জয়দীপ নস্কর।
পাঁশকুড়ায় স্কুলের হস্টেলে এক ছাত্রের লাঠির আঘাতে দমদম ক্যান্টনমেন্টের আর এক ছাত্রের চোখ নষ্টের অভিযোগ উঠল। অভিযুক্ত ছাত্রের বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে আক্রান্ত ছাত্রের পরিবার।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, দমদম ক্যান্টনমেন্টের বাসিন্দা জয়দীপ নস্কর গত জানুয়ারিতে পাঁশকুড়ার উত্তর মেচগ্রাম বসন্ত আবাস শিক্ষা সদনে পঞ্চম শ্রেণিতে ভর্তি হয়। স্কুলের হস্টেলেই থাকত সে। জয়দীপের বাবা লক্ষ্মীকান্ত নস্কর পেশায় রিকশাচালক। মা সীমা নস্কর পরিচারিকার কাজ করেন। তাঁরা দমদম ক্যান্টনমেন্টেই থাকেন। অভিযোগ, গত ৫ মার্চ রাত সাড়ে ৮টা নাগাদ জয়দীপ যখন ঘুমোতে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিল, তখন তার ঘরে আসে ওই স্কুলের একাদশ শ্রেণির ছাত্র তথা হস্টেল আবাসিক শুভ মণ্ডল। সে লাঠি দিয়ে জয়দীপের চোখে আঘাত করে বলে অভিযোগ।
জয়দীপের পরিবার জানিয়েছে, ওই দিন পৌনে ১০টা নাগাদ হস্টেল কর্তৃপক্ষ তাঁদের জানান, জয়দীপের চোখে ব্যথা হওয়ায় তাকে তমলুক হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। পরে ওই রাতেই জয়দীপকে নিয়ে তাঁদের কাছে আসেন স্কুলের এক শিক্ষক এবং কেয়ারটেকার। জয়দীপের পরিবারের দাবি, ওই সময়ে জয়দীপের চোখে ব্যান্ডেজ ছিল। চোখ থেকে রক্ত বেরোচ্ছিল। অভিযোগ, ঘন ঘন জ্ঞানও হারাচ্ছিল জয়দীপ।
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
পরিবার সূত্রে খবর, জয়দীপকে প্রথমে আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে তাকে কলকাতা ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। গত ৬ মার্চ জয়দীপের ডান চোখে অস্ত্রোপচার হয়। তার পরিজনেদের দাবি, চিকিৎসক তাঁদের জানিয়েছেন, জয়দীপ ডান চোখে কোনও দিনই দেখতে পাবে না। এর পরে গত শুক্রবার জয়দীপের মা সীমাদেবী পাঁশকুড়া থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন শুভ এবং স্কুল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে। সীমা বলেন, ‘‘আর্থিক কষ্টের মধ্যেও ছেলেকে ভাল পড়াশোনা করানো জন্য হস্টেলে রেখেছিলাম। এ রকম হবে ভাবিনি। এ বিষয়ে স্কুল কর্তৃপক্ষ মুখে কুলুপ এঁটেছেন। আমরা অভিযুক্ত ছাত্র ও স্কুল কর্তৃপক্ষের শাস্তি চাইছি।’’
স্কুল সূত্রের খবর, অভিযুক্ত শুভ মণ্ডলের বাড়ি নিউ টাউনে। স্কুলের প্রধান শিক্ষক অনিমেষ দাস বলেন, ‘‘ঘটনার সময়ে ওখানে ছিলাম না। বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখছি।’’ যদিও হস্টেলের দায়িত্বপ্রাপ্ত অমলেশ দাস বলেন, ‘‘শুভ আর জয়দীপ একই এলাকার হওয়ায় শুভকে জয়দীপের বাড়ির লোকজন তার খেয়াল রাখতে বলেছিলেন। তাই সে ওর ঘরে গিয়েছিল। কথা কাটাকাটি হওয়ায় শুভ বাঁশের বাতা ছুঁড়ে মারলে জয়দীপের চোখে আঘাত লাগে। র্যাগিংয়ের অভিযোগ ঠিক নয়।’’
হস্টেলকর্মীর দাবি প্রসঙ্গে জয়দীপের মায়ের বক্তব্য, ‘‘শুভকে আগে থেকে চিনতাম না। স্কুলে গিয়ে আলাপ হয়েছিল। তবে ওকে কখনওই আমার ছেলেকে দেখভালের কথা বলিনি।’’ আপাতত ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পাঁশকুড়া থানার পুলিশ। শনিবার সন্ধ্যায় পুলিশ যায় ওই স্কুলে। জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় স্কুলের প্রধান শিক্ষক ও হস্টেল সুপারকে। পুলিশ জানিয়েছে, তদন্ত শুরু হয়েছে। আক্রান্ত ছাত্রের মেডিক্যাল রিপোর্ট খতিয়ে দেখে পদক্ষেপ করা হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy