কলকাতার সঙ্গে লাগোয়া জেলাগুলির যোগাযোগ বাড়াতে নতুন একশো বাস কিনছে রাজ্য পরিবহণ দফতর। সেই বাস দেওয়া হচ্ছে ক্যালকাটা ট্রাম কোম্পানি (সিটিসি)-কে। কিন্তু সমস্যা দেখা দিয়েছে বাস কোথায় রাখা হবে, তা নিয়ে। পরিবহণ দফতরের আয় বাড়াতে ইতিমধ্যেই বিভিন্ন ডিপোর জমি বিক্রি করা হয়েছে। তার মধ্যে বেলগাছিয়া, টালিগঞ্জ, শ্যামবাজার ডিপো অন্যতম। এই অবস্থায় কলকাতায় বাড়তি একশো নতুন বাস রাখার জায়গা নেই। পরিস্থিতি সামাল দিতে তাই জেলার ডিপোয় বাস রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। দফতরের এক শীর্ষ কর্তার কথায়, ‘‘প্রাথমিক ভাবে বারাসত, হাবড়া-সহ জেলার ডিপোয় বাস রাখা হবে। কলকাতা লাগোয়া জোকা ডিপোতেও কিছু বাস রাখার জায়গা মিলবে। কিন্তু কলকাতা শহরের মধ্যে কোনও ডিপোয় সে ভাবে জায়গা পাওয়া যাচ্ছে না।’’
জওহরলাল নেহরু ন্যাশনাল আর্বান রিনিউয়াল মিশন প্রকল্পে সিএসটিসি গত আর্থিক বছরে সাড়ে ছ’শোর কাছাকাছি নতুন বাস কিনেছে। সিটিসি-র হাতে নতুন একশো বাস এলে কলকাতা ও লাগোয়া এলাকায় বাসের অভাব অনেকটাই মিটবে বলে মনে করছেন পরিবহণ দফতরের কর্তারা।
বছরখানেক আগে পরিবহণ দফতরে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, একটি রুটে সরকারের একটি মাত্র নিগমই বাস চালাবে। কারণ, একই রুটে একাধিক নিগম বাস চালালে নিজেদের মধ্যে প্রতিযোগিতায় সব নিগমেরই ক্ষতি হচ্ছে বলে মনে করেন কর্তারা। কোন রুটে, কোন নিগম বাস চালাবে ঠিক করতে তিন জনের একটি কমিটিও তৈরি করা হয়। ওই রিপোর্টের ভিত্তিতেই সিটিসি-র ভাগে যে সব জেলা পড়েছে, ওই সব জেলায় নতুন কেনা একশোটি বাস চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য পরিবহণ দফতর। এর মধ্যে গোটা দশেক বাস এসি, বাকিটা নন-এসি। সিটিসি-র চেয়ারম্যান তপন দাশগুপ্তের দাবি, মুখ্যমন্ত্রী জেলার বৈঠকে গিয়ে একধিক অভিযোগ পেয়েছেন। পর পর অভিযোগ পাওয়ার পরে মুখ্যমন্ত্রী নতুন বাস কেনার নির্দেশ দেন। সেই মতো নতুন বাস কেনার জন্য ২৫ কোটি টাকা সিটিসি-কে দেওয়ারও সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য সরকার। নতুন কেনা এই বাসগুলি হাওড়া, হুগলি, উত্তর ২৪ পরগনা এবং নদিয়া জেলার সঙ্গে কলকাতার যোগাযোগ তৈরির জন্য ব্যবহার করা হবে বলে সিটিসি সূত্রের খবর। পরিবহণ দফতরের এক কর্তার কথায়, ‘‘জেলার এই সব রুটে দীর্ঘ দিন ধরেই কোনও সরকারি বাস ছিল না। ওই সব এলাকার যাত্রীরা উপকৃত হবেন।’’
তপনবাবু বলেন, ‘‘জনপ্রতিনিধি এবং স্থানীয় বাসিন্দাদের চাহিদার ভিত্তিতেই নতুন বাসগুলি কোন রুটে চলছে, তা নির্দিষ্ট করা হয়েছে। প্রত্যেকটি রুট খুব কার্যকরী হবে বলেই আমাদের ধারণা। যাত্রীদের যাতায়াতের সুবিধেও হবে।’’ সিটিসি-র ম্যানেজিং ডিরেক্টর নীলাঞ্জন শাণ্ডিল্য বলেন, ‘‘ইতিমধ্যেই একশো বাস কিনতে টেন্ডার করা হয়েছে। পুজোর আগেই বেশ কিছু বাস রাস্তায় নামানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। নতুন বাস রাস্তায় নামলে নিগমের আয়ও বাড়বে।’’
সিটিসি সূত্রের খবর, হুগলি জেলার নতুন রুটগুলি হল, আঁটপুর থেকে জাঙ্গিপাড়া হয়ে কলকাতা, শ্রীরামপুর থেকে সল্টলেক, সল্টলেক থেকে ডানকুনি এবং চুঁচুড়া থেকে কলকাতা। হাওড়ায় উলুবেড়িয়া থেকে রাজাবাজার, বাকসি থেকে কলকাতা (ধর্মতলা), জুজার্সা থেকে রাজাবাজার, ভট্টনগর থেকে সল্টলেকের করুণাময়ী, গড়ভবানী থেকে উদয়নারায়ণপুর। নদিয়া জেলায় নতুন বাসগুলি চলবে পলাশিপাড়া থেকে কলকাতা, নগরউখড়া থেকে কলকাতা, শিকারপুর থেকে কলকাতা এবং কল্যাণী থেকে বারাসাত। এ ছাড়া, উত্তর ২৪ পরগনার হাসনাবাস থেকে কলকাতা, হাবড়া থেকে সাঁতরাগাছি, বারাসাত থেকে বাদুড়িয়া, বনগাঁ থেকে বারাসাত, লাউহাটি থেকে কলকাতা, বড় জাগুলিয়া থেকে বারাসাত হয়ে ফুরফুরা শরিফের রাস্তায় নতুন রুট হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy