লন্ডভন্ড: এই দলীয় কার্যালয়েই ভাঙচুর চালানো হয় বলে অভিযোগ উঠেছে। সোমবার। নিজস্ব চিত্র
দু’টি ক্লাবের মধ্যে গোলমালকে কেন্দ্র করে রবিবার রাতে উত্তপ্ত হয়ে উঠল মানিকতলা থানার বেঙ্গল কেমিক্যাল এলাকা। পুলিশ জানিয়েছে, সংঘর্ষে দু’পক্ষেরই বেশ কয়েক জন আহত হয়েছেন। রড, কাচের বোতল দিয়ে একে অন্যের উপরে হামলা চালিয়েছে বলে অভিযোগ করেছে দু’পক্ষই। ঘটনার জেরে সোমবার সকালেও বেঙ্গল কেমিক্যাল এলাকার পরিবেশ থমথমে ছিল। এলাকায় পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। দুই ক্লাবের সদস্যেরাই জানিয়েছেন ,তাঁরা তৃণমূলের সমর্থক।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ঘটনার সূত্রপাত ভোটের দিন অর্থাৎ রবিবার সকাল আটটা নাগাদ। স্থানীয় স্বর্ণমণি এলাকার কদমতলা স্পোর্টিং ক্লাবের সদস্যেরা জানান, সকালে তাঁরা তাঁদের ক্লাবে ভোটের ক্যাম্প বসিয়েছিলেন। কিন্তু সেখানে স্থানীয় বাসিন্দাদের কয়েক জন ভোটার তালিকায় নিজেদের নাম খুঁজে না পেয়ে পাশের পাড়ায় মানিকতলা মেন রোডের উপরে নিউ জুনিয়র স্পোর্টিং ক্লাবে নাম খুঁজতে যান। কদমতলা স্পোর্টিং ক্লাবের অভিযোগ, নিউ জুনিয়র স্পোর্টিং ক্লাবের সদস্যেরা তাদের পাড়ার ছেলেদের গালিগালাজ করে ও বহিরাগত বলে তাড়িয়ে দেয়। কদমতলার তরফে বিশ্বজিৎ দাস বলেন, ‘‘পাড়ার ওই ছেলেরা মোটেই বহিরাগত নয়। এলাকায় প্রোমোটিং চলায় ওই যুবকেরা এখন অন্য জায়গায় গিয়ে থাকছেন। ওঁরা স্থানীয় ছেলে।’’
কদমতলা স্পোর্টিং ক্লাবের সদস্যদের আরও অভিযোগ যে হঠাৎ রাত ন’টা নাগাদ বোতল, লাঠি, রড নিয়ে আক্রমণ চালায় নিউ জুনিয়র ক্লাবের ছেলেরা। রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকা স্থানীয় যুবকদের ইট, বোতল, রড দিয়ে বেধড়ক পেটায়। ক্লাবেও ভাঙচুর চালানো। চেয়ার টেবিল ভেঙে ফেলা হয়। তৃণমূলের দলীয় কার্যালয়েও ভাঙচুর চালানো হয় বলে অভিযোগ। অভিজিৎ দাস নামে আহত এক যুবকের মা কৃষ্ণা দাস বলেন, ‘‘আমার ছেলেকে লোহার রড দিয়ে মারতে মারতে প্রায় মেরেই ফেলত। ওর মাথা ফেটে গলগল করে রক্ত পড়ছিল। পাড়ার ছেলেরা ওকে দ্রুত হাসপাতালে না নিয়ে গেলে ছেলেটা বাঁচতই না।’’
অন্য দিকে নিউ জুনিয়র স্পোর্টিং ক্লাবের সদস্যদের পাল্টা অভিযোগ, তাঁদের উপরেই প্রথমে আক্রমণ চালায় কদমতলা স্পোর্টিং ক্লাবের সদস্যেরা। ওই ক্লাবের এক সদস্য বলেন, ‘‘যে ছেলেদের ওঁরা পাঠিয়েছিলেন আমাদের কাছে আমাদের ভোটার লিস্টেও ওদের নাম ছিল না। তা হলে ওদের কী ভাবে ভোটার স্লিপ দেব? তাই ওদের ফিরিয়ে দিই।’’ নিউ জুনিয়রের তরফে মুন্না সাউ নামে এক যুবক বলেন, ‘‘ওরা রাত সাড়ে আটটা নাগাদ হঠাৎ পনেরো-বিশ জন ছেলের একটি দল আমাদের পাড়ায় ঢুকে আমাদের ক্লাব তছনছ করে ভাঙচুর চালায়। বাড়িতে ঢুকে ছেলেদের মারে। মেয়েদের গায়ে হাত তোলে। আমরা মানিকতলা পুলিশকে খবর দিই। আমাদের আকাশ সিংহ নামে এক যুবক গুরুতর জখম হয়েছেন। ওঁর মাথায় গুরুতর চোট লেগেছে। আমরা ওদের পাড়ায় যাইনি।’’
সোমবার সকালে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায় দু’টি ক্লাবই তছনছ অবস্থায় রয়েছে। দুই ক্লাবের মধ্যে আগে কোনও রেষারেষি বা গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব ছিল না বলেই ক্লাব সদস্যদের দাবি। এলাকার বিধায়ক সাধন পাণ্ডে বলেন, ‘‘ ভোটের সময়ে আমার এলাকায় কোনও গন্ডগোল হয়নি। গতকাল রাতে শুনেছি দুই ক্লাবের মধ্যে মারামারি হয়। আমি পুলিশকে বলেছি কড়া পদক্ষেপ করতে।’’
মানিকতলা থানার এক পদস্থ কর্তা বলেন, ‘‘এখনও পর্যন্ত এই ঘটনায় তিন জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। দুই পক্ষকেই জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। ঘটনার তদন্ত চলছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy