চলছে দমকলের লড়াই। সোমবার রাতে। —নিজস্ব চিত্র।
কয়েক মিনিট আগেই হাজরা মোড়ের বসুশ্রী সিনেমায় ডাইনোসরের ভয়ে মানুষের প্রাণপণ দৌড় দেখছিলেন দর্শকেরা। ‘জুরাসিক ওয়ার্ল্ড’ সিনেমা শেষ হতেই প্রাণপণে দৌড় লাগালেন সেই দর্শকেরাই। তবে ডাইনোসর নয়, আগুনের ভয়ে! যদিও শেষ পর্যন্ত হতাহত হননি কেউ।
সোমবার ঘড়িতে তখন রাত সওয়া আটটা। হাজরা মোড়ের বসুশ্রীর চারপাশ যেন এক লহমায় ফিরে গিয়েছিল ১৯৯৭ সালের দিল্লির গ্রিন পার্কে! কেন?
এ পর্যন্ত দেশে সিনেমা হলে যতগুলি অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে তার মধ্যে দিল্লির উপহার-কাণ্ড এগিয়ে থাকবে। ১৯৯৭ সালের ১৩ জুন বিকেলে ‘বর্ডার’ সিনেমা চলার সময়েই আগুন লেগেছিল ‘উপহার’-এ। ৫৯ জন মারা যাওয়া ছাড়াও শতাধিক লোক পদপিষ্ট হয়ে জখম হয়েছিলেন। পুলিশ সূত্রের খবর, এ দিন বসুশ্রীতে জনা সত্তর দর্শক ছিলেন। পুরো হলের নিরিখে সংখ্যাটা এমন কিছু বেশি নয়। তার ফলে দর্শকদের বার করে আনতে বড় ধরনের অসুবিধা হয়নি।
খাস কলকাতায় সিনেমা হলে এমন আগুন লাগার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে হাজির হন কলকাতার মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘‘আমি কাছেই ছিলাম। খবর পেয়েই চলে আসি।’’
কিন্তু আগুন লেগেছিল কোথায়?
দমকল জানায়, ঠিক সিনেমা হলে আগুন লাগেনি। বসুশ্রী সিনেমা হলের উপরেই তিনতলায় ইস্ট ইন্ডিয়া ফার্মাসিউটিক্যালস নামে একটি সংস্থা রয়েছে। তাদের লাইব্রেরিতে আগুন লেগেছিল। খবর পেয়ে দমকলের পাঁচটি ইঞ্জিন ঘটনাস্থলে যায়। কিছু ক্ষণের মধ্যেই আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। প্রাথমিক ভাবে দমকলের অনুমান, শর্ট সার্কিট থেকেই আগুন লেগেছিল।
এ দিন ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, আগুন নিভেছে। কিন্তু আতঙ্কটা যেন কাটেনি। বসুশ্রী লাগোয়া দোকানপাট সবই বন্ধ। পসরা গুটিয়ে নিয়েছেন রাস্তার হকারেরাও। এলাকায় রয়েছে কালীঘাট থানার পুলিশও। ওই এলাকার এক হকার বলেন, ‘‘আর পাঁচ়টা দিনের মতোই এলাকা জমজমাট ছিল। চলছিল বিকিকিনিও। হঠাৎই লোকজন হল থেকে দৌড়ে বেরিয়ে আসতে থাকেন। সঙ্গে ‘আগুন-আগুন’ বলে চিৎকার।’’ তা শুনেই হকচকিয়ে যান এলাকার দোকানদার ও হকারেরা। আগুন-আতঙ্কে তড়িঘড়ি দোকান ও পসরা গুটিয়ে নেন। আগুনের পরে নাইট শো বাতিল করে দেন বসুশ্রী কর্তৃপক্ষ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy