Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪

বাগড়ির বর্জ্যে বিপদ, প্রয়োজন সতর্কতা

বাগড়ি মাকের্টের পোড়া বর্জ্য সরানোর কাজ শুরু করল কলকাতা পুরসভা। কিন্তু সেই বর্জ্যের একটা বড় অংশই  পরিবেশ ও স্বাস্থ্যের পক্ষে বিপজ্জনক বলে মনে করছেন পরিবেশবিদ ও চিকিৎসকেরা।

ইতিউতি: বাগড়ি মার্কেটে পড়ে রয়েছে পোড়া বর্জ্য। নিজস্ব চিত্র

ইতিউতি: বাগড়ি মার্কেটে পড়ে রয়েছে পোড়া বর্জ্য। নিজস্ব চিত্র

শুভাশিস ঘটক
শেষ আপডেট: ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০০:৫০
Share: Save:

বাগড়ি মাকের্টের পোড়া বর্জ্য সরানোর কাজ শুরু করল কলকাতা পুরসভা। কিন্তু সেই বর্জ্যের একটা বড় অংশই পরিবেশ ও স্বাস্থ্যের পক্ষে বিপজ্জনক বলে মনে করছেন পরিবেশবিদ ও চিকিৎসকেরা। তাই সেগুলি সরানোর ক্ষেত্রে বিজ্ঞানসম্মত ভাবে পুরসভাকে যে বিশেষ ব্যবস্থা নিতে হবে, তা-ও মনে করাচ্ছেন তাঁরা। কারণ, ওই বাজারে প্রচুর ওষুধ ও রাসায়নিক সামগ্রীর পোড়া বর্জ্য রয়েছে।

পরিবেশবিদ ও চিকিৎসকদের একাংশের বক্তব্য, বাগড়ি মার্কেটের আগুন হয়তো নিভেছে। কিন্তু পোড়া অংশের তাপমাত্রা এখনও স্বাভাবিক হয়নি। ধোঁয়া উঠছে বিভিন্ন জায়গা থেকে। তাই ওই সমস্ত বর্জ্য এখনও খুব বিপজ্জনক অবস্থায় রয়েছে। যা থেকে ত্বক ও ফুসফুসের মারাত্মক ক্ষতি হতে পারে বলে সতর্ক করছেন তাঁরা। চিকিৎসকদের একাংশ জানাচ্ছেন, ওই সব রাসায়নিক ও ওষুধের বর্জ্য থেকে ফুসফুসে ‘নিউমোনাইটিস’ নামে এক ধরনের সংক্রমণ হতে পারে। মেডিসিনের চিকিৎসক অরিন্দম বিশ্বাসের কথায়, ‘‘শুধু ওই বর্জ্য বিজ্ঞানসম্মত ভাবে নষ্ট করাই যথেষ্ট নয়। ওই বর্জ্য যাঁরা সংগ্রহ করবেন, তাঁদেরও নানা প্রতিরোধক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। না হলে নানা রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। বর্জ্য সংগ্রহ করার সময়ে দেহের কোনও অংশই যেন খোলা না থাকে। সারা শরীরেই আচ্ছাদনের ব্যবস্থা করতে হবে।’’

এক পরিবেশবিদ জানান, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (হু) নির্দেশিকা অনুযায়ী, কোনও ওষুধ সংস্থা যদি মেয়াদ-উত্তীর্ণ ওষুধ ফেরত নিতে আসে, তা হলে তাদের বিশেষ গাড়ি ব্যবহার করতে হয়। কারণ, ওই ওষুধের নানা বিষক্রিয়া রয়েছে। তা কোনও ভাবে পরিবেশে ছড়িয়ে পড়লে মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারেন। পরিবেশবিদদের কথায়, ওই ধরনের বর্জ্য মূলত জনমানবহীন এলাকায় মাটির তলায় পুঁতে ফেলার নিয়ম রয়েছে। সেটাও করতে হয় নির্দিষ্ট কিছু বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি অনুসরণ করে। না হলে ওই সব বর্জ্য থেকে এলাকায় দূষণ ছড়ানোর আশঙ্কা থাকে। পরিবেশকর্মী সুভাষ দত্ত বলেন, ‘‘শুধু ওষুধ নয়। আগুনে পোড়ার পরে ওষুধের নানা মোড়ক আরও বিষাক্ত বর্জ্যে পরিণত হয়েছে। এখানে তো আরও নানা রাসায়নিকও পুড়েছে। সে ক্ষেত্রে ওই সব বর্জ্য সংগ্রহ ও নষ্ট করার বিশেষ পদ্ধতি রয়েছে। জনমানবহীন এলাকায় ন্যূনতম ১০ ফুট মাটি খুঁড়ে প্লাস্টিক বিছিয়ে তার পরে ওই ধরনের বর্জ্য পুঁতে ফেলতে হয়। পুরো প্রক্রিয়াটা রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের তত্ত্বাবধানে করাটাই বাঞ্ছনীয়।’’

কলকাতা পুরসভার জঞ্জাল অপসারণ দফতরের মেয়র পারিষদ দেবব্রত মজুমদার এ বিষয়ে বলেন, ‘‘পুরসভা সমস্ত নিয়ম মেনেই কাজ করছে। বিভিন্ন বর্জ্যের বৈশিষ্ট্য দেখেই সেগুলি নির্দিষ্ট জায়গায় ফেলা হবে।’’

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE