সপরিবার: বৃন্দাবন মাতৃমন্দিরের দুর্গা প্রতিমা। নিজস্ব চিত্র
শ্রীভূমি ও দমদম পার্ক— দু’টি জায়গার পুজো প্রতি বছর কলকাতার দর্শকদের গন্তব্য-তালিকার উপরের দিকেই থাকে। ফলে পুলিশেরও নজর থাকে ওই দুই এলাকার পুজোর ভিড়ের উপরে। কিন্তু এ বার যেন অন্য কিছুর পূর্বাভাস দিচ্ছে বাগুইআটি, কেষ্টপুর, নাগেরবাজার। কারণ ওই সব অঞ্চলের পুজোয় এ বার ঢুকে প়ড়েছেন ভবতোষ সুতার, পূর্ণেন্দু দে, প্রশান্ত পালদের মত শিল্পীরা। যাঁদের নামেই দর্শকেরা প্রতি বছর ছোটেন উত্তর থেকে দক্ষিণে।
‘অর্জুনপুর আমরা সবাই’ ইতিমধ্যেই প্রচারের আলোয় আসতে শুরু করেছে ভবতোষ সুতারের হাত ধরে। এ বার সেখানে পুজোর থিম ‘নাদ’। শঙ্খের আদলে তৈরি মণ্ডপ প্রসঙ্গে ভবতোষ বলেন, ‘‘নাদ হচ্ছে সপ্তব্রহ্ম। সৃষ্টির আদি থেকে শুভ বার্তা দেওয়ার ক্ষেত্রে শঙ্খ ছিল অপরিহার্য।’’ তাঁর আরও সংযোজন, ‘‘নতুন পুজো তোলাই হল আসল কৃতিত্ব।’’ উদ্যোক্তারা জানান, এক কিলোমিটার দূর থেকে শঙ্খের আওয়াজ শোনা যাবে। পুজো ভালো ভিড় টানবে আশা করে উদ্যোক্তারা অর্জুনপুরের রাস্তা সারাইয়ের জন্য বিধাননগর পুরনিগমের কাছে আবেদন জানিয়েছেন।
বহু বছর আগে নিজের পাড়ার পুজো দর্পনারায়ণ ঠাকুর স্ট্রিটকে চিনিয়েছিলেন শিল্পী প্রশান্ত পাল। এ বার তাঁকে নিয়ে চমক দিচ্ছে কেষ্টপুরের ‘মাস্টারদা স্মৃতি সঙ্ঘ’। অর্জুনপুরে আকর্ষণ যদি ভবতোষ হন, তবে কেষ্টপুরে তারকা অবশ্যই প্রশান্ত। প্রশান্তর কথায়, ‘‘স্বপ্নময় পরিবেশে মাঝিদের দুর্গাপুজোকে তুলে ধরা হয়েছে। মাস্টারদা স্মৃতি সঙ্ঘকে এ বার সবাই চিনবে।’’
নাগেরবাজার সর্বজনীনের এ বারের থিম ‘ভগবানের বিষয়-আশয়’। বাঙালির সেরা উৎসবকে কেরলের সংস্কৃতির কোলাজে মেলে ধরেছেন শিল্পী সৌরজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর কথায়, ‘‘এমন কাজ কলকাতার মানুষ আগে দেখেননি, এ টুকু বলতে পারি।’’
প্রফুল্লকানন পশ্চিম অধিবাসীবৃন্দের এ বছরের থিমের নামও ‘প্রফুল্লকানন’। শিল্পীর কথায়, ‘‘প্রফুল্ল মানে আনন্দ। মণ্ডপচত্বর বাগানের আদলে সাজিয়ে পুজোকে ঘিরে মানুষের যে আনন্দ হয়, তা ফুটিয়ে তোলা হয়েছে।’’
উদ্যোক্তাদের দাবি, এই সব পুজো দেখতে এ বার দর্শক ভি়ড় পৌঁছবে বাগুইআটি, কেষ্টপুর, নাগেরবাজারে। তাই ট্র্যাফিক নিয়ন্ত্রণ নিয়ে পুলিশকেও পরীক্ষা দিতে হতে পারে। বিধাননগর পুলিশ কমিশনারেটের এক কর্তা অবশ্য বলছেন, ‘‘এখানে পুজো কোথায়!’’ দমদমের পুজো নিয়ে ব্যারাকপুর কমিশনারেটের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘এখানে দুর্গাপুজো কালীপুজোর মতো হয় না!’’
গত বছর প্রফুল্লকানন শিল্পী পূর্ণেন্দু দে-র হাত ধরে শারদসম্মান জেতার পরেই বাগুইআটি, কেষ্টপুরে ডাক পড়েছে ভবতোষ, প্রশান্তের। পূর্ণেন্দুর কথায়, ‘‘গত বছরের সেরা এ বার কী করছে, তা নিয়ে কৌতুহল থাকে।’’
এক উদ্যোক্তার কথায়, ‘‘দর্শকরা একসঙ্গে অনেক নামী পুজো দেখতে চান। বাগুইআটি ও নাগেরবাজারের পুজো এ বার সেই সুযোগ করে দেবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy