এ ভাবেই মারা হয়েছে ওই বালককে। নিজস্ব চিত্র
শহরের একাধিক হোমের বিরুদ্ধে আবাসিকদের মারধর করা বা খারাপ মানের খাবার দেওয়ার অভিযোগ নতুন নয়। এ বার তাতে নাম জড়াল শরৎ বসু রোডের একটি হোমের। অভিযুক্ত সেখানকারই কেয়ারটেকার। আর এই অভিযোগ ঘিরে ফের সামনে এসেছে হোমগুলিতে নজরদারির অভাবের ছবি।
পুলিশ জানায়, টালিগঞ্জ থানা এলাকার ৯৩ ও ৯৭ শরৎ বসু রোডের ওই হোমটি চলে রাজ্য সরকারের জনশিক্ষা দফতরের অনুদানে। অভিযোগ, সেখানকার আবাসিক বছর এগারোর এক বালক দুষ্টুমি করায় তাকে বেত দিয়ে মেরেছেন কেয়ারটেকার আশিস সরকার। অভিযোগ পেয়ে পুলিশ নির্দিষ্ট ধারায় মামলা রুজু করেছে। গ্রেফতার হয়েছেন আশিস। তদন্তকারীদের দাবি, জেরায় তিনি দোষ স্বীকার করেছেন।
পুলিশ জানিয়েছে, ভবানীপুরের সাউথ সাবার্বান স্কুলের পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র ওই ছেলেটির বাবা নেই। মা-ও চলে গিয়েছেন। দেখভাল করার কেউ না থাকায় তাকে হোমে রেখে গিয়েছেন কাকা। তবে ছুটির সময়ে ওই বালক এন্টালিতে কাকার বাড়ি গিয়ে থাকে। গত বৃহস্পতিবার সে স্কুলে গেলে এক শিক্ষক তার পায়ে কালশিটে দেখতে পান। জিজ্ঞাসা করে তিনি জানতে পারেন, হোমের আবাসিক আর একটি বাচ্চার সঙ্গে মারামারি করার জন্য কেয়ারটেকার আশিস তাকে বেত দিয়ে মেরেছেন। ওই শিক্ষকই কলকাতা চাইল্ড লাইনে খবর দেন।
শনিবার স্কুলে গিয়ে অভিযোগ খতিয়ে দেখেন চাইল্ড লাইনের আধিকারিকেরা। তাঁদের দাবি, অভিযোগের সত্যতা মিলেছে। এর পরেই কেয়ারটেকারের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের হয়। ওই দিনই আশিসকে গ্রেফতার করে টালিগঞ্জ থানা। পুলিশের দাবি, জেরায় আশিস জানিয়েছেন, মাথা গরম হয়ে যাওয়ায় তিনি ওই ছেলেটিকে মারধর করেছেন। রবিবার আদালতে অভিযুক্তকে শর্ত সাপেক্ষে জামিন দেন বিচারক। কলকাতা চাইল্ড লাইনের কো-অর্ডিনেটর দিলীপ বসু বলেন, ‘‘হোম কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধেও আমরা থানায় অভিযোগ দায়ের করেছি।’’
তবে শরৎ বসু রোডের এই হোমটিই শুধু নয়। এর আগেও একাধিক হোমের বিরুদ্ধে সেখানকার আবাসিকদের মারধর করার অভিযোগ উঠেছে। বেশ কিছু ক্ষেত্রে অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে পালিয়েও গিয়েছেন একাধিক আবাসিক। তার পরেই রাজ্যের নারী, শিশু ও সমাজকল্যাণ দফতর হোমগুলিতে নজরদারি শুরু করে।
সংশ্লিষ্ট হোমটি চলে জনশিক্ষা দফতরের টাকায়। তাদের নজরদারি হোমে আদৌ ছিল কি না, এই ঘটনায় তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। জনশিক্ষা দফতরের মন্ত্রী সিদ্দিকুল্লা চৌধুরীর সঙ্গে ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ধরেননি। এসএমএসেরও উত্তর আসেনি। পুলিশ জানিয়েছে, হোম কর্তৃপক্ষের খোঁজ শুরু হয়েছে। আপাতত ওই বালককে তার কাকার কাছে পাঠানো হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy