অবহেলা: বন্ধ হয়ে পড়ে লিফট। গড়িয়াহাটে। নিজস্ব চিত্র
ফুটব্রিজের এক দিকে রয়েছে চলমান সিঁড়ি। অন্য দিকে রয়েছে লিফট। কিন্তু বেশির ভাগ সময়েই ওই লিফট বন্ধ থাকে বলে পথচারীদের অভিযোগ। এমনকি, লিফটের শাটার নামানো থাকে। এই লিফট শনিবার অর্ধ দিবস এবং রবিবার পুরো দিন বন্ধ থাকার নির্ঘণ্ট লেখা নামে মাত্র। ফলে, কাগজে-কলমে গড়িয়াহাটের বিজন সেতুর মুখেই শহরের প্রথম লিফট চালু হলেও তা কার্যত অচল।
ফুটব্রিজের যে অংশে চলমান সিঁড়ি রয়েছে, সেই অংশ দিয়েই ফুটব্রিজে ওঠেন পথচারীরা। কিন্তু রাস্তার উল্টো দিক দিয়ে ওই রাস্তায় উঠতে-নামতে উঁচু সিঁড়ি ব্যবহার করা ছাড়া অন্য বিকল্প সেই লিফট। ফলে সমস্যায় পড়েছেন বৃদ্ধ এবং প্রতিবন্ধী পথচারী। তাঁদের অভিযোগ, এই সমস্যা বহু দিনের। এ ব্যাপারে কলকাতা পুর কর্তৃপক্ষকে বারবার জানিয়েও সুরাহা হয়নি। এ বার এই সমস্যা সমাধানে কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম হস্তক্ষেপ করতে চলেছেন।
মেয়র বলেন, ‘‘বেসরকারি সংস্থার সহযোগিতায় এই ফুটব্রিজ কলকাতা পুরসভা পথচারীদের জন্য করেছিল। কিন্তু তাঁরাই যদি ব্যবহারের সুযোগ না পান, তাহলে অবশ্যই
তা দুর্ভাগ্যজনক। কেন এই সমস্যা হচ্ছে, তা জেনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা করা হবে।’’ তিনি জানান, শুধু গড়িয়াহাটের এই ফুটব্রিজই নয়, পুরসভার অন্য যে কোনও ফুটব্রিজের ক্ষেত্রেও এমন সমস্যা হলে পুরসভা ব্যবস্থা নেবে।
পুরসভা সূত্রের খবর, ২০০০ সালে তৎকালীন কলকাতার মেয়র সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে প্রথম তৃণমূল বোর্ড বেসরকারি সংস্থার সহযোগিতায় এই ফুটব্রিজটি তৈরি করে। যানজটপ্রবণ ওই এলাকায় ফুটব্রিজ করার জন্য কলকাতা পুর কর্তৃপক্ষ ট্র্যাফিক পুলিশের কাছে অনুমতি চেয়েছিল। সেই অনুমতি মিলতেই ফুটব্রিজটি হয়। বৃদ্ধ, শিশু এবং প্রতিবন্ধী নাগরিকেরা যাতে সহজেই ওই ফুটব্রিজ ব্যবহার করতে পারেন, তাঁদের কথা ভেবেই এখানে চলমান সিঁড়ি এবং লিফট তৈরি করা হয়েছিল। এক পুর আধিকারিকের কথায়, একটি চলমান সিঁড়ি দিয়ে ফুটব্রিজের এক দিকে শুধু উঠতে পারা যায়। কিন্তু লিফট দিয়ে পথচারীরা ওঠা-নামা দু’টিই করতে পারবেন। এই ভেবেই সে সময়ে লিফট বসানো হয়েছিল।
কিন্তু লিফট বন্ধ থাকছে কেন? সংশ্লিষ্ট হোর্ডিং সংস্থা এই প্রশ্নের কোনও যথাযথ উত্তর দিতে পারেনি। পুর কর্তৃপক্ষ জানাচ্ছেন, ফুটব্রিজ রক্ষণাবেক্ষণে পুরসভার কোন দফতর কোনটি দেখবেন, তা নিয়ে একটা চাপানউতোর রয়েছেই। পুরসভার এক আধিকারিকের কথায়, ‘‘ফুটব্রিজটি নিরাপদ কি না, তা দেখতে কাঠামো পরীক্ষা করার কথা পুরসভার রাস্তা দফতরের। অন্য দিকে, দরপত্রের মাধ্যমে একটি হোর্ডিং সংস্থাকে ফুটব্রিজটি রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব দেওয়া রয়েছে। ফলে, সে ব্যাপারেও অনেক সময়ে সমস্যা হয়। ফলে সব মিলিয়ে একটা প্রক্রিয়াগত জটিলতা রয়েছে।’’
গড়িয়াহাটের ওই ফুটব্রজটি এখনও নিরাপদ অবস্থায় বলে জানাচ্ছেন পুর কর্তৃপক্ষ। এই সমস্যা সমাধানে দ্রুত রক্ষণাবেক্ষণকারী সংস্থাকে তলব করা হবে বলে জানিয়েছেন কর্তৃপক্ষ। সংশ্লিষ্ট হোর্ডিং সংস্থাটির এক আধিকারিক জানান, ওই ফুটব্রিজে লিফট যাতে সচল থাকে সেই ব্যপারে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy