ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে সঙ্গে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য-বিরোধিতায় অনড় রয়েছে শিক্ষক সংগঠন জুটা। উপাচার্য অভিজিৎ চক্রবর্তীর বিরুদ্ধে অন্যের গবেষণাপত্র থেকে নকল করা, নিয়ম না-মেনে সরকারি টাকা খরচ ইত্যাদি অভিযোগ সংবলিত শ্বেতপত্র আচার্য-রাজ্যপাল কেশরীনাথ ত্রিপাঠীর কাছে পাঠিয়ে দিয়েছে ওই শিক্ষক সংগঠন। অভিজিৎবাবুর পদত্যাগের দাবিতে বুধবার অবস্থানেও বসে তারা।
উপাচার্যের বিরুদ্ধে অভিযোগের খতিয়ান আচার্যের কাছে পাঠিয়েই ক্ষান্ত হয়নি জুটা। সাধারণ সম্পাদিকা নীলাঞ্জনা গুপ্ত জানান, স্থায়ী উপাচার্য হিসেবে অভিজিৎবাবুকে নিয়োগের সিদ্ধান্ত আচার্য যাতে পুনর্বিবেচনা করেন, সেই আর্জি জানিয়ে সংগঠনের তরফে একটি চিঠিও পাঠানো হয়েছে। ঘেরাওকারী পড়ুয়াদের হটাতে উপাচার্যের ডাকে পুলিশ বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়ে হামলা চালানোর পর থেকে অভিজিৎবাবুর বিরুদ্ধে সরব হয়েছে ওই শিক্ষক সংগঠন। তখন অভিজিৎবাবু ছিলেন সেখানকার অস্থায়ী উপাচার্য। রাজ্য সরকার অবশ্য বরাবরই তাঁর পাশে আছে। স্থায়ী উপাচার্য বাছাইয়ের জন্য তিনটি নামের যে-তালিকা আচার্যের কাছে পাঠানো হয়েছিল, তার প্রথমেই ছিল অভিজিৎবাবুর নাম। পড়ুয়াদের উপরে পুলিশি অত্যাচারের পরে শিক্ষাজগতের প্রতিনিধিরা রাজ্যপালের কাছে দরবার করে আর্জি জানান, তালিকায় যা-ই থাক, স্থায়ী উপাচার্য নিয়োগের ব্যাপারে আচার্য যেন নিজের বিবেচনাকেই প্রাধান্য দেন। ত্রিপাঠী শেষ পর্যন্ত অভিজিৎবাবুর নামই অনুমোদন করেন। সেই সিদ্ধান্ত ফের বিবেচনার আর্জি জানাল জুটা।
ওই শিক্ষক সংগঠন ২১ অক্টোবরই শ্বেতপত্র প্রকাশ করেছিল। তাতে তথ্যপ্রমাণ-সহ অভিজিৎবাবুর বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ তুলে ধরা হয়। অন্যতম অভিযোগ ছিল, অভিজিৎবাবু অন্যের গবেষণাপত্র থেকে নকল করেছেন। জুটা-র নেত্রী নীলাঞ্জনাদেবী বলেন, “ওই শ্বেতপত্রই আচার্যের কাছে পাঠানো হয়েছে। তা দেওয়া হয়েছে শিক্ষামন্ত্রী, ইউজিসি-প্রধানকেও।” অভিজিৎবাবু অবশ্য গবেষণাপত্র নকল করার অভিযোগ শ্বেতপত্র প্রকাশিত হওয়ার দিনই উড়িয়ে দিয়েছিলেন। আর আচার্যকে শ্বেতপত্র জমা দেওয়ার বিষয়টি তাঁর জানা নেই বলে এ দিন দাবি করেছেন তিনি।
উপাচার্য-পদ থেকে অভিজিৎবাবুর ইস্তফা, গত ২৮ অগস্ট হস্টেলে এক ছাত্রীর শ্লীলতাহানি এবং ক্যাম্পাসে পুলিশি আক্রমণের বিচার বিভাগীয় তদন্ত, সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়-কর্তৃপক্ষের জারি করা কিছু নির্দেশিকা প্রত্যাহার ইত্যাদি দাবিতে এ দিন অরবিন্দ ভবনের ভিতরে অবস্থানে বসেন জুটা-র সদস্যেরা। বেলা দেড়টা থেকে তা চলে বিকেল ৫টা পর্যন্ত। অবস্থানের সামনে দিয়েই আড়াইটে নাগাদ ওই ভবনের দোতলায় নিজের ঘরে চলে যান অভিজিৎবাবু।
বিশ্ববিদ্যালয়-কর্তৃপক্ষের বিভিন্ন নির্দেশিকা প্রত্যাহারের দাবিতে জুটা-র সদস্যেরা আগেও কয়েক বার রেজিস্ট্রার প্রদীপ ঘোষের কাছে স্মারকলিপি দিয়েছেন। একই দাবিতে এ দিন ফের রেজিস্ট্রারের সঙ্গে দেখা করেন তাঁরা। প্রদীপবাবু জানান, বিষয়টি তিনি উপাচার্যকে জানিয়ে দিয়েছেন। উপাচার্য অবশ্য বুধবার পর্যন্ত এই বিষয়ে তাঁর মত জানাননি। এই অবস্থায় পরবর্তী কর্মসূচি ঠিক করার জন্য সোমবার সংগঠনের সাধারণ সভার বৈঠক ডেকেছে জুটা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy