Advertisement
০৬ নভেম্বর ২০২৪

কম্যান্ডো বেড়ে দ্বিগুণ কলকাতায়

এতদিন কলকাতা পুলিশের কম্যান্ডোরা পরতেন কালচে সবুজ পোশাক। আর এসওজি-র সদস্যেরা কালো রঙের। এসওজি-দের কম্যান্ডো বাহিনীর সঙ্গে মিশিয়ে দেওয়ার পরে সিদ্ধান্ত হয়েছে, সাধারণ ডিউটির সময়ে সবাই কালচে সবুজ পোশাক পরবেন। কোনও অভিযান, ‘অপারেশন’ কিংবা মহড়ার সময়ে পরতে হবে কালো উর্দি।

কম্যান্ডোরা পাবেন এমনই পোশাক।

কম্যান্ডোরা পাবেন এমনই পোশাক।

সুরবেক বিশ্বাস
শেষ আপডেট: ০৩ জুলাই ২০১৭ ০১:৪৪
Share: Save:

হাতে কালাশনিকভ রাইফেল। কোমরে গোঁজা গ্লক কিংবা ব্রাউনিংয়ের মতো নাইন এমএম বোরের পিস্তল আর ছোরা। নমনীয় চেহারা। শারীরিক সক্ষমতা চূড়ান্ত। জঙ্গি হামলা, নাশকতা দমনে বিশেষ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ওঁরা কম্যান্ডো।

আগে ছিল ৮০। এখন কলকাতা পুলিশের কম্যান্ডোর সংখ্যা বেড়ে হল ঠিক তার দ্বিগুণ, প্রায় ১৬০। তা বলে নতুন ৮০ জন কম্যান্ডো বাহিনীতে নিযুক্ত হয়েছেন, ব্যাপারটা আদৌ সে রকম নয়। কম্যান্ডোর পাশাপাশি একই রকম প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত একটি আলাদা বাহিনী কলকাতা পুলিশে তৈরি হয়েছিল। স্পেশ্যাল অপারেশন গ্রুপ (এসওজি)। সম্প্রতি লালবাজারের উপর মহলের একটি বিশেষ নির্দেশে বলা হয়েছে, এসওজি বলে আর কিছু থাকবে না। তারা মিশে যাবে কম্যান্ডোদের সঙ্গে। তারা সবাই এখন কম্যান্ডো।

আরও পড়ুন: আগুন-আতঙ্কের আঁচ শিশু হাসপাতালেও

এতদিন কলকাতা পুলিশের কম্যান্ডোরা পরতেন কালচে সবুজ পোশাক। আর এসওজি-র সদস্যেরা কালো রঙের। এসওজি-দের কম্যান্ডো বাহিনীর সঙ্গে মিশিয়ে দেওয়ার পরে সিদ্ধান্ত হয়েছে, সাধারণ ডিউটির সময়ে সবাই কালচে সবুজ পোশাক পরবেন। কোনও অভিযান, ‘অপারেশন’ কিংবা মহড়ার সময়ে পরতে হবে কালো উর্দি।

কিন্তু এসওজি তৈরিই বা করা হয়েছিল কেন, উঠিয়েই বা দেওয়া হল কেন? লালবাজার সূত্রের খবর, ১৯৯৬ সালে কলকাতা পুলি‌শের কম্যান্ডো বাহিনী তৈরি হয়। তার পর থেকে কম্যান্ডোদের একাংশ ভিআইপি-প্রহরায় মোতায়েন থাকেন। তা ছাড়া, আগে মহাকরণে, এখন নবান্নের প্রহরায় রাখা হয় চার জন কম্যান্ডোকে। তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, কলকাতার মেয়র তথা রাজ্যের মন্ত্রী শোভন চট্টোপাধ্যায় ও আর এক মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস কম্যান্ডো প্রহরা পান। লাউডন স্ট্রিটে পুলিশ কমিশনারের বাড়িতে বিভিন্ন শিফ্‌ট মিলিয়ে রাখা হয় ছ’জন কম্যান্ডোকে। বামফ্রন্ট আমলে দুই মুখ্যমন্ত্রী জ্যোতি বসু ও বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের কনভয়ে কম্যান্ডোদের রাখা হতো। এখন বিভিন্ন ভিআইপি-র ডিউটি ও নবান্নের প্রহরা— সব মিলিয়ে রোজ ৪০ জন কম্যান্ডোকে ব্যবহার করা হচ্ছে।

তবে অনেক আগেই লালবাজারের কর্তাদের মনে হয়, বিভিন্ন ভিআইপি ডিউটিতে কম্যান্ডো বাহিনীর সবাইকে ঘুরিয়ে ফিরিয়ে ব্যবহার করার ফলে তাঁরা ক্লান্ত হয়ে পড়ছেন। শহরে সত্যিই জঙ্গি হামলা বা অমন পরিস্থিতি তৈরি হলে কম্যান্ডোদের একাংশকে পাঠানো সম্ভব হবে না।

সেই জন্য ২০০৮ সালে কলকাতা পুলিশের সশস্ত্র বাহিনীর প্রায় ৮০ জনকে নিয়ে তৈরি হয় এসওজি। কম্যান্ডো বাহিনীর মতো তাঁদেরও জঙ্গি ও নাশকতা মোকাবিলায় একই রকম প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। কিন্তু পৃথক অস্তিত্ব বজায় রেখে।

কিন্তু বোঝা যায়, আলাদা অস্তিত্বের ফলে কম্যান্ডো ও এসওজি-র মধ্যে বোঝাপড়া তৈরি হচ্ছে না। এর ফলে আসল সময়ে সমস্যা হতে পারে বলে আশঙ্কা হয় পুলিশের অন্দরেই। তার পরেই সকলকে কম্যান্ডো করার সিদ্ধান্ত হয়।

লালবাজারের এক কর্তা জানান, এসওজি তৈরির সরকারি বিজ্ঞপ্তি ছিল না। তাই ওঁদের উর্দি ও অন্যান্য সরঞ্জাম কিনতে অর্থ বরাদ্দের জন্য বিশেষ নির্দেশের দরকার হতো। এখন সেই সমস্যা দূর হয়েছে। ‘‘তা ছাড়া, দু’দল এক হয়ে প্রশিক্ষণ নিলে সমন্বয়ও ভাল হবে,’’ বলছেন ওই অফিসার।

অন্য বিষয়গুলি:

Commando Kolkata Police কম্যান্ডো
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE