ভাষা দিবস পালন। দেশপ্রিয় পার্কে সরকারি অনুষ্ঠানে দ্বিজেন মুখোপাধ্যায়, অরূপ বিশ্বাস, প্রতুল মুখোপাধ্যায়, দেবাশিস কুমার প্রমুখ।
যখন থাকেন, তখন তিনিই যে সব, সকলেই টের পান পদে পদে। তিনি যে অনুপস্থিত, তা-ও মালুম হল প্রকট ভাবে! মন্ত্রী থেকে শিল্পীদের উপস্থিতি সব দিক দিয়েই খানিকটা জৌলুসহীন হয়ে থাকল কলকাতায় একুশে ফেব্রুয়ারির সরকারি উদযাপন।
বিরোধী-শিবিরে থাকার সময় থেকেই দেশপ্রিয় পার্কে ভাষা দিবস পালন করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মুখ্যমন্ত্রী হয়েও দিনটায় সরকারি তরফে ঘটা করে অনুষ্ঠান চালু হয়। শনিবার নির্ধারিত সময় বিকেল পাঁচটায় অনুষ্ঠানস্থলে দেখা গেল, মুখ্যমন্ত্রী-বিহীন আসরে এক জন মন্ত্রী বা খোদ মেয়রও হাজির হতে পারেননি। আমলামহলে ঠারেঠোরে রসিকতা চলছিল, ম্যাডাম নিজে প্রাণের টানে ঢাকায় একুশের শহিদ-বরণে যাওয়ায় এখানকার অনুষ্ঠানের প্রাণটাই বেরিয়ে গিয়েছে।
শাসক দলের এক নেতা উঁচুস্তরের জনৈক আমলাকে বললেনও, “জিজ্ঞেস করুন, আপনার মন্ত্রীরা কই!” সাধারণত, মমতার বৃত্ত যাঁরা আলোকোজ্জ্বল করে রাখেন, সেই বিনোদন জগতের তারকাদের কাউকেই এ দিন দেখা যায়নি। ভাষা দিবসের অনুষ্ঠানে চিহ্ন নেই কোনও কবি-লেখকেরও। বিশিষ্ট অতিথিদের সোফার বেশিরভাগই ফাঁকা। দর্শকদের মধ্যে অনেকেই স্থানীয় একটি ক্লাবের সদস্য-সদস্যা।
কার্জন পার্কে শহিদ স্মারকে শ্রদ্ধা জানান শঙ্খ ঘোষ, শ্যামল চক্রবর্তী, ক্ষিতি গোস্বামী
প্রমুখ। শনিবার ছবি তুলেছেন দেবাশিস রায় এবং রণজিৎ নন্দী।
বাম জমানায় কার্জন পার্কে একুশের বেদীতে সরকারি তরফে ফুল দেওয়ার রেওয়াজ ছিল। মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায় বক্তৃতায় বলছিলেন, “কার্জন পার্কের থেকে বড় করে অনুষ্ঠান করতেই দেশপ্রিয় পার্কে মুখ্যমন্ত্রীর অনুষ্ঠানের ভাবনা।” জনৈক শিল্পী পরে বলছিলেন, “উপলক্ষটা আসলে অবান্তর। সরকারি সব অনুষ্ঠানই এখন স্রেফ মুখ্যমন্ত্রীর অনুষ্ঠান।” ফলে, তিনি না-থাকায় অতিথি কিংবা মন্ত্রীরা ঢুকেছেন খেয়ালখুশি মতো।
অনুপস্থিতির তালিকায় একটি নামের জন্য খানিকটা অস্বস্তিও তৈরি হয়েছে সরকারি মহলে। আমন্ত্রণপত্রে সবার আগে শিল্পী শুভাপ্রসন্নের নাম লেখা হয়েছিল। প্রিয় ‘শুভাদা’-র নাম সারদা-তদন্তে উঠে আসার পরে গত আড়াই মাস তাঁকে ব্রাত্য করেই রেখেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। প্রকাশ্য মঞ্চে তাঁর নাম পর্যন্ত ভুলে গিয়েছিলেন। একুশের অনুষ্ঠান আয়োজনে শুভাদা-র পুরনো ভূমিকা স্মরণ করে এ বার কিন্তু তাঁকে ডাকা হয়। কিন্তু দেখা গেল, এ বার তিনিই এলেন না। কেন? তথ্য-সংস্কৃতি সচিব অত্রি ভট্টাচার্য বলেন, “সেটা উনিই বলতে পারবে।” এ বিষয়ে জানতে শুভাপ্রসন্নকে ফোন করা হলে, তাঁর মোবাইল ও ল্যান্ডফোন বেজে যায়। এমএমএসেরও জবাব মেলেনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy