তদন্ত পুরো শেষ না হওয়া পর্যন্ত আবেশ দাশগুপ্তের মৃত্যু নিয়ে পুলিশের ‘দুর্ঘটনার তত্ত্ব’ মানতে নারাজ তার পরিবার।
শুক্রবার দুপুরে কালীঘাটে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়ি গিয়ে তাঁর সঙ্গে কথা বলেন আবেশের মা রিমঝিম দাশগুপ্ত, দিদিমা কৃষ্ণা পাল-সহ পরিবারের কয়েক জন। রিমঝিমদেবী বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী আশ্বস্ত করেছেন সত্যটা বেরিয়ে আসবেই।’’ কৃষ্ণা পালের দাবি, ‘‘কোনও প্রভাবশালীই কিছু করতে পারবে না বলেও এ দিন দিদি (মুখ্যমন্ত্রী) আশ্বস্ত করেছেন। তা ছাড়া উনি নিজে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। ওঁর উপরে আমাদের আস্থা রাখতেই হবে।’’
এর পর এ দিন বিকেলে সানি পার্কের ঘটনার তদন্ত নিয়ে কথা বলতে রাজি হননি লালবাজারের কর্তারা। গোয়েন্দা প্রধান বিশাল গর্গের দাবি, ‘‘আমরা একবারও তদন্ত শেষের কথা ঘোষণা করিনি।’’ রিমঝিমদেবীরও দাবি, তদন্ত এখনও পুরো শেষ হয়নি। ময়নাতদন্ত ও ভিসেরার রিপোর্ট পুলিশ এখনও হাতে পায়নি।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় রিমঝিমদেবী এবং আবেশের মামা হৃদেশ ঠক্করকে লালবাজারে ডেকে দুর্ঘটনার সিসিটিভি ফুটেজ দেখায় পুলিশ। লালবাজার থেকে বাড়ি ফিরে রিমঝিমদেবী আবার দাবি করেন, ২৩ জুলাই সন্ধ্যায় খুনই করা হয়েছে তাঁর ছেলেকে। তাঁর যুক্তি, প্রথমত ফুটেজে যে ছবি দেখা গিয়েছে, সেটা যে আবেশের, তা পরিষ্কার বোঝা যাচ্ছে না। ফুটেজের মাঝখানে প্রায় ২০ সেকেন্ডের কোনও ছবি পুলিশের কাছে নেই। তা হলে পুলিশ কী করে নিশ্চিত হচ্ছে যে আবেশ দুর্ঘটনাতেই মারা গিয়েছে? আবেশের মায়ের এই দাবি প্রসঙ্গেও লালবাজারের কর্তারা এ দিন কোনও কথা বলতে চাননি।
বৃহস্পতিবার লালবাজার থেকে ফিরে হতাশ রিমঝিমদেবী রাতেই ঠিক করেন শুক্রবার সকালে তিনি মুখ্যমন্ত্রীর কাছে যাবেন। সেই মতো সকাল ৮ টা ৫ নাগাদ নিজের মা এবং আরও কয়েক জনকে নিয়ে কালীঘাটে মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ির পাশে মিলন সঙ্ঘ ক্লাবে পৌঁছন। সেখানে ঘণ্টাখানেক অপেক্ষার পরে সাড়ে ৯টা নাগাদ মোবাইল জমা রেখে মুখ্যমন্ত্রী বা়ড়ি লাগোয়া অফিসে তাঁদের নিয়ে যাওয়া হয়। অফিসে এক ব্যক্তি তাঁদের জানান, মুখ্যমন্ত্রী দেখা করবেন, তবে সময়টা এখনই বলতে পারবেন না। অপেক্ষা করতে হবে। কালীঘাট থানায় অপেক্ষা করতে থাকেন রিমঝিমদেবীরা। পরে মুখ্যমন্ত্রী ডেকে পাঠালে পৌনে ১টা নাগাদ মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে ৬-৭ মিনিট কথা বলেন তাঁরা।
২৩ জুলাই আবেশ ও তার বন্ধুদের মদ বিক্রির অভিযোগে ধৃত চার জনকে এ দিন জামিন দিয়েছে আদালত। শুক্রবার ওই চার জন সুধাংশু দত্ত, সৌম্যজ্যোতি সাহা, রাজেশ সাহা ও মহাদেব পুরকাইতকে আলিপুর আদালতে তোলা হলে বিচারক তাঁদের প্রত্যেককে পাঁচশো টাকার ব্যক্তিগত বন্ডে জামিন দেন। বৃহস্পতিবারেও তাঁদের আদালতে তোলা হয়েছিল। বিচারক তখন ১ দিনের জন্য জেল হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন। তার পরে এ দিন আবার তাঁদের আদালতে হাজির করা হয়। অভিযুক্তদের পক্ষে আইনজীবীরা এ দিনও আদালতকে জানান, আইন অনুযায়ী ২১ বছরের কম বয়সীকে মদ বিক্রি নিষিদ্ধ। কিন্তু ক্রেতাকে দেখে তাঁর বয়স কী ভাবে যাচাই করা যাবে? তাঁদের বক্তব্য, এই ধরনের কম বয়সী ক্রেতাকে বয়স জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি সত্যি বলছেন কিনা তা পরীক্ষা করার উপায়ও নেই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy