পুলিশ কমিশনার অনুজ শর্মা।
বাহিনীর অধস্তন অফিসারদের সঙ্গে প্রথম বৈঠকেই গুজব ঠেকানোর উপরে জোর দিলেন কলকাতার পুলিশ কমিশনার অনুজ শর্মা। লালবাজার সূত্রের খবর, শনিবারের ওই বৈঠকে থানার ওসি থেকে শুরু করে সহকারী কমিশনার ও ডেপুটি কমিশনারেরাও হাজির ছিলেন। উপস্থিত ছিলেন অন্যান্য পদস্থ কর্তাও। সেখানে গুজব ঠেকানোয় থানা এলাকায় পুলিশি সক্রিয়তার পাশাপাশি লিফলেট
বিলি এবং মাইকে প্রচারের নির্দেশ দিয়েছেন সিপি।
শিশু চুরির গুজবের জেরে কলকাতায় একাধিক গণপিটুনির ঘটনা ঘটেছে। বেশির ভাগ জায়গাতেই পুলিশ খবর পেয়ে সক্রিয় হওয়ায় বড় ধরনের বিপদ ঘটেনি। কিন্তু এই যে গুজবের আবহ তৈরি হয়েছে, সেটাকেই সমূলে বিনাশের দাওয়াই দিয়েছেন নতুন সিপি।
শুক্রবার রাতেই ফুলবাগান থানা এলাকায় একটি গণপিটুনির ঘটনা ঘটেছে। তার পিছনেও গুজবের ভূমিকা ছিল বলে পুলিশের দাবি। গণপিটুনি ঠেকাতে গিয়ে মার খেয়েছেন ফুলবাগান থানার চার পুলিশকর্মীও। পুলিশ জানিয়েছে, ওই ঘটনায় ১৭ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আক্রান্ত যুবক একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি। তাঁর অবস্থা স্থিতিশীল। পুলিশ সূত্রের দাবি, নারকেলডাঙার বাসিন্দা ওই যুবক বন্ধুদের সঙ্গে বাজি ধরে মেয়ে সেজে বেপাড়ায় ঘুরতে গিয়ে আক্রান্ত হয়েছিলেন।
পুলিশেরই একাংশের বক্তব্য, গত সপ্তাহখানেক ধরে বিভিন্ন থানা নিজ উদ্যোগে গুজব ঠেকাতে প্রচার করেছিল। কিন্তু অনেক থানা সে ভাবে প্রচারে নামেনি। এ দিন সিপি-র নির্দেশের পরে সব থানার ওসি-ই সক্রিয় হবেন বলে মনে করা হচ্ছে। পুলিশের আর একটি অংশের বক্তব্য, গুজবের শুরুটা হয়েছিল দক্ষিণ ২৪ পরগনা থেকে। ফলে দক্ষিণ ২৪ পরগনা লাগোয়া কয়েকটি থানা সক্রিয় হয়েছিল। কিন্তু ফুলবাগানের মতো খাস কলকাতাতেও যে ভাবে গুজবের ‘ভূত’ ঢুকে পড়েছে, তা নিয়ে চিন্তিত পুলিশকর্তাদের একাংশ।
পুলিশকর্তাদের একাংশ এ-ও বলছেন, গুজব ঠেকাতে প্রচারের পাশাপাশি কড়া দাওয়াই দেওয়ারও প্রয়োজন রয়েছে। ফুলবাগানে যেমন উত্তেজিত জনতাকে ছত্রভঙ্গ করতে লাঠিপেটা করেছে পুলিশ। ধৃতদের বিরুদ্ধে জামিন-অযোগ্য ধারায় মামলা দায়ের করে শনিবার শিয়ালদহ আদালতে হাজির করানো হয়। বিচারক তাদের ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন।
পুলিশ সূত্রের খবর, গুজব ঠেকানোর পাশাপাশি মহিলাদের নিরাপত্তা রক্ষার উপরেও জোর দিয়েছেন অনুজ। শহরে বিভিন্ন ধরনের অপরাধ ঠেকাতেও সক্রিয় হতে বলেছেন তিনি। রাস্তায় নাগরিকেরা যাতে পুলিশের উপস্থিতি টের পান, সেই ব্যবস্থাও করতে বলা হয়েছে। এক পুলিশকর্তার বক্তব্য, ‘‘থানার ওসি-দের বলা হয়েছে, রোজ
নিজেদের এলাকায় টহল দিতে। গুজবের খবর পেলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে না-আসা পর্যন্ত ওসি-কে ঘটনাস্থলে থাকতেও নির্দেশ দিয়েছেন পুলিশ কমিশনার।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy