বৃহস্পতিবার রাত ৮টা পর্যন্ত কলকাতা পুলিশ নিষিদ্ধ বাজি ফাটানো এবং অভব্য আচরণের অভিযোগে ৩৩ জনকে গ্রেফতার করেছে। এর মধ্যে নিষিদ্ধ বাজি ফাটানোর অভিযোগে গ্রেফতার হয়েছেন সাত জন। অভব্য আচরণের অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে ২৬ জনকে। কালীপুজোয় রাত ৮টা পর্যন্ত কোনও নিষিদ্ধ বাজি বাজেয়াপ্ত করা হয়নি বলেই জানানো হয়েছে কলকাতা পুলিশের তরফে।
কালীপুজো এবং দীপাবলির সময়ে প্রতি বছরই শহর জুড়ে বাড়তি নজরদারি চালায় কলকাতা পুলিশ। কোথাও কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটছে কি না, বা কেউ নিষিদ্ধ বাজি ফাটাচ্ছে কি না— সে দিকে সজাগ দৃষ্টি রাখে পুলিশ। বাজির কারণে হাসপাতালে রোগীদের যাতে কোনও সমস্যা না হয়, তা নিশ্চিত করতে টহলও দেয় তারা। নজরদারি থাকে বিভিন্ন আবাসনগুলির কাছেও। অতীতে বিভিন্ন সময়ে নিষিদ্ধ বাজি ফাটানোর কারণে আবাসনে শিশু ও প্রবীণদের সমস্যায় পড়তে দেখা গিয়েছে। এই ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে নজরদারি চালায় পুলিশ।
এই বছরেও কালীপুজোর আগে থেকেই কলকাতার আনাচে-কানাচে পুলিশি নজরদারি আরও বৃদ্ধি করা হয়েছে। গত ২১ অক্টোবর থেকে ২৯ অক্টোবরের মধ্যে কলকাতা পুলিশ এলাকা থেকে নিষিদ্ধ বাজি-যোগে ৩৫ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাজেয়াপ্ত করা হয় প্রায় চার হাজার কেজি (৩ হাজার ৯৩৪ কেজি) নিষিদ্ধ বাজি।
আরও পড়ুন:
গত মঙ্গলবার ময়দানে বাজি বাজার পরিদর্শনে গিয়েছিলেন কলকাতার পুলিশ কমিশনার মনোজ বর্মা। সে দিনই তিনি জানিয়েছিলেন, কালীপুজো ও দীপাবলিতে নিষিদ্ধ বাজির ‘তাণ্ডব’ বন্ধ করতে পুলিশি পদক্ষেপের কথা। শহরের বিভিন্ন বহুতলের দিকেও পুলিশের নজরের কথা জানিয়েছিলেন তিনি। সতর্ক করে দিয়েছিলেন, কেউ বিধি ভাঙলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তিনি বলেছিলেন, “নিষিদ্ধ বাজি ফাটানো রুখতে শহরের বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চলছে। বাজি বাজেয়াপ্তও করা হয়েছে।” বহুতলগুলিতে শব্দবাজি ফাটানোর অভিযোগ প্রসঙ্গে পুলিশ কমিশনার বলেছিলেন, ‘‘পুলিশ আধিকারিকদের প্রয়োজনীয় নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। নজরদারি চালাবে। আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’
আরও পড়ুন:
শুধু নিষিদ্ধ বাজির উপরেই নয়, মণ্ডপে মণ্ডপে মাইক এবং সাউন্ড বক্সের দিকেও নজর রয়েছে পুলিশের। বৃহস্পতিবার থেকে আগামী রবিবার পর্যন্ত কালীপুজোর মণ্ডপগুলিতে কখন কখন মাইক বা সাউন্ড বক্স ব্যবহার করা যাবে, সে বিষয়ে বিজ্ঞপ্তিও প্রকাশ করেছে কলকাতা পুলিশ। কোন অঞ্চলে কোন সময়ে শব্দের সর্বোচ্চ মাত্রা কত রাখা যাবে, তা-ও স্থির করে দেওয়া হয়েছে পুলিশের তরফে।
দিনের বেলা (সকাল ৬টা থেকে রাত ১০টা) শিল্পাঞ্চলে শব্দের মাত্রা ৭৫ ডেসিবেল যেন না ছাড়ায়। বাজার এলাকায় সর্বোচ্চ ৬৫ ডেসিবেল। বসত এলাকায় ৫৫ ডেসিবেল। শহরের হাসপাতাল সংলগ্ন এলাকাগুলি বরাবরই ‘সায়লেন্স জ়োন’। সেখানে শব্দের মাত্রা যেন ৫০ ডেসিবেল না ছাড়ায়। রাতেও শব্দের মাত্রা বেঁধে দিয়েছে পুলিশ। রাত ১০টা থেকে সকাল ৬টা পর্যন্ত শিল্পাঞ্চল এবং বসত এলাকায় শব্দের সর্বোচ্চ মাত্রা যথাক্রমে ৭০ এবং ৪৫ ডেসিবেল হতে পারে। রাতে বাজার এলাকায় শব্দের মাত্রা যাতে ৫৫ ডেসিবেল না ছা়ড়ায়। সায়লেন্স জ়োনেও শব্দের মাত্রা রাখতে হবে ৪০ ডেসিবেলের মধ্যে।