Advertisement
০৬ নভেম্বর ২০২৪

আদালতের নির্দেশে বেলাইনের অটোকে লাইনে আনছে রাজ্য

রুটের বাইরে চলাচল করা অটোরিকশাকে শৃঙ্খলায় আনতে তাদেরও নির্দিষ্ট রুটে বাঁধবে সরকার। আদালতের একটি নির্দিষ্ট রায়ের ভিত্তিতে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

অত্রি মিত্র
শেষ আপডেট: ২৪ জানুয়ারি ২০১৭ ০১:১৭
Share: Save:

রুটের বাইরে চলাচল করা অটোরিকশাকে শৃঙ্খলায় আনতে তাদেরও নির্দিষ্ট রুটে বাঁধবে সরকার। আদালতের একটি নির্দিষ্ট রায়ের ভিত্তিতে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এ জন্য কলকাতার ১২৫টি রুটে সর্বোচ্চ অটোর সংখ্যায় প্রয়োজনীয় সংশোধন করতে চলেছে রাজ্য। পরিবহণ দফতর সূত্রের খবর, আগামী সপ্তাহের মধ্যেই এই সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হবে।

রাজ্য পরিবহণ দফতরের কর্তারা জানাচ্ছেন, এক দিকে যেমন ওই অটোগুলি অবৈধ, আবার অন্য দিকে সেগুলি বৈধও। কী ভাবে তা সম্ভব?

পরিবহণ দফতরের এক কর্তা জানান, এ রাজ্যে যখন অটোরিকশা চালু হয়েছিল, তখন তা চলত ট্যাক্সির মতোই ভাড়া-গাড়ি হিসেবে। পরে তা বদলে হয় রুট-ভিত্তিক গাড়ি। ২০০৩ সালে কলকাতায় রাজ্য পরিবহণ দফতর থেকে বিজ্ঞপ্তি দিয়ে অটোর ১২৫টি রুট তৈরি করে দেওয়া হয়। ওই রুটে সর্বোচ্চ কত অটো চলবে, তা-ও নির্ধারণ করে দেয় সরকার। ওই সময়ে বেশ কিছু অটোর মালিক তাঁদের গাড়িকে রুট-ভিত্তিক চালাতে আপত্তি জানায়। কোনও রুটে ওই সব অটো নথিভুক্তও হয়নি। কিন্তু সংশ্লিষ্ট অটোগুলির সরকারি রেজিস্ট্রেশন থেকে শুরু করে সব রকম নথিপত্রই ছিল।

২০০৯ সালে কলকাতা হাইকোর্ট পেট্রোলচালিত অটো পরিবর্তন করে এলপিজি গ্যাসে চালানোর নির্দেশ দেয়। সেই মতো অটোকে গ্যাস-চালিত করার কাজ শুরু হয়। কিন্তু যে সব অটোর রুট নির্দিষ্ট করা ছিল না, সেগুলি গ্যাসে পরিবর্তন করা হলেও তাদের রেজিস্ট্রেশন করতে পারেনি সরকার।

ওই পরিবহণ কর্তা বলেন, ‘‘কোন রুটে কত অটো চলবে, কী কী গাড়ি আছে— তা আগে থেকেই নির্দিষ্ট। আর নতুন নিয়ম অনুযায়ী, রুটে চলা অটোই একমাত্র রেজিস্ট্রেশন পাবে। এই নিয়মের আওতায় ওই সব অটো গ্যাসে পরিবর্তিত হলেও রেজিস্ট্রেশন করা যায়নি। কারণ, তার জন্য আগে সেগুলিকে রুটভুক্ত করতে হবে। এবং তা যেহেতু পূর্বনির্দিষ্ট, তাই রুটে সর্বোচ্চ গাড়ির সংখ্যা না পাল্টালে নতুন করে কোনও অটোর রেজিস্ট্রেশন করা সম্ভব নয়।’’ রেজিস্ট্রেশন না থাকার কারণে ওই সব অটো গ্যাসে পরিবর্তিত হওয়ার পর থেকেই অবৈধ হয়ে যায়। ওই কর্তার কথায়, ‘‘যদিও আইনি ভাবে ওই সব অটো মোটেই অবৈধ নয়।’’

এর পরেই কলকাতার ১৬টি রুটের এমন অটো-মালিকেরা বিষয়টি নিয়ে আদালতের দ্বারস্থ হন। সবিস্তার শুনানির পরে ওই সব অটোকে রুটভুক্ত করে নেওয়ার নির্দেশ দেয় হাইকোর্ট।

আদালতের নির্দেশ পাওয়ার পরেই কলকাতার ১২৫টি রুটে সর্বোচ্চ অটোর সংখ্যা বাড়ানোর এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে পরিবহণ দফতর। ওই কর্তা বলেন, ‘‘সব মিলিয়ে কলকাতা শহরে প্রায় হাজারখানেক ‘অবৈধ’ অটো রয়েছে। রুটে সর্বোচ্চ গাড়ির সংখ্যা হেরফের করে সেগুলিকেই বৈধ করার কাজ শুরু হচ্ছে।’’ পরিবহণ কর্তাদের দাবি, কলকাতার রুটগুলিতে সর্বোচ্চ গাড়ির সংখ্যা বাড়লে বেআইনি অটোর ঝামেলা অনেকটাই কমে যাবে। সম্প্রতি কলকাতা ও লাগোয়া জেলাগুলি নিয়ে দফতরের অলিন্দে অভিন্ন অফিস এবং তার নেতৃত্বে অটোর রুট ভাগাভাগি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে পরিবহণ দফতর। তার আগে হিসেবের বাইরে থাকা অটোগুলি বিভিন্ন রুটের অধীনে নথিভুক্ত করার কাজ হয়ে গেলে অটোকে শৃঙ্খলায় বাঁধতে অনেকটাই সুবিধে হবে বলে দাবি রাজ্য পরিবহণ দফতরের কর্তাদের।

অন্য বিষয়গুলি:

Auto High Court Route
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE