Advertisement
০৩ নভেম্বর ২০২৪
State news

শিশুদের দেখেও যৌন উত্তেজনা! কী বলছেন মনোবিদরা

বৃহস্পতিবার স্কুল শেষে বাড়ি ফিরলে তার মা ফ্রকে রক্তের দাগ দেখতে পান। তার পরই জানা যায় স্কুলের এক শিক্ষকের ‘যৌন নির্যাতন’-এর শিকার সে।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০১ ডিসেম্বর ২০১৭ ১৩:৩১
Share: Save:

বয়স মাত্র চার বছর। দক্ষিণ কলকাতার একটি নামী ইংরাজি মাধ্যম স্কুলের ওই ছাত্রী এখন শিরোনামে।

বৃহস্পতিবার স্কুল শেষে বাড়ি ফিরলে তার মা ফ্রকে রক্তের দাগ দেখতে পান। তার পরই জানা যায় স্কুলের এক শিক্ষকের ‘যৌন নির্যাতন’-এর শিকার সে।

কেন এমন ঘটল? ওই শিক্ষক কি মানসিক বিকারগ্রস্ত? কেন করলেন তিনি এ রকম? কী ভাবে রোখা সম্ভব? উত্তর খুঁজলেন মনোবিদ, মনোরোগ চিকিত্সকরা।

আরও পড়ুন:
শহরের নামী স্কুলে চার বছরের ছাত্রীকে ‘যৌন নির্যাতন’, গ্রেফতার শিক্ষক
ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা স্কুলের, ক্ষোভে উত্তাল অভিভাবকরা

হিরণ্ময় সাহা, মনোরোগ চিকিত্সক এবং জুভেনাইল ওয়েলফেয়ার বোর্ডের প্রাক্তন চেয়ারম্যান

শিশুদের দেখে যৌন ইচ্ছা হওয়া— এটা এমন এক ধরনের মানসিক বিকৃতি, যা সাধারণ ভাবে নিরাময়যোগ্য নয়। ওই শিক্ষক হয়তো এই ব্যাধিরই শিকার। শিশুদের সুরক্ষিত রাখার একমাত্র উপায় অভিভাবক এবং স্কুলের শিক্ষকদের অনেক বেশি সচেতন থাকা। একই সঙ্গে সচেতন করতে হবে শিশুদেরও। ওই শিক্ষক নিশ্চয় এর আগে অন্য পড়ুয়াদের প্রতিও অস্বাভাবিক আচরণ করেছেন। অন্যান্য শিক্ষকেরা যদি সচেতন থাকতেন, তা হলে তাঁরা আগেই বুঝতেন তাঁর কোনও সমস্যা রয়েছে। তা হলে হয়তো এই দিনটা দেখতে হত না। পাশাপাশি শিশুদের যৌন হেনস্থার শাস্তিও আরও কঠিন হওয়া দরকার। বর্তমান আইনে সর্বোচ্চ ১০ বছর জেল হতে পারে। শাস্তি আরও কঠিন হলে ভয় বাড়বে। এই ধরনের আচরণ কিছুটা হলেও কমানো সম্ভব।

অনুত্তমা বন্দ্যোপাধ্যায়, মনোবিদ

এটা এক ধরনের যৌন বিকৃতি। এখন নানা ওয়ার্কশপ হয়। মেয়েদের শেখানো হয় কী ভাবে তাঁরা নিজেদের সুরক্ষিত রাখতে পারবেন। এই সমস্ত যৌন হেনস্থা সম্পর্কে মেয়েদের এবং তাঁদের অভিভাবকদের সচেতন করা হয়। কিন্তু কখনও কি পুরুষদের জন্য এই ধরনের ওয়ার্কশপ করা হয়? তাঁদের কি বোঝানোর চেষ্টা করা হয় যে মেয়েদের শরীর শুধুমাত্র যৌনসুখ অনুভব করার বস্তু নয়? একজন পুরুষ কী ভাবে তাঁর যৌন ইচ্ছার উপর নিয়ন্ত্রণ রাখবেন, তা কি কেউ বোঝানোর চেষ্টা করেন? মেয়েদের সচেতন করার পাশাপাশি এটাও সমান জরুরি। আমাদের সমাজে কিন্তু তা করা হয় না। আর এই জন্যই এই ধরনের ঘটনা কমানোও সম্ভব হচ্ছে না।

তা ছাড়া, শুধুমাত্র পড়াতে পারলেই কেউ ভাল শিক্ষক হন না। তাঁর সাইকোলজিটাও স্কুল কর্তৃপক্ষের বুঝে নেওয়া দরকার। ওই স্কুলে যদি শিক্ষক-শিক্ষিকাদের সাইকোলজি টেস্ট করিয়ে নিয়োগ করা হত, তা হলে হয়তো ওই শিক্ষকের নিয়োগটাই হত না। আর এমন দিনও আসত না।

শ্রীময়ী তরফদার, মনোবিদ

ভয়ঙ্কর ঘটনা। শিশুদের উপরে যৌন নির্যাতন করাটা অনেক বেশি সহজ এবং অনেকাংশে নিরাপদও। কারণ বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই তারা এতটাই আতঙ্কে থাকে যে পুরোটা চেপে যায়। অনেকে আবার এতটাই ছোট হয় যে তাদের সঙ্গে ঠিক কী হয়েছে সেটাও বুঝে উঠতে পারে না। তাই হয়তো তাদের উপরে নির্যাতনটাও তুলনামূলক বেশি।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE