Advertisement
০৩ নভেম্বর ২০২৪
কঙ্কাল-কাণ্ড

পার্থকে দেখবেন ফরেন্সিক মনোবিদ

পাভলভ হাসপাতালে পার্থ দে-কে নানা ভাবে পরীক্ষা এবং জিজ্ঞাসাবাদ করেও রবিনসন স্ট্রিটের কঙ্কাল-রহস্যের চাবিকাঠির হদিস মেলেনি। তাই এ বার ফরেন্সিক-সাইকোলজিস্ট অর্থাৎ ফরেন্সিক-মনোবিদকে দিয়ে তাঁর মানসিক অবস্থা পরীক্ষা করানোর ব্যবস্থা হচ্ছে। বৃহস্পতিবারেই এই ব্যাপারে আদালতের কাছ থেকে প্রয়োজনীয় অনুমতি নিয়েছে পুলিশ।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ০৩ জুলাই ২০১৫ ০৩:৪৫
Share: Save:

পাভলভ হাসপাতালে পার্থ দে-কে নানা ভাবে পরীক্ষা এবং জিজ্ঞাসাবাদ করেও রবিনসন স্ট্রিটের কঙ্কাল-রহস্যের চাবিকাঠির হদিস মেলেনি। তাই এ বার ফরেন্সিক-সাইকোলজিস্ট অর্থাৎ ফরেন্সিক-মনোবিদকে দিয়ে তাঁর মানসিক অবস্থা পরীক্ষা করানোর ব্যবস্থা হচ্ছে। বৃহস্পতিবারেই এই ব্যাপারে আদালতের কাছ থেকে প্রয়োজনীয় অনুমতি নিয়েছে পুলিশ।

মনোবিকার কোন পর্যায়ে গেলে মানুষ প্রয়াত আত্মজন এবং পোষ্যের শেষকৃত্য না-করে তাঁদের মৃতদেহ ঘরে রেখে সেগুলোর সঙ্গেই বসবাস করতে পারেন, মনস্তত্ত্ববিদেরা তার সম্ভাব্য নানা ব্যাখ্যা দেন। পার্থের ক্ষেত্রেও দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু এখনও পর্যন্ত তাঁর মনের তল পাননি তদন্তকারীরা। তাই শুধু মনোবিদ নয়, ফরেন্সিক-মনোবিদের প্রয়োজন দেখা দিয়েছে। যিনি পরীক্ষাপাত্র, ওই বিশেষজ্ঞেরা শুধু তাঁর মনের নাগাল পাওয়ারই চেষ্টা চালাবেন না। সেই সঙ্গে আনুষঙ্গিক তথ্যপ্রমাণের বস্তুগত বৈজ্ঞানিক বিশ্লেষণ করবেন। তার সঙ্গে মনোবিকলনের সূত্র জুড়ে রহস্যের থই পাওয়ার চেষ্টা করবেন।

পুলিশের খবর, উত্তরপ্রদেশের নিঠারিতে শিশু-কিশোর-কিশোরী-সহ বেশ কয়েক জনকে ধারাবাহিক ভাবে খুনের যে-ঘটনা ঘটেছিল, তার রহস্যমোচনেও ফরেন্সিক-মনোবিদ ডাকা হয়েছিল। এবং রবিনসন স্ট্রিটের কঙ্কাল-রহস্য ভেদের কাজে নিঠারি হত্যাকাণ্ডের তদন্তে যুক্ত, সিঙ্গাপুর-প্রবাসী এক বাঙালি ফরেন্সিক-সাইকোলজিস্টেরই দ্বারস্থ হয়েছেন তদন্তকারীরা। পরিকল্পনা মোটামুটি এই রকম: চলতি সপ্তাহেই পাভলভ হাসপাতালে গিয়ে পার্থকে পরীক্ষা করে তদন্তকারীদের রিপোর্ট দেবেন তিনি। সেই রিপোর্টে ভর রেখেই রবিনসন স্ট্রিটের কঙ্কাল কাণ্ডের মূলে পৌঁছনোর চেষ্টা করবেন তদন্তকারীরা। গোয়েন্দারা জানান, পার্থ বাড়িতে কী অবস্থায় থাকতেন, সেই তথ্যের সঙ্গে সঙ্গে পার্থের লেখা ডায়েরি ও চিরকুট খুঁটিয়ে দেখবেন ওই ফরেন্সিক-মনোবিদ। রবিনসন স্ট্রিটের বাড়িতে যে-সব জিনিসপত্র, খাবার, চিরকুট, পুতুল, ডায়েরি, বই পাওয়া গিয়েছে, পরীক্ষা করা হবে সেগুলোও।

ঠিক কী ধরনের মানসিক অবস্থা থেকে পার্থ মানুষের এবং দু’টি কুকুরের কঙ্কালের সঙ্গে থাকতেন, ওই ফরেন্সিক-মনোবিদের পর্যবেক্ষণ থেকে তার আভাস মিলতে পারে বলে পুলিশের ধারণা। নিঠারি হত্যাকাণ্ডের তদন্তে ওই মনোবিদ সক্রিয় সাহায্য করেছিলেন। এখানেও তাঁর অভিজ্ঞতা কাজে লাগবে বলেই পুলিশের আশা।

১০ জুন রাতে রবিনসন স্ট্রিটের ওই বাড়ি থেকে পার্থের বাবা অরবিন্দ দে-র অগ্নিদগ্ধ মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। পরের দিন পার্থ পুলিশের কাছে দাবি করেন, ঘরের মধ্যে শোয়ানো আছে তাঁর দিদি দেবযানীর দেহ। পরে পুলিশ ওই বাড়ির একটি ঘর থেকে এক মহিলার কঙ্কাল উদ্ধার করে। পাওয়া যায় দু’টি কুকুরের কঙ্কালও। কঙ্কালটি দেবযানীর কি না, তা জানতে সেই কঙ্কালের করোটি ‘ফরেন্সিক সুপার ইম্পোজিশন’-এর জন্য চণ্ডীগড়ের কেন্দ্রীয় ফরেন্সিক সায়েন্স ল্যাবরেটরিতে পাঠানো হয়েছে।

পুলিশের একটি দল এ দিনও পাভলভে যায়। কিন্তু তারা পার্থের সঙ্গে কথা বলতে পারেনি। তদন্তকারীরা জানান, অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে পার্থ সব প্রশ্ন এড়িয়ে গিয়েছেন।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE