অগ্নিযুদ্ধ। শনিবার, মহেশতলার সেই কারখানায়। ছবি: অরুণ লোধ।
বিধ্বংসী আগুনে পুড়ে গেল একটি রাসায়নিক কারখানার একাংশ। শনিবার দুপুরে ঘটনাটি ঘটেছে মহেশতলা থানার বজবজ ট্রাঙ্ক রোড এলাকার রামপুরে। দমকল সূত্রের খবর, কারখানার যে অংশে আগুন লেগেছিল, সেখানে আঠা তৈরি হত। ওই অংশে প্রচুর দাহ্য রাসায়নিক মজুত থাকায় আগুনের তেজ দ্রুত বাড়তে থাকে। চার দিকে কালো ধোঁয়া ছড়ানোয় আতঙ্কিত হয়ে পড়েন স্থানীয় বাসিন্দারা। প্রায় চার ঘণ্টার চেষ্টায় ১৭টি ইঞ্জিন আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। এই ঘটনায় অবশ্য হতাহতের কোনও খবর নেই।
পুলিশ ও দমকল সূত্রে জানা গিয়েছে, দুপুর দেড়টা নাগাদ প্রথম আগুনের ফুলকি দেখতে পান কারখানার কর্মীরা। তাঁরা এ দিন জানান, কারখানায় রাখা স্পিরিটের ড্রামের কাছে ওই আগুনের শিখা দ্রুত ছড়িয়ে পড়তে থাকে। কয়েক মিনিটের মধ্যেই কারখানার ওই অংশে আগুন দাউ দাউ করে জ্বলে ওঠে। প্রথমে কারখানায় রাখা অগ্নিনির্বাপণ যন্ত্র দিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করা হয়। কিন্তু আগুন না নেভায় দমকলের দু’টি ইঞ্জিন ঘটনাস্থলে আসে। তাতেও আগুন নিয়ন্ত্রণে না আসায় একের পর এক আসতে থাকে বেহালা, টালিগঞ্জ, বজবজ ও মহেশতলা দমকল কেন্দ্রের মোট ১৭টি গাড়ি। ঘটনাস্থলে আসেন মহেশতলা থানার ওসি শুভাশিস চৌধুরী। দমকলকর্মীরা জানিয়েছেন, কারখানার ভিতরে দাহ্য রাসায়নিক মজুত থাকায় আগুন নিয়ন্ত্রণে খুবই অসুবিধা হচ্ছিল। কালো ধোঁয়ায় ছেয়ে গিয়েছিল কারখানার আশপাশ। আগুনের শিখা এতটাই উচ্চতায় উঠে যায় যে, অনেক দূর থেকে ওই শিখা দেখতে পেয়ে এলাকার মানুষ আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়েন। আগুন নিয়ন্ত্রণে আসছে কি না, দেখতে কারখানার সামনে ভিড় জমে যায়। স্থানীয় বাসিন্দা রাজা মণ্ডল বলেন, “চার দিকে কালো ধোঁয়া ছড়িয়ে যাওয়ায় চোখ জ্বালা করছিল। আমাদের ঘরের ভিতরেও ধোঁয়া ভরে যায়। বাড়ির মেয়েরা আতঙ্কে ঘর বন্ধ করে বাইরে বেরিয়ে আসে।”
এ দিকে, কারখানার মোট সাত একর জায়গার বাকি অংশেও আগুন ছড়িয়ে পড়ার আতঙ্কে কর্মীরা ছোটাছুটি করতে থাকেন। কারখানার ভিতরে প্রচুর রাসায়নিক পদার্থের ড্রাম মজুত ছিল। সেগুলি সব বাইরে বার করতে থাকেন তাঁরা। কারখানার বেশ কিছু যন্ত্রপাতিও বাইরে বার করে দেওয়া হয়। হোসপাইপ দিয়ে জল ঢেলে আগুন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করেন দমকলকর্মীরা। সঙ্গে হাত লাগান কারখানার কর্মীরাও।
কারখানার বাকি অংশে অবশ্য আগুন ছড়াতে পারেনি দমকলের চেষ্টায়। বিকেল পাঁচটা নাগাদ আগুন পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আসে। তবে ততক্ষণে কারখানার ওই আঠা তৈরির অংশটি পুরো ভস্মীভূত হয়ে গিয়েছে। ঘটনাস্থলে পৌঁছন দমকল ও পুলিশের কর্তারা। দমকলের এক কর্তা বলেন, “প্রাথমিক তদন্তে মনে হয় শর্ট সার্কিট থেকেই আগুন লেগেছে। ওই ঘরে প্রচুর রাসায়নিক থাকায় আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। ওই কারখানায় আগুন নিয়ন্ত্রণের যথেষ্ট ব্যবস্থা ছিল কি না খতিয়ে দেখা হচ্ছে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy