মেডিক্যাল কলেজে আগুন লাগার পরে শিশুদের নিয়ে উদ্বিগ্ন মায়েরা। বৃহস্পতিবার রাতে। ছবি: সুমন বল্লভ।
হাতে-পায়ে সদ্য অস্ত্রোপচার হয়েছে শিশুগুলির। ব্যান্ডেজ তখনও খোলা হয়ে ওঠেনি। হাসপাতালের ওয়ার্ডে শিশুদের সঙ্গেই ছিলেন তাদের মায়েরা। হঠাৎই তাঁরা শুনতে পেলেন একটা বিকট শব্দ। তার পরে দেখলেন, ওই ওয়ার্ডেই ডাক্তারের ঘর থেকে গলগল করে কালো ধোঁয়া বেরোচ্ছে। কিছু বুঝে ওঠার আগেই পুরো ঘর কালো ধোঁয়ায় ভরে যায়। আতঙ্কে চিৎকার করতে করতে শিশুদের কোলে নিয়ে ছ’তলার উপর থেকে সিঁড়ি বেয়ে নীচে নামে আসেন মহিলারা।
বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৮টা নাগাদ আতঙ্কের এই চিত্র দেখা গেল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের গ্রিন বিল্ডিংয়ের শিশুদের শল্য বিভাগে। দমকল সূত্রের খবর, এ দিনের ঘটনায় কোনও হতাহতের খবর নেই। খবর পেয়ে দমকলের একটি ইঞ্জিন গিয়ে আধ ঘণ্টার চেষ্টায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। তবে তার আগেই কালো ধোঁয়াকে ঘিরে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।
ঠিক কী ঘটেছিল?
ঘটনার সময় অন্যদের সঙ্গে সোনিয়া ঘোষ নামে এক মহিলাও ওই ওয়ার্ডে ছিলেন। তিনি বললেন, ‘‘আচমকাই একটা বিকট আওয়াজ হল। চমকে গিয়ে দেখলাম, গলগল করে কালো ধোঁয়া বেরোচ্ছে। তখন প়ড়িমরি করে নীচে নেমে আসি।’’
ধোঁয়া কীসের? দমকল জানায়, ওই ওয়ার্ডে ডাক্তারের ঘরে বাতানুকূল যন্ত্রে শর্ট সার্কিট হয়ে যাওয়ায় ধোঁয়া বেরোচ্ছিল। হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই ওয়ার্ডে ২৮-৩০টি শিশু ছিল। তাদের কারও সদ্য অস্ত্রোপচার হয়েছে, কারও বা শুক্রবার করা হবে। সেই অবস্থায় শিশুদের সঙ্গেই ছিলেন মায়েরা। ধোঁয়া দেখে সকলেই আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়েন। লিফটের জন্য অপেক্ষা না-করেই সিঁড়ি দিয়ে হুড়মুড়িয়ে নামতে থাকেন তাঁরা। এর ফলে বড় ধরনের বিপদ ঘটতে পারত বলে আশঙ্কা অনেকের। প্রশ্ন উঠেছে দ্রুত তাঁদের নামিয়ে আনার ব্যবস্থা করা হল না কেন? যে-সব শিশুর সদ্য অস্ত্রোপচার হয়েছে, ও-ভাবে নামতে গিয়ে পড়ে গেলে তাদের তো মারাত্মক ক্ষতি হতে পারত। হাসপাতাল সূত্রের খবর, দ্রুত পরিস্থিতির মোকাবিলার জন্য ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। রাতে ওই ওয়ার্ডেই শিশুদের রাখা হচ্ছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy