Advertisement
E-Paper

অতীতে নরবলি হত, কার্তিকের অমাবস্যার রাতেও রোশনাই থেকে দূরে নিভৃতে পূজিত হন বিদ্যাসুন্দর কালী

শোনা যায়, এক সময়ে দামোদরের তীরবর্তী তেজগঞ্জ ছিল জঙ্গলে ঘেরা। সেখানে ছিল প্রাচীন কালী মন্দির। তৎকালীন বর্ধমানের রাজারা ওই মন্দিরে পুজো দিতে আসতেন।

বর্ধমানের তেজগঞ্জের বিদ্যাসুন্দর কালী।

বর্ধমানের তেজগঞ্জের বিদ্যাসুন্দর কালী। — নিজস্ব চিত্র।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৪ অক্টোবর ২০২৪ ১৫:২২
Share
Save

কার্তিকের অমাবস্যার রাতে আলোয় ভাসে গোটা বর্ধমান। যদিও বর্ধমানের তেজগঞ্জের বিদ্যাসুন্দর কালীর পুজো হয় নিভৃতে। রোশনাই, ঢাকের শব্দ থেকে কালীপুজোর দিনেও দূরেই থাকেন দেবী। বছরের বাকি দিনগুলির মতো। ভরতচন্দ্রের এই বিদ্যাসুন্দর কালীর পুজো নিয়ে বিভিন্ন কাহিনি প্রচলিত রয়েছে। তাঁর কাব্যগ্রন্থেও উল্লেখ রয়েছে বিদ্যাসুন্দর কালীর কথা।

শোনা যায়, এক সময়ে দামোদরের তীরবর্তী তেজগঞ্জ ছিল জঙ্গলে ঘেরা। সেখানে ছিল প্রাচীন কালী মন্দির। তৎকালীন বর্ধমানের রাজারা ওই মন্দিরে পুজো দিতে আসতেন। কথিত রয়েছে, ওই মন্দিরে নাকি নরবলি হত। মন্দিরের পাশে ছিল সুড়ঙ্গ, যার সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে বিদ্যা এবং সুন্দরের গল্প। বিদ্যা ছিলেন রাজকুমারী। সুন্দর ছিল গরীব পূজারীর সন্তান। কথিত রয়েছে, ওই সুড়ঙ্গ দিয়েই রাজকন্যা বিদ্যার সঙ্গে গোপনে দেখা করতে যেতেন সুন্দর। রাজবাড়ি থেকে মন্দিরে পুজোর ফুল দিতে আসতেন মালিনী। একদিন তাঁর কাছে একটি মালা দেখে ব্যকুল হয়ে পড়েন সুন্দর। তিনি জানতে পারেন, মালাটি গেঁথেছেন রাজকন্যা বিদ্যা। বিদ্যার সঙ্গে সুন্দর দেখা করতে গেলে তিনি পালিয়ে যান।

বর্ধমানের তেজগঞ্জের সেই মন্দির।

বর্ধমানের তেজগঞ্জের সেই মন্দির। —নিজস্ব চিত্র।

সুন্দরের মন মানেনি। ধরা পড়লে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হবে জেনেও সুন্দর মন্দির থেকে রাজবাড়ি পর্যন্ত সুড়ঙ্গ কেটে ফেলেন। তার পর সেই পথ ধরেই রাজকন্যা বিদ্যার কাছে পৌঁছে যান সুন্দর। ধীরে ধীরে গভীর প্রণয়ের সম্পর্ক গড়ে ওঠে বিদ্যা এবং সুন্দরের মধ্যে। সেই খবর রাজাকে জানান তাঁর গুপ্তচরেরা। তার পরেই তেজগঞ্জের মন্দিরে দেবীর সামনে নিজের মেয়ে এবং তাঁর প্রেমিককে বলির নির্দেশ দেন রাজা। কথিত রয়েছে, বলিদানের আগের মুহূর্তে দেবীকে প্রণাম করতে চান সুন্দর। তখনই মূর্ছিত হন কাপালিক। সেই মুহূর্তেই অন্তর্হিত হন বিদ্যা এবং সুন্দর। সেই থেকে তাঁদের আর কোনও খোঁজ মেলেনি। তার পরেই রাজার আদেশে মন্দিরে নরবলি বন্ধ হয়ে যায়।

ভরতচন্দ্রের সেই বিদ্যাসুন্দর কালী এখনও পূজিত বর্ধমানের তেজগঞ্জে। কথিত রয়েছে, রাজার নির্দেশে বাঁকুড়া থেকে এসে এই মন্দিরে পুজোর ভার পেয়েছিলেন এখনকার সেবায়েতদের পূর্বপুরুষ। সেবায়েত আভাবানি বটব্যাল বলেন, ‘‘এখন আর আগের মতো জাঁকজমক নেই। তবুও শ্যামাপুজোর দিন এই মন্দিরে নিষ্ঠা সহকারে পুজো হয়। তার পর আবার নির্জনেই থেকে যান বিদ্যাসুন্দর কালী।’’

kalipuja Bardhaman

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

{-- Slick slider script --}}