ছেলে ‘চুরি’ যাওয়ার পরে ওই দম্পতি। শুক্রবার, পার্ক স্ট্রিটে। নিজস্ব চিত্র
ফুটপাত থেকে শিশু চুরির অভিযোগ উঠল পার্ক স্ট্রিটে। বৃহস্পতিবার শেষ রাতের এই ঘটনায় শুক্রবার রাত পর্যন্ত শিশুটির খোঁজ মেলেনি। পার্ক স্ট্রিট থানা তদন্ত শুরু করলেও কেউ গ্রেফতার হয়নি। পুলিশ সূত্রের খবর, ওই শিশুর মা-বাবাকে দফায় দফায় জিজ্ঞাসাবাদ করার পাশাপাশি ঘটনাস্থলের আশপাশের সিসি ক্যামেরার ফুটেজও দেখা হচ্ছে। তাতে দেখা গিয়েছে, শিশুটিকে ফুটপাত থেকে তুলে হেঁটে যাচ্ছেন এক ব্যক্তি। তবে তিনি কে, তা স্পষ্ট হয়নি।
পুলিশ সূত্রের খবর, শিশুটির বাবার নাম মহম্মদ আফতাব। মায়ের নাম সাকিনা বেগম। ওই দম্পতি আগে মির্জা গালিব স্ট্রিটের ফুটপাতে থাকতেন। গত মে মাসে ছেলে হওয়ার পরে এক আত্মীয়কে ধরে তাঁরা ধাপা এলাকায় একটি বস্তির ঘরে গিয়ে ওঠেন। আফতাবের আয়েই তাঁদের সংসার চলে। আগে রিকশা চালালেও গত কয়েক মাস ধরে অনুষ্ঠান বাড়ি সাফসুতরো করার কাজ করেন আফতাব। সাকিনা পুলিশকে জানিয়েছেন, তাঁরা মির্জা গালিব স্ট্রিটের ফুটপাত ছেড়ে উঠে গেলেও তাঁর মা রশিদা বেগম ওই ফুটপাতেই থাকেন। বুধবার ছেলেকে প্রতিষেধক দেওয়ানোর জন্য এসেছিলেন তাঁরা। রাত হয়ে যাওয়ায় ফুটপাতেই থেকে যান।
শুক্রবার মির্জা গালিব স্ট্রিটের ওই ফুটপাতে গিয়ে দেখা যায়, সাকিনার মা তাঁর কয়েক জন আত্মীয়ের সঙ্গে সেখানে থাকেন। আফতাবের মা কাছেই একটি বাড়িতে ভাড়া থাকেন। সাকিনা বলেন, ‘‘বুধবার রাত হয়ে যাওয়ায় স্বামী বলে, রাতটা ফুটপাতেই কাটিয়ে দিই। পরের দিন সকালে চলে যাব। কিন্তু ওই রাতেই আমার ছেলে চুরি হয়ে যায়।’’ আফতাবের দাবি, ‘‘বুধবার রাত তিনটে নাগাদ আমার ঘুম ভেঙে যায়। কয়েক দিন আগে পুলিশের টহলদারি গাড়ি আমার একটি সাউন্ড বক্স নিয়ে গিয়েছিল। ওই রাতে ঘুম থেকে উঠে সেই বক্স আনতে যাই। ততক্ষণে সাকিনা উঠে গিয়েছিল। ও ছেলেকে দুধ খাওয়াচ্ছিল। কিছু ক্ষণ পরে ফিরে দেখি, সাকিনা ঘুমোচ্ছে। ছেলে নেই!’’ সাকিনা জানিয়েছেন, স্বামীর ডাকেই ঘুম ভাঙে তাঁর। ছেলেকে না দেখে আশপাশে খোঁজাখুঁজি করেন তাঁরা। শেষে বৃহস্পতিবার সকাল ছ’টা নাগাদ থানায় যান।
পুলিশের দাবি, জিজ্ঞাসাবাদে ওই দম্পতির কথায় কিছু অসঙ্গতি মিলেছে। প্রশ্ন উঠেছে, অত রাতে ঘুম থেকে উঠে কেউ সাউন্ড বক্স আনতে যাবেন কেন? কেনই বা নিজের মায়ের কাছে না থেকে ওই রাতে ফুটপাতে থাকলেন দম্পতি? এক পুলিশ আধিকারিক বলেন, ‘‘একটি সিসি ক্যামেরার ফুটেজে এক ব্যক্তিকে দেখা গিয়েছে, যিনি ওই রাতে একটি শিশুকে কোলে নিয়ে হেঁটে আসছেন। কিন্তু ওই ব্যক্তি কে, কার সাহায্যে তিনি এমন করলেন— সে সব খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ওই দম্পতির মধ্যেই কেউ সন্তানকে বিক্রি করে দিয়েছেন কি না, তা তদন্তে বেরোবে।’’
কিন্তু প্রশ্ন, কেউ নিজেই এমন কিছু করে থাকলে তাঁরা কি থানায় যাবেন? উত্তর মেলেনি। আফতাবের অবশ্য অভিযোগ, ‘‘পুলিশ প্রথম থেকে সে ভাবে তদন্ত করতে চায়নি। উল্টে আমাদেরই দোষী প্রমাণ করার চেষ্টা করা হচ্ছে।’’ সাকিনা বলেন, ‘‘পুলিশ দোষীকে খুঁজে বার করুক। আমি আমার বাচ্চা ফেরত চাই।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy