পরিবর্তন: এ ভাবেই রঙিন হবে ফিডার বক্স। —নিজস্ব চিত্র।
শহর সৌন্দর্যায়ন শুধু সরকারের দায় নয়, এগিয়ে আসুন নাগরিকরাও। বিভিন্ন আলোচনায় শোনা গিয়েছে এই আবেদন। কিন্তু সে ভাবে সাড়া দিয়ে এগিয়ে আসেননি এ শহরের নাগরিক। ফলে পরিবর্তন নজরে আসেনি এত দিন। সরকার ছাড়াও আমরা পারি— এমন দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে এ বার এগিয়ে এসেছে এ শহরের স্থপতিদেরই এক সংগঠন। তাদের উদ্যোগে সেজে উঠছে শহরের কোণে কোণে অবহেলায় পড়ে থাকা গুরুত্বপূর্ণ ফিডার বক্স।
শুরুটা হয়েছে গড়িয়াহাট ফায়ার স্টেশনের কাছে হিন্দুস্তান পার্ক থেকে। ওই সংস্থা সূত্রের খবর, আগামী জানুয়ারির মধ্যে শহরের উত্তর থেকে দক্ষিণে আপাতত পঞ্চাশটি ফিডার বক্স রং করা হবে। সেই তালিকায় থাকছে উত্তরের কুড়িটি এবং দক্ষিণের তিরিশটি। যার মধ্যে দক্ষিণের গড়িয়াহাট, হিন্দুস্তান পার্ক, পূর্ণ দাস রোডেই বারো-তেরোটি ফিডার বক্স রং করা হবে। উত্তরে বেথুন কলেজ, রাজাবাজার সায়েন্স কলেজ, রবীন্দ্র কানন, হাতিবাগান মার্কেট, শোভাবাজার মেট্রো স্টেশন, মার্বেল প্যালেস, দেশবন্ধু পার্ক প্রভৃতি এলাকা বেছে নেওয়া হয়েছে।
সংস্থার এক আধিকারিকের কথায়, ‘‘ফরাসি স্থপতি এবং চণ্ডীগড় শহরের ডিজাইনার লে করবুসিয়ার স্থাপত্য জগতের ঈশ্বর। খুব সাধারণ জিনিসকে আকর্ষক করে তুলতে তাঁর জুরি নেই। সেই বৈশিষ্ট্য থেকেই অনুপ্রাণিত হয়ে এই কাজ।’
শহরের সব থেকে অবহেলিত জিনিসের তালিকার একটি, এই ফিডার বক্স। সিনেমা-যাত্রার পোস্টার থেকে মাসাজ বা বন্ধুত্বের আবেদন— সবই থাকে সেই পোস্টারে ঢাকা বক্সগুলিতে। এ বার সেগুলি ঢেকে যাবে বিভিন্ন রঙের কোলাজে নানা নকসায়। সংস্থার স্থপতিরাই তৈরি করছেন সেই সব নকসা। ওই সংস্থার তরফে অবিন চৌধুরী বলেন, ‘‘স্কুল ও পার্কের সামনের বক্সগুলি রং করায় জোর দেওয়া হচ্ছে। যাতে ছোটরাও শেখে, কী ভাবে জিনিসকে সুন্দর করা যায়। এ ভাবেই শহরবাসীকে সচেতন করার প্রয়াস।’’
এ কাজের জন্য ব্যবহার হচ্ছে দরজা-জানলার তেল রং। প্রতি ফিডার বক্সের জন্য লাগছে তিন লিটার রং, যার খরচ দেড় হাজার টাকা। শিল্পী প্রভাত জেনার তুলিতে সলিড রঙের ব্যবহারে ফুটে উঠছে পটচিত্র থেকে সহজপাঠ। পটচিত্রের নকসায় একটু অদল-বদল আনা হবে, এমনকী সহজপাঠের সাদা-কালো ছবি রঙিন হয়ে ধরা দেবে পথচারীর চোখে। একটি বক্স রং করতে লাগছে এক দিন। রং ও শিল্পীর খরচ মিলিয়ে ফিডার বক্স প্রতি ২৩০০ টাকা খরচ হচ্ছে। নিজেদের খরচেই এ কাজ করছে সংস্থা। কম খরচে দ্রুত কাজ করতে সলিড রং ব্যবহার হচ্ছে।
অবিনবাবুর কথায়, ‘‘সিইএসসি-র অনুমোদন নিয়ে কাজ হচ্ছে।
তাদের অনুরোধ ছিল, প্রতিটি বক্সে যে কোড থাকে, সেটা যাতে কোনও ভাবে ঢাকা না পড়ে। আমরা সেটা রেখেই কাজ করছি। পরীক্ষামূলক ভাবে একটি বক্স রং করে এক মাস দেখা হয়েছে, কোনও পোস্টার পড়েনি সেখানে।’’
সংস্থা সূত্রের খবর, ইতিমধ্যেই কয়েক জন নাগরিক এগিয়ে আসছেন, তাঁদের এলাকার বক্স রং করার আবেদন নিয়ে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy