Advertisement
৩০ অক্টোবর ২০২৪
চিন্তামণি কর পাখিরালয়

কংক্রিটের ভিড়ে এক টুকরো সবুজের খোঁজ

শহরের কোলাহল থেকে মুক্ত, শান্ত, ঘন সবুজের মধ্যে নির্ভাবনায় রঙিন আনাগোনা অজস্র পাখি আর প্রজাপতির। নিশ্চয়ই ভাবছেন বলছি সুন্দরবন বা বক্সা টাইগার রিজার্ভের মতো কোনও জায়গার কথা।

সুনীতা কোলে
শেষ আপডেট: ২১ জুন ২০১৬ ০৭:১০
Share: Save:

শহরের কোলাহল থেকে মুক্ত, শান্ত, ঘন সবুজের মধ্যে নির্ভাবনায় রঙিন আনাগোনা অজস্র পাখি আর প্রজাপতির। নিশ্চয়ই ভাবছেন বলছি সুন্দরবন বা বক্সা টাইগার রিজার্ভের মতো কোনও জায়গার কথা। কিন্তু না, বলছি চিন্তামণি কর পাখিরালয়ের কথা। নরেন্দ্রপুর রথতলার কাছে এই পাখিরালয়টি স্থানীয় মানুষের কাছে কয়ালের বাগান বলেও পরিচিত। ১৭ একর জায়গা জুড়ে থাকা বাগানটি ২০০৫ সালের অক্টোবর মাসে অভয়ারণ্য বলে ঘোষিত হয়। নামকরণ হয় ভাস্কর চিন্তামণি করের নামে। পক্ষীপ্রেমীদের কাছে এই অভয়ারণ্য পরিচিত হলেও সাধারণের মধ্যে তেমন জনপ্রিয়তা নেই জায়গাটির।

অভয়ারণ্যের মধ্যে রয়েছে বেশ কয়েকটি পায়ে চলা পথ। যে কোনও একটি ধরে এগোতে থাকলেই সভ্যতার আওয়াজ ফিকে হয়ে কানে আসবে পাখির ডাক, শুকনো পাতার আওয়াজ। কোথাও বড় বড় পুরনো গাছের ডাল থেকে ঝুলছে নাম না জানা লতা, অর্কিড। কোথাও বাঁশঝাড়ে বসে লেজ নাচাচ্ছে ফিঙে। কোথাও বা আবার লানটানার ঝোপে নানা রঙের ফুলের থোকার উপর ভিড় জমিয়েছে প্রজাপতি, ফড়িংয়ের দল। এখানে দোয়েল, হরিয়াল, নীলকণ্ঠ, টুনটুনি, বাঁশপাতি, দুধরাজ, কাঠঠোকরা, দামা, নানা রকম প্যাঁচা, মৌটুসি, বেনে বউ, মাছরাঙা, বসন্তবৌরির মতো পাখির পাশাপাশি দেখা মিলতে পারে গোসাপ, বনবেড়াল ও সিভেট জাতীয় বিড়ালের। রয়েছে ছোট ছোট কয়েকটি জলাশয়ও। সেগুলির আশপাশে দেখা হয়ে যেতে পারে নানা প্রজাতির বকের সঙ্গে।

এখানে যাওয়ার জন্য আগে থেকে অনুমতি নেওয়ার প্রয়োজন নেই। গেট থেকেই মিলবে টিকিট। প্রবেশ মূল্য ৫০ টাকা। প্রতিদিন সকাল ৭টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত খোলা থাকে পাখিরালয়টি। পাখি দেখার শ্রেষ্ঠ সময় শীত ও বসন্তকাল হলেও যাওয়া যায় যে কোনও সময়েই। জঙ্গলে ঘোরার জন্য উপযুক্ত পোশাক এবং জুতো অবশ্যই পরা উচিত। অভয়ারণ্যের ভিতরে নোংরা করা, জোরে কথা বলা, পাখিদের বিরক্ত করা বা গান চালানোর মতো কাজ করবেন না। অভয়ারণ্যের মধ্যে পায়ে চলা পথগুলি ধরে ঘোরাই ভালো।

আকারে-আয়তনে বাড়তে বাড়তে প্রায় সব সবুজই গিলে নিয়েছে শহর কলকাতা। তবু স্থানীয় মানুষ এবং কিছু বেসরকারি সংস্থার চেষ্টায় টিকে গিয়েছে কয়ালের বাগান। কংক্রিট জঙ্গলে থাকার ক্লান্তি দূর করে কয়েক ঘণ্টার জন্য হলেও চোখে সবুজ মাখতে চাইলে ঘুরে আসতেই পারেন চিন্তামণি কর অভয়ারণ্য থেকে। সঙ্গে নিন বাড়ির কচিকাঁচাদেরও। শহরের মধ্যেই হয়ে যাক প্রকৃতি প্রেমের প্রথম পাঠ।

আর ক্যামেরায় ধরা থাক পাখি দেখার খতিয়ান।

অন্য বিষয়গুলি:

piece of green concrete crowd
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE