কালীপুজোর উদ্বোধনে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ছবি: ফেসবুক।
বাংলা বিভিন্ন ভাষাভাষী, বিভিন্ন জাতির মানুষের থাকার জায়গা। বাংলাই একমাত্র জায়গা যেখানে কেউ কাউকে তাঁর জাতপাত, ভাষা, খাদ্যাভাস নিয়ে প্রশ্ন করেন না। সোমবার কলকাতায় কালীপুজোর উদ্বোধন থেকে এমনই মন্তব্য করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পাশাপাশি তাঁর অভিযোগ, ভোটের সময় অনেকে বাঙালি এবং অবাঙালির মধ্যে ভাগাভাগির চেষ্টা করেন। যা সমীচীন নয়। সর্বধর্ম সমন্বয়ের বার্তা দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘বাংলাই একমাত্র জায়গা যেখানে কেউ আপনাকে জিজ্ঞাসা করবে না, ভেজ (নিরামিষ) খান না নন-ভেজ (আমিষ) খান। এখানে সবাই মিলেমিশে থাকি আমরা।’’
সোমবার জানবাজার সম্মিলিত কালীপুজো সমিতি, ইন্ডিয়া ক্লাব, শেক্সপিয়ার সরণির ইয়ুথ ফ্রেন্ডস ক্লাব, গিরিশ পার্ক ফাইভ স্টার স্পোর্টিং ক্লাব এবং ভবানীপুর ভেনাস ক্লাবের পুজোর উদ্বোধন করেন মুখ্যমন্ত্রী। ইয়ুথ ফ্রেন্ডস ক্লাবের কালীপুজোর উদ্বোধনে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী জানান, ওই জায়গাটি তাঁর বিধানসভা (ভবানীপুর) এলাকার মধ্যে পড়ে। বাঙালি, গুজরাতি, মুসলমান, খ্রিষ্টান— সমস্ত ধর্ম এবং জাতির মানুষ মিলেমিশে থাকেন। কিন্তু ভোটের সময় বেশ কিছু রাজনৈতিক দল ভাগাভাগির চেষ্টা করেন। মমতার কথায়, ‘‘এটা খারাপ।’’ তিনি বলেন, ‘‘আমার একটা জিনিস শুনে খারাপ লাগে, ভোটের সময় অনেকে বাঙালি-অবাঙালি করেন। মনে রাখবেন, জায়গাটার নাম বাংলা। আমার সবাইকে নিয়ে চলব। শেক্সপিয়ার সরণি সর্বজনীন কালীপুজোটি যেখানে হচ্ছে সেটা আমার বিধানসভা। আমি কৃতজ্ঞ যে আপনারা আমাকে সমর্থন (উপনির্বাচনে) করেছেন। কিন্তু লোকসভায় ‘বুথ-টু বুথ’ দেখেছি ন’শো (ভোটার) থাকলে আমরা একটা পেয়েছি। এটা কেন হবে? এখন তো বুথের রেজাল্ট দেখা যায়। দেখা যায়, কোন বুথে কে পাচ্ছেন কে পাচ্ছেন না। এখানে কাউন্সিলর আমাদের, বিধায়ক আমাদের, সাংসদও আমাদের। বাংলা তাঁদের, যাঁরা বাংলার জন্য ভাবেন। বাংলা একমাত্র জায়গা যেখানে কেউ আপনাকে জিজ্ঞেস করবে না, আপনি কোন ধর্মের? কেউ প্রশ্ন করবেন না আপনার জাত নিয়ে, আপনি বাংলা ভালবাসেন কি না,আপনি ভেজ খান না নন ভেজ। এই রাজ্য আপনার। এখানে বসবাস আপনার অধিকারের মধ্যে পড়ে।’’
জানবাজারের পুজোর উদ্বোধনে মুখ্যমন্ত্রীকে হালকা মেজাজে দেখা গিয়েছে। সেখানে তৃণমূল সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্দেশে বলেন, ‘‘আমাদের সকলের প্রিয় সুদীপদা এই সবে বিদেশ থেকে বিশ্রাম নিয়ে ফিরে এসেছে। আমিই একমাত্র বিশ্রাম নিতে পারি না। দু’বছরে এক বার গেলেও সেটা নিয়ে কত কথা হয়! কিন্তু প্রোগ্রাম নিয়েই যাই।’’ কালীপুজোর শুভেচ্ছা জানিয়ে বাজি ফাটানো নিয়ে সকলকে সতর্ক করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘‘সব কিছুতে প্রশাসনের একটা ভূমিকা থাকে। সকলকেই অভিনন্দন জানাচ্ছি। আর সবাইকে বলছি, বাজি এমন ফাটাবেন যাতে কারও কোনও অসুবিধা না-হয়। প্রশাসনের কথা শুনবেন সবাই। শব্দদূষণ, মানসিক দূষণ করবেন না। পরিবেশবান্ধব বাজি ফাটাবেন।’’ তিনি আগুনের ব্যবহার নিয়ে সতর্ক থাকার বার্তা দিয়েছেন। এ নিয়ে নিজের একটি অভিজ্ঞতাও জানিয়েছেন মমতা। তিনি বলেন, ‘‘আমি মোমবাতি মিছিলে গেলে ভয় পাই। অনেক ছেলেমেয়ে এক সঙ্গে থাকে তো। মিছিলে হাঁটার সময় যাতে কিছু দুর্ঘটনা-না ঘটে তা নিয়ে চিন্তায় থাকি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy