ধৃত: সুশান্ত চক্রবর্তী (চিহ্নিত)।
মাইকে এলাকায় জানানো হচ্ছিল, শরীরের কোথায় কোন রোগ বাসা বেঁধেছে, কয়েক মিনিটের মধ্যে তা পরীক্ষা করে ওষুধ দেওয়া হবে। খরচ মাত্র ৪০০ টাকা। রবিবারের সকালে পাড়ার ক্লাবে আয়োজিত এমন স্বাস্থ্য শিবিরে আস্তে আস্তে ভিড় করছিলেন রোগীরা।
এ-ও বলা হচ্ছিল, শিবিরে রোগীদের নাম নথিভুক্তির জন্য লাগবে ১০০ টাকা, ডাক্তারবাবুর ফি ৩০০ টাকা। ওষুধের জন্য নেওয়া হবে ৫০০-৭০০ টাকা। কোনও পরীক্ষার প্রয়োজন হলে তার খরচ আলাদা। ৩০ জন মতো রোগী দেখাও হয়ে গিয়েছিল ডাক্তারবাবুর। বেলা বাড়তে আচমকাই শিবিরে হাজির হলেন পুরসভার চেয়ারম্যান পারিষদ (স্বাস্থ্য) ও চিকিৎসকেরা। তখনই জানা গেল, ওই চিকিৎসক আসলে ভুয়ো!
ঘটনাটি ঘটেছে কামারহাটি পুরসভার নওদা পাড়া এলাকায়। ওই চিকিৎসক ও তাঁর চার সহযোগীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। কামারহাটি পুরসভার চেয়ারম্যান পারিষদ (স্বাস্থ্য) বিমল সাহা বলেন, ‘‘সুশান্ত চক্রবর্তী নামে ওই চিকিৎসক কোনও কিছুরই সদুত্তর দিতে পারছিলেন না।’’ তাঁর প্রেসক্রিপশনে লেখা ‘ডিপ্লোমা ইন ন্যাচারোপ্যাথি (ডিএন)’। এমনকী রেজিস্ট্রেশন নম্বর দেখেও সন্দেহ হয় পুর চিকিৎসকদের। কারণ, সেটি ছিল চার অঙ্কের। কোন কলেজ থেকে তিনি পাশ করেছেন, একাধিকক বার জিজ্ঞাসা করা হলেও তা বলতে পারেননি সুশান্ত।
ওয়েস্ট বেঙ্গল কাউন্সিল অব যোগা ও ন্যাচেরোপ্যাথি-র সভাপতি তুষার শীল বলেন, ‘‘কাউন্সিলের অধীনে কোনও ডিপ্লোমা হয় না। আর চার অঙ্কের রেজিস্ট্রেশন নম্বরও হয় না।’’ অন্য দিকে কামারহাটির ওই ক্লাবের সম্পাদক সমীর দাসের দাবি, এক যুবক তাঁদের ওই শিবির করার প্রস্তাব দেন। এমনকী ৫০ জনের কম রোগী হলে ক্লাব ১০০০ টাকা আর তার বেশি রোগী হলে মাথাপিছু ৫০ টাকা করে পাবেন বলেও জানান তিনি। এর পরেই এ দিন শিবির হয়।
রাজ্য মেডিক্যাল কাউন্সিলের সভাপতি নির্মল মাজি বলেন, ‘‘যোগা অ্যান্ড ন্যাচারোপ্যাথিতে পাঁচ অঙ্কের রেজিস্ট্রেশন নম্বর হয়। তাই বোঝা যাচ্ছে, ওই ব্যক্তি ভুয়ো। বিভিন্ন ক্ষেত্রেই ভুয়ো চিকিৎসক চক্র ধরা পড়েছে। এ ক্ষেত্রেও সব খতিয়ে দেখে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy