ইলেকট্রিক করাত আছে। কিন্তু কাজ করে না। কোনওটায় শান দেওয়া নেই, কোনওটা দীর্ঘকাল পড়ে থেকে বিদ্যুৎ সংযোগের তার নষ্ট হয়ে গিয়েছে। জোড়া ঝড়ের দাপটের পরে এ সব টের পেয়েছে পুর প্রশাসন। মঙ্গলবার ঝড়ের পরে গাছ ভেঙে, উপড়ে লন্ডভন্ড শহর। ‘গাছ সরান’, ‘গাছ কাটুন’— পুরভবনের কন্ট্রোলরুমে এমন আবেদন এসেই চলেছে মঙ্গলবার রাত থেকে। সেই আয়লার পরে পুর প্রশাসন কিছু বৈদ্যুতিক এবং ডিজেল চালিত করাত কিনেছিল বটে। কিন্তু দীর্ঘদিন ব্যবহার না হওয়ায়, সেগুলি মরচে পড়ে অকেজো হওয়ার মুখে। মঙ্গলবার ঝড়ের পরে খোঁজ পড়তেই সেগুলির বেহাল দশা জানা যায়।
কিন্তু সেগুলির হাল এমন কেন, প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে তা নিয়ে।
একাধিক মেয়র পারিষদ বলেন, ঝড়ে যত গাছ পড়েছে, তাতে বৈদ্যুতিক করাত খুব জরুরি ছিল। কিন্তু সে সব কাজে না লাগায় কাটারি, হাত করাত দিয়ে অনেক জায়গায় কাজ সারতে হয়েছে। তাতে অনেক সময় লেগে যাচ্ছে বলে গাছ সরাতেও দেরি হচ্ছে। পুরসভার এক ইঞ্জিনিয়ার জানান, বৈদ্যুতিক এবং ডিজেল চালিত করাত রক্ষণাবেক্ষণে ঘাটতি থাকতে পারে। কারণ ওই সব যন্ত্র কালেভদ্রে লাগে। তবে এ বার যা ঝড় হল, তাতে ওই করাতে কোনও কাজ হত না বলে তাঁর দাবি। তাঁর বক্তব্য, ওই করাত ছোট ডালের পক্ষে উপযুক্ত। বড় গাছ কাটা কঠিন। দ্বিতীয়ত, পুরসভা ঠিকাদারের মাধ্যমে গাছ কাটার লোক লাগায়। তাদের কর্মীরা বৈদ্যুতিক করাত দিয়ে গাছ কাটতে অভ্যস্ত নন।
শাসক দলেরই এক কাউন্সিলর বলেন, ‘‘আয়লার পরে তৎকালীন বাম পুরবোর্ডের ভূমিকা নিয়ে সমালোচনা হয়েছিল। এ বার একই অভিযোগ তৃণমূল বোর্ডের বিরুদ্ধে। প্রশ্নের মুখে পার্ক ও উদ্যান দফতরের ভূমিকাও।’’ যদিও মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায় বুধবার বলেছেন, ‘‘এ ধরনের এলোপাথাড়ি ঝড়ে কিছু ঠিক থাকে না।’’ তবু পুরসভার এক পদস্থ অফিসার জানান, পার্ক ও উদ্যান দফতরের বাজেট খুব কম। ঝড়-ঝঞ্ঝার সময়ে গাছ ভাঙার সমস্যা তো আছেই, তার সঙ্গে নিত্যনৈমিত্তিক গাছ কাটার জন্যও অভিজ্ঞ লোক নেই পুরসভায়।
তবে কী করণীয়? ওই অফিসার বলেন, ‘‘পুরুলিয়া, সুন্দরবন এলাকায় গাছ কাটার অভিজ্ঞ শ্রমিকেরা রয়েছেন। তাঁদের বছরভর নিয়োগ করতে পারে পুর প্রশাসন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy