Advertisement
০৩ নভেম্বর ২০২৪

বিপর্যয় মোকাবিলায় প্রথম উড়ল ‘ড্রোন’

উড়ল। ছবি তুলল। সঙ্গে সঙ্গে সেই চলমান ছবি পাঠিয়েও দিল লালবাজারের কন্ট্রোল রুমে। চৌরঙ্গির বহুতল ভবন চ্যাটার্জি ইন্টারন্যাশনালে লাগা আগুনের কোনও উৎস দমকলের চোখ এড়িয়ে গিয়েছে কি না, কেউ আটকে আছেন কি না, সেই ব্যাপারে নিশ্চিত হতে সাহায্য করল সেই ছবি। উড়ুক্কু যানের তোলা ছবি। কেনার এক বছরের মাথায়, এই প্রথম কোনও বিপর্যয়ের ঘটনায় কলকাতা পুলিশ ব্যবহার করল তার একমাত্র উড়ুক্কু যানটিকে।

রাস্তায় তখন সকলের চোখ উপরের দিকেই।

রাস্তায় তখন সকলের চোখ উপরের দিকেই।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ০৩ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ০৩:৩৮
Share: Save:

উড়ল। ছবি তুলল। সঙ্গে সঙ্গে সেই চলমান ছবি পাঠিয়েও দিল লালবাজারের কন্ট্রোল রুমে। চৌরঙ্গির বহুতল ভবন চ্যাটার্জি ইন্টারন্যাশনালে লাগা আগুনের কোনও উৎস দমকলের চোখ এড়িয়ে গিয়েছে কি না, কেউ আটকে আছেন কি না, সেই ব্যাপারে নিশ্চিত হতে সাহায্য করল সেই ছবি। উড়ুক্কু যানের তোলা ছবি। কেনার এক বছরের মাথায়, এই প্রথম কোনও বিপর্যয়ের ঘটনায় কলকাতা পুলিশ ব্যবহার করল তার একমাত্র উড়ুক্কু যানটিকে।

লালবাজারের কর্তাদের বক্তব্য, ২০১০-এর মার্চে পার্ক স্ট্রিটে স্টিফেন কোর্টের অগ্নিকাণ্ডের সময়ে সেই বহুতলে এক সঙ্গে বেশ কয়েকটি জায়গায় যে আগুন লেগেছে, সেটা বুঝতে দেরি হয়ে গিয়েছিল। বাড়িটির বহু জায়গায় যে বহু মানুষ আটকে পড়েছেন, সেটাও দমকল ও পুলিশের চোখে প্রথমে ধরা পড়েনি। তখন লালবাজারের হাতে এই উড়ুক্কু যান বা ‘ড্রোন’ ছিল না। গত বছর ৪১ লক্ষ টাকা দিয়ে এই চালকহীন আকাশযান কেনে কলকাতা পুলিশ। তিনশো মিটার উচ্চতা পর্যন্ত উঠতে পারা ‘ড্রোন’টি এত দিন ওড়ানো হয়েছিল শরতে উৎসবের মরসুমে এবং বড়দিন ও ইংরেজি নববর্ষের মতো দিনে মূলত ভিড় নিয়ন্ত্রণ ও নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে। কিন্তু মঙ্গলবারের আগে বিপর্যয় মোকাবিলার জন্য ড্রোনটিকে কখনও ওড়ানো হয়নি।

পুলিশ জানায়, এ দিন সকালে চ্যাটার্জি ইন্টারন্যাশনালের উল্টো দিকে, গড়ের মাঠে একটি পুকুরের পাশ থেকে ড্রোনটি ওড়ান কলকাতা পুলিশের অফিসারেরা। কিন্তু কিছুক্ষণের মধ্যেই ওই তল্লাটে জোর বৃষ্টি শুরু হওয়ায় উড়ুক্কু যানটি নামিয়ে নিতে হয়। কারণ পুলিশের বক্তব্য, বেশি বৃষ্টি হলে এই ধরনের ড্রোনের ক্যামেরা ও প্রপেলার নষ্ট হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েই যায়। তাই বৃষ্টি থামলে ফের ওড়ানো হয় যানটিকে। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, বহুতলের যেখানে আগুন লেগেছিল, সেই ১৬ ও ১৭ তলা উচ্চতায় উঠে, বাড়িটি থেকে মিটার চারেক দূরত্ব বজায় রেখে ছবি তুলতে থাকে উড়ুক্কু যান। আগুন, ধোঁয়া, দমকলের উদ্ধারকাজ এবং নানা কোণ থেকে নেওয়া ওই দু’টি তলার বিভিন্ন অংশের ছবি তুলে লালবাজারে পাঠাচ্ছিল ড্রোন।

কন্ট্রোল রুমের অফিসারেরা ও লালবাজারের শীর্ষস্থানীয় কর্তারা সে সব ছবি দেখে ঘটনাস্থলে থাকা পুলিশকর্মীদের প্রয়োজনীয় নির্দেশ পাঠাচ্ছিলেন। সমন্বয় রাখছিলেন দমকলের সঙ্গেও।

উড়ুক্কু যান ব্যবহার করায় কী সুবিধে হল?

লালবাজারের এক শীর্ষস্থানীয় কর্তা জানান, আগুন যখন মোটামুটি নিয়ন্ত্রণে এসে গিয়েছিল, ঠিক সেই সময়ে হঠাৎ করেই চ্যাটার্জি ইন্টারন্যাশনালের পিছন দিকে, ১৮ তলা থেকে ধোঁয়া বেরোনোর খবর পাওয়া যায়। উড়ুক্কু যানটি নির্দিষ্ট ভাবে ওই জায়গার ছবি পাঠালে বোঝা যায়, আসলে নীচের তলার আগুনের ধোঁয়াই ওই তলা পর্যন্ত পৌঁছেছে। ওই অফিসার আরও জানিয়েছেন, এ দিন ওই সময়ে মাঝেমধ্যেই বৃষ্টি নামায় ড্রোনটিকে একাধিক বার নামিয়ে আনতে হয়েছিল। তবে তাঁর কথায়, “স্টিফেন কোর্টে আগুন লাগার দিন ড্রোনের অভাব আমরা বুঝেছিলাম। এ দিন সেটা হয়নি। কেউ আটকে পড়েছেন কি না, সেই ব্যাপারে নিশ্চিত হতে ড্রোনের তোলা ছবি বিশ্লেষণ করে দেখা হয়েছে।”

লালবাজার সূত্রের জানা গিয়েছে, আরও একটি উড়ুক্কু যান কেনা হচ্ছে এ বছর।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE