Advertisement
০২ নভেম্বর ২০২৪

বিমার ফাঁদে পুলিশের প্রাক্তন কর্তাই

পুলিশ সূত্রের খবর, বাঁশদ্রোণী এলাকার বাসিন্দা প্রাক্তন পুলিশকর্তা চন্দ্রকান্ত দাসমহাপাত্রকে ফোন করে এক ব্যক্তি বেসরকারি বিমা সংস্থার প্রতিনিধি বলে পরিচয় দেয় এবং প্রিমিয়াম জমা দেওয়ার জন্য অ্যাকাউন্ট নম্বর পাঠায়।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ০৭ জুলাই ২০১৮ ০২:০৪
Share: Save:

বেসরকারি বিমা সংস্থার চাকরি ছেড়েছিল আগেই। কিন্তু সেই সংস্থার তথ্য ব্যবহার করেই প্রতারণার ফাঁদ বিছিয়েছিল এক যুবক। দোসর হিসেবে পেয়েছিল আর এক বন্ধুকেও। শেষরক্ষা হয়নি। রাজ্য পুলিশের এক অবসরপ্রাপ্ত ডিএসপি-কে ঠকানোর অভিযোগে প্রতারণা চক্রের চাঁই মণীশ চিত্রাংশকে পাকড়াও করেছে বাঁশদ্রোণী থানা। তার শাগরেদ সত্যবীর সিংহ রাজপুত বিহারে জেলবন্দি। পুলিশ সূত্রের খবর, সম্প্রতি বিহারে শ্বশুরবাড়িতে মদ-সহ ধরা পড়েই হাজতবাস করছে সে।

পুলিশ সূত্রের খবর, বাঁশদ্রোণী এলাকার বাসিন্দা প্রাক্তন পুলিশকর্তা চন্দ্রকান্ত দাসমহাপাত্রকে ফোন করে এক ব্যক্তি বেসরকারি বিমা সংস্থার প্রতিনিধি বলে পরিচয় দেয় এবং প্রিমিয়াম জমা দেওয়ার জন্য অ্যাকাউন্ট নম্বর পাঠায়। সেই অ্যাকাউন্টে টাকা জমাও দেন চন্দ্রকান্তবাবু। পরে তিনি জানতে পারেন, ওই অ্যাকাউন্টটি আদৌ বিমা সংস্থার নয়। পুলিশ জানিয়েছে, মণীশ চাকরি ছাড়ার সময়ে গ্রাহকদের ফোন নম্বর-সহ যাবতীয় তথ্য হাতিয়ে নিয়েছিল। সেই নম্বরে ফোন করে প্রিমিয়াম জমা দিতে বলত এবং সংস্থার ব্রোশিওরে কারসাজি করে আসল অ্যাকাউন্ট নম্বরের বদলে নিজেদের অ্যাকাউন্ট নম্বর দিয়ে দিত।

তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে, গাজিয়াবাদ এবং পশ্চিম দিল্লি থেকে ফোন এসেছিল। যে অ্যাকাউন্টে টাকা জমা পড়েছিল, তারও তথ্য নেন তদন্তকারীরা। কিন্তু, সেই তথ্যের ভিত্তিতে কোনও সুরাহা হয়নি। সূত্র বলতে পুলিশের কাছে ছিল দিল্লির চাঁদনি চক এলাকার একটি বাণিজ্যিক বহুতলের ঠিকানা। ব্যাঙ্কে থাকা অ্যাকাউন্ট মালিকের ছবি দেখিয়েও কাজ হয়নি।

সম্প্রতি পুলিশ জানতে পারে, ওই অ্যাকাউন্ট থেকে দিল্লির বসন্ত বিহারের একটি এটিএমে টাকা তোলা হয়েছে। সেই এটিএম কাউন্টারের সিসিটিভি ফুটেজ থেকে মণীশের ছবি সংগ্রহ করা হয়। ওই ছবি দেখে চাঁদনি চক এলাকার বহুতলে থাকা একটি সংস্থার মালিক তাকে চিনতে পারেন। ওই ব্যক্তির গাজিয়াবাদের কারখানায় মণীশ আগে কাজ করত। কারখানার দুই শ্রমিকের কাছ থেকে মণীশের ঠিকানাও মেলে এবং সেই সূত্র ধরে তার খোঁজ পান তদন্তকারীরা। এর পরেই গাজিয়াবাদের বাড়ি থেকে অভিযুক্তকে পাকড়াও করা হয়।

তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, ভুয়ো নথি ও ছবি ব্যবহার করে অ্যাকাউন্ট খোলা হয়েছিল। ব্যাঙ্ক জালিয়াতি দমনে অভিজ্ঞ অফিসারেরা জানান, ভুয়ো অ্যাকাউন্ট খোলার জন্য আসল নথির উপরে কারসাজি করে জাল নথি তৈরি করে ব্যাঙ্কে জমা দেওয়া হয়। অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যায়, ব্যাঙ্কের কর্মীদের একাংশও সে কাজে ইন্ধন দেন। এ পর্যন্ত অন্তত ২৬ জনকে ঠকিয়েছে মণীশ ও তার সঙ্গী। সব মিলিয়ে এই প্রতারণার আর্থিক পরিমাণ প্রায় এক কোটি টাকা বলে পুলিশ সূত্রের দাবি।

অন্য বিষয়গুলি:

Police Officer Cheat
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE