এসএসকেএম হাসপাতাল লাগোয়া জায়গায় অনেক সময়েই শব্দ ৭০ ডেসিবেল ছাড়িয়ে যায়। এ বার কলকাতার সব সাইলেন্স জোন-এর চারপাশে রোজ তিন বার শব্দমাত্রা মাপতে পশ্চিমবঙ্গ দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদকে নির্দেশ দিয়েছে জাতীয় পরিবেশ আদালত।
মঙ্গলবার পরিবেশ আদালতের বিচারপতি এসপি ওয়াংদি ও বিশেষজ্ঞ সদস্য রঞ্জন চট্টোপাধ্যায়ের পূর্বাঞ্চল ডিভিশন বেঞ্চ ওই নির্দেশ দিয়ে জানায়, সকাল, দুপুর ও রাতে শুধু শব্দ মাপলেই হবে না, কোন উৎস থেকে কতটা শব্দ বেরোচ্ছে, সেটাও চিহ্নিত করতে হবে।
কলকাতার শব্দ দূষণ নিয়ে একটি মামলা করেছিলেন পরিবেশকর্মী সুভাষ দত্ত। সেই মামলায় পরিবেশ আদালত এ দিন ওই নির্দেশ দিয়েছে।
দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ কলকাতাকে কমার্শিয়াল, রেসিডেনশিয়াল ও সাইলেন্স জোন-এ ভাগ করে নিয়মিত শব্দ মাপে। তবে জাতীয় পরিবেশ আদালত যে ভাবে মাপতে বলেছে, সেই ভাবে এতদিন শব্দ মাপা হয়নি। পরিবেশ আদালতের নির্দেশের কপি হাতে পেলে সমস্ত সাইলেন্স জোন-এ শব্দ মাপার যন্ত্র বসাবে পর্ষদ। এবং যন্ত্রে যে মাত্রার শব্দ ধরা পড়বে, সেটা শহরের পরিবেশের পক্ষে খুব ভাল বার্তা দেবে না বলে পষর্দকর্তাদের একাংশ ধরেই নিচ্ছেন।
পর্ষদের চেয়ারম্যান কল্যাণ রুদ্র বলেন, ‘‘শব্দ দূষণ নিয়ন্ত্রণ করতে গেলে তার উৎস জানা জরুরি।’’ এক সময়ে ধরা পড়েছিল, বেশি রাতে শহর জুড়ে শব্দ দূষণের মূল উৎস মাইক, সাউন্ড বক্স। তাই, রাত ১০টার পর মাইক বাজানো নিষিদ্ধ হয়। সাধারণ মানুষের অভিজ্ঞতা বলে, সাইলেন্স জোন-এর চারপাশে রোজকার শব্দ দূষণের উৎস বলতে অগুনতি গাড়ির হর্ন ও ইঞ্জিনের শব্দ, লাগোয়া এলাকা জনবহুল হলে সেখানে মানুষের কথা বলা ও চলার আওয়াজ এবং কোনও কোনও ক্ষেত্রে নির্মাণের শব্দ।
পর্ষদের অবসরপ্রাপ্ত মুখ্য আইন আধিকারিক বিশ্বজিৎ মুখোপাধ্যায়ের বক্তব্য, হাসপাতালের মধ্যে শব্দ দূষণের অন্যতম উৎস, ঘট ঘট শব্দে চলা জেনারেটর। পরিবেশ আদালত জানিয়েছে, এ বার থেকে দূষিত জেনারেটর দেখলেই বাজেয়াপ্ত করতে হবে ও যারা ব্যবহার করছে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে।
এ দিনই পরিবেশকর্মীদের সংগঠন ‘সবুজ মঞ্চ’ শব্দ দূষণের বিরুদ্ধে শহর জুড়ে একটি ট্যাবলো বার করে। সকাল ১০টায় সল্টলেকে শুরু হয়ে ৬টায় হাজরা মোড়ে ট্যাবলো-র চলা শেষ হয়। আয়োজকদের তরফে নব দত্ত জানান, শব্দ দূষণের বিরুদ্ধে যাতে কড়া আইনি ব্যবস্থা কার্যকর করা হয়, মুখ্যমন্ত্রীর কাছে সেই আবেদন করার জন্য এ দিন ছ’শোর বেশি স্বাক্ষর সংগ্রহ করা হয়েছে। আইনজীবী গীতানাথ গঙ্গোপাধ্যায়, চিকিৎসক দুলাল বসু, বিজ্ঞানী অরুণাভ মজুমদারেরা ট্যাবলো নিয়ে শহর ঘোরেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy