—প্রতীকী চিত্র।
ভূগর্ভস্থ জলের ব্যবহার বন্ধ করতে প্রশাসন যত সচেষ্টই হোক, নাগরিকদের একাংশের হুঁশ ফিরছে না কিছুতেই। সাবমার্সিবল পাম্প বসিয়ে মাটির তলা থেকে জল তুলে অবাধেই তা বিক্রি করছেন অনেকে। অভিযোগ, সেই জল সরকারি গাড়িতে চাপিয়েই সরবরাহ করা হচ্ছে নিউ টাউন থেকে সল্টলেকের বিভিন্ন বাড়িতে ও খাবারের দোকানে। যদিও সরকারের সঙ্গে তার কোনও সম্পর্ক নেই।
সাধারণ মানুষ কিন্তু পরিস্রুত পানীয় জল ভেবেই তা ব্যবহার করছেন। সেই জল আসলে কতটা পানের যোগ্য, তা কোথাও পরীক্ষা করা হচ্ছে না। এত দিন কার্যত এ বিষয়টি সম্পর্কে অন্ধকারেই ছিল বিধাননগর পুরসভা। অবশেষে একাধিক অভিযোগ পেয়ে নড়েচড়ে বসেছে তারা।
সম্প্রতি সেই অভিযোগের প্রমাণও মিলেছে। যার ভিত্তিতে বিধাননগর পুরসভা একটি পাম্প বন্ধ করে দিয়েছে। কিন্তু যাঁরা এমন কাজ করছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ কি করা হবে? এই ভাবে জল তুলে সরবরাহ করা কি বন্ধ হবে?
এ নিয়ে এখন উভয়-সঙ্কটে বিধাননগর পুরসভা। পুরকর্তারা বলছেন, বিষয়টি নিয়ে আলোচনার পরে আইনি পদক্ষেপ নিয়ে সিদ্ধান্ত হবে। তবে এই ভাবে জল বিক্রি করে বহু মানুষ জীবিকা অর্জন করেন। তাই সে দিকটিও বিবেচনায় রাখা হচ্ছে। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, এমন ঘটনায় কলকাতা পুরসভা কিন্তু ইতিমধ্যেই আইনি পদক্ষেপ করেছে।
সল্টলেকে পানীয় জলের সমস্যা নতুন কিছু নয়। বর্তমানে সেখানে মাটির উপরের জলের ব্যবহার বেড়েছে। নিউ টাউনে ইতিমধ্যেই জলপ্রকল্পের কাজ সম্পূর্ণ। এখন পাইপলাইন পাতার কাজ চলছে। তা শেষ হলেই পরিস্রুত পানীয় জলের সমস্যা থাকবে না বলে দাবি পুর প্রশাসনের।
কিন্তু সল্টলেক ও নিউ টাউনে জল বিক্রি এখন খুবই স্বাভাবিক ঘটনা। সম্প্রতি নতুন করে এ বিষয়ে অভিযোগ আসতে শুরু করে। যেমন, মহিষবাথান অঞ্চলে কয়েক জন মাটির তলা থেকে জল তুলে সরাসরি বিক্রি করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। বাসিন্দাদের আশঙ্কা, মাটির তলার জলে আর্সেনিক বাড়ছে বলে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হচ্ছে। সেই নিরিখে এই জল নিয়ে আশঙ্কা থেকেই যাচ্ছে।
মহিষবাথানের স্থানীয় কাউন্সিলর তথা চার নম্বর বরোর চেয়ারম্যান বাণীব্রত বন্দ্যোপাধ্যায় সমস্যার কথা স্বীকার করে জানান, এমন ঘটনা বিভিন্ন জায়গায় ঘটছে। পুরসভাকে নথি-সহ বিষয়টি জানানো হয়েছে।
এমনকী, একটি সরকারি সংস্থার গাড়িতেও সেই জল সরবরাহের অভিযোগ উঠেছে। যদিও সেই সংস্থা জানিয়েছে, তাদের গাছগাছালিতে জল দেওয়ার একটি গাড়ি রয়েছে। কিন্তু পানীয় জল সরবরাহের কোনও গাড়ি তাদের নেই। অভিযোগ খতিয়ে দেখে কড়া পদক্ষেপ করা হবে বলে জানিয়েছে পুরসভা।
বাসিন্দাদের বক্তব্য, এ ভাবে জল তুলে বিক্রি করা তো শাস্তিযোগ্য অপরাধ। ওই জল খেয়ে কেউ অসুস্থ হয়ে পড়লে প্রশাসন কি তার দায় নেবে? যদিও পুরসভার মেয়র পারিষদ (জল সরবরাহ) বীরেন্দ্রনাথ বিশ্বাসের কথায়, ‘‘অনেকেই জল বিক্রি করে রোজগার করেন। পুরসভার তরফে কী করা যায়, তা নিয়ে আলোচনা হবে। তার ভিত্তিতেই পদক্ষেপ করা হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy