হয়রানি: অটো বন্ধ থাকায় বাসে উঠতে ঠেলাঠেলি। সোমবার, উল্টোডাঙায়। নিজস্ব চিত্র
নিয়ম ভেঙে অটো চালানোয় পুলিশি ধরপাকড় শুরু হয়েছে কিছু দিন ধরেই। এর প্রতিবাদ জানাতে সোমবার দিনভর উত্তর কলকাতায় চারটি রুটের অটো চলাচল বন্ধ রাখলেন চালকেরা। সপ্তাহের প্রথম কাজের দিনে যার জেরে ব্যাপক হয়রানির মুখে পড়তে হল সাধারণ মানুষকে।
পুলিশ জানিয়েছে, এ দিন উল্টোডাঙা থেকে জোড়াবাগান, শোভাবাজার, আহিরীটোলা মো়ড় এবং আহিরীটোলা ঘাটের অটো বন্ধ ছিল। পুলিশ সূত্রের খবর, উল্টোডাঙা থেকে উত্তর কলকাতার বিভিন্ন এলাকায় যেতে এই চারটি রুটের উপরেই ভরসা করে থাকেন নিত্য যাত্রীরা। এ দিন সকালে উল্টোডাঙায় অটো ধরার জন্য দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষাও করেন অনেকে। অফিসের ব্যস্ত সময়ে ভোগান্তির চেহারাটা আরও বাড়তে থাকে। বাধ্য হয়ে ভি়ড়ে ঠাসা বাসে বাদুড়ঝোলা হয়ে যেতে দেখা যায় যাত্রীদের। অনেকে অতিরিক্ত টাকা দিয়ে ট্যাক্সি ভাড়া করে গন্তব্যস্থলে পৌঁছন। একই অবস্থা হয় বিকেল ও সন্ধ্যায় অফিস থেকে ফেরার সময়ে।
পুলিশ সূত্রের খবর, ওই চারটি রুটে প্রায় ১৩০০ অটো চলাচল করে। ওই চারটি রুট মিলিয়ে প্রতি দিনের যাত্রী-সংখ্যা প্রায় চল্লিশ হাজার। শোভাবাজার-উল্টোডাঙা রুটের অটোচালক সঞ্জয় মুখোপাধ্যায়ের অভিযোগ, ‘‘দীর্ঘদিন ধরে পুলিশ আমাদের অকারণে কেস দিচ্ছে। পুলিশি অত্যাচার বন্ধ করতেই আমরা একযোগে চারটি রুটে অটো চালানো বন্ধ রেখেছি।’’ ওই রুটেরই আর এক চালক শম্ভু সাউয়ের অভিযোগ, ‘‘গত ৭ এপ্রিল পুলিশ আমাকে কেস দেওয়ায় তিনশো টাকা জরিমানা দিয়েছি। কিন্তু তাতেও শেষ হয়নি। এক বার জরিমানা দেওয়ার পরে আবার একই কেসের জন্য টাকা চাওয়া হচ্ছে। আমাদের উপরে এই পুলিশি অত্যাচার বন্ধ হোক।’’
যদিও অটোচালকদের এই অভিযোগ অস্বীকার করে পুলিশ জানিয়েছে, ওই চারটি রুটের অটোচালকেরা দীর্ঘদিন ধরেই কোনও নিয়মকানুন মেনে চলেন না। সন্ধ্যা হলেই ভাড়া বাড়িয়ে দেওয়া হয়। জোড়াবাগান ট্র্যাফিক গার্ডের এক সার্জেন্টের অভিযোগ, ‘‘অনেক সময়ে কোনও যাত্রী জো়ড়াবাগান থেকে উল্টোডাঙা যাবেন বললে তাঁকে তোলা হয় না। বেশি টাকা উপার্জনের জন্য চালকেরা ইচ্ছেমতো যাত্রীদের তোলেন।’’ আর এক ট্র্যাফিক সার্জেন্টের অভিযোগ, ‘‘নিজস্ব রুটের বদলে বেশির ভাগ ক্ষেত্রে শোভাবাজার থেকে বাগুইআটিতে অটো ভাড়া করে যাত্রীদের নিয়ে যাওয়া হয়। এমন তো চলতে পারে না।’’ পুলিশি ধরপাকড়ের প্রতিবাদ-সহ স্থায়ী অটোস্ট্যান্ড নির্মাণের দাবিতে এ দিন বিকেলে উল্টোডাঙা ট্র্যাফিক গার্ডের আধিকারিকদের সঙ্গে দেখা করেন ওই চারটি রুটের অটোচালকেরা।
লালবাজারের এক কর্তা বলেন, ‘‘অটোচালকদের দাবিগুলির কোনও ভিত্তি নেই। আমরা সাফ জানিয়েছি, তাদের দাবি কোনও ভাবেই মানা হবে না।’’ এ দিন বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন জোড়াবাগান অটো ইউনিয়নের সম্পাদক নীতিন সাউ। তিনি বলেন, ‘‘উল্টোডাঙা-জোড়াবাগান রুটে ৩৫০টি অটো চলে। মঙ্গলবার থেকে আমাদের সংগঠনের আওতায় থাকা ৫৫টি অটো চলবে। আশা করছি, বাকি অটোও চলাচল করবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy