(বাঁ দিকে) পার্থ চট্টোপাধ্যায়, জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক (ডান দিকে)। —ফাইল চিত্র।
তৃণমূল পরিষদীয় দলের তহবিল পরিচালনায় কি জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের স্বাক্ষর থাকবে? বৃহস্পতিবার গভীর রাতে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয়কে গ্রেফতার করার পর ওই বিষয়েও চিন্তাভাবনা শুরু হয়েছএ তৃণমূলে। ২০০১ সালে তৃণমূল বিধানসভায় প্রধান বিরোধী দলের মর্যাদা পায়। ২০০১ সালেই গাইঘাটা থেকে প্রথম বার বিধায়ক হয়েছিলেন জ্যোতিপ্রিয় (বালু)। সেই সময় তাঁকে এবং বেহালা পশ্চিম থেকে নির্বাচিত প্রথম বারের বিধায়ক পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে পরিষদীয় দলের তহবিল দেখভালের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল।
তখনই ঠিক হয়েছিল, তৃণমূল বিধায়কেরা তাঁদের বেতন থেকে মাসে এক হাজার টাকা করে পরিষদীয় দলের তহবিলে দেবেন। বিধানসভার চত্বরের ব্যাঙ্কেই পরিষদীয় দলের অ্যাকাউন্ট খোলা হয়। সেই অ্যাকাউন্টের চেক সই করার স্বাক্ষরকারী হিসেবে পার্থ ও জ্যোতিপ্রিয়ের নাম নথিভুক্ত করানো হয়। ২০১১ সাল পর্যন্ত এই দু’জনের হাতেই ছিল তৃণমূল পরিষদীয় দলের তহবিল দেখভালের যাবতীয় দায়িত্ব। ২০১১ সাল থেকে পশ্চিমবঙ্গে ক্ষমতাসীন হয় তৃণমূল। এক ধাক্কায় তৃণমূলের বিধায়কের সংখ্যা বেড়ে হয় ১৮৪। সেই সময় দলগত ভাবে সিদ্ধান্ত হয়, পরিষদীয় দলের অ্যাকাউন্ট পরিচালনার জন্য তিন জনের স্বাক্ষর ব্যাঙ্কে নথিভুক্ত করানো হবে। পার্থ এবং জ্যোতিপ্রিয়ের সঙ্গে তৃতীয় স্বাক্ষরকারী হিসেবে কলকাতা বন্দরের বিধায়ক তথা রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমের নামটিও ব্যাঙ্কে নথিভুক্ত করানো হয়। সিদ্ধান্ত হয়, তহবিল থেকে যে কোনও লেনদেনের ক্ষেত্রে দু’জন স্বাক্ষরকারীর স্বাক্ষর বাধ্যতামূলক হবে।
২০২১ সালে তৃণমূল তৃতীয় বার ক্ষমতায় আসার পর পরিষদীয় দল সিদ্ধান্ত নেয়, এ বার থেকে সব বিধায়ককে নিজেদের বেতন থেকে দু’হাজার টাকা করে তহবিলে জমা দিতে হবে। ২০১১ থেকে ২০২২ সালের জুলাই মাস পর্যন্ত এই নিয়মেই কাজকর্ম হত। কিন্তু ২০২২ সালের ২২ জুলাই তদানীন্তন শিল্পমন্ত্রী পার্থ ইডির হাতে গ্রেফতার হন। তখন স্বাক্ষরকারী হিসেবে নতুন নাম নথিভুক্ত করানো জরুরি হয়ে পড়ে। কারণ, পার্থ জেলে থাকার কারণে দলের প্রয়োজনে তাঁর স্বাক্ষর পাওয়া সম্ভব হবে না। তাই নতুন সদস্যের নাম নথিভুক্ত করানো জরুরি হয়ে পড়ে। এরই মধ্যে পার্থকে দল থেকে সাসপেন্ড করা হয়। তখন পার্থের জায়গায় প্রবীণ মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়ের নাম পরিষদীয় দল তহবিলের নতুন স্বাক্ষরকারী হিসেবে ব্যাঙ্কে নথিভুক্ত করানো হয়।
পার্থের ক্ষেত্রে যে সমস্যা তৈরি হয়েছিল, জ্যোতিপ্রিয়ের গ্রেফতারির পরেও সেই একই সমস্যা তৈরি হয়েছে। তাই জ্যোতিপ্রিয়ের বদলে কার নাম ব্যাঙ্কে নথিভুক্ত করানো হবে, তা নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে তৃণমূল পরিষদীয় দলের অন্দরে। মন্ত্রী ও বিধায়কদের বেতন বাড়ানোর বিল নিয়ে আগামী সপ্তাহে এক দিনের অধিবেশন বসতে পারে। সেই সময়েই এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত হতে পারে বলে তৃণমূল পরিষদীয় দল সূত্রের খবর। উল্লেখ্য, তহবিলের স্বাক্ষরকারী হিসেবে শোভনদেব ও ফিরহাদের নাম ব্যাঙ্কে নথিভুক্ত করানো থাকলেও তহবিল পরিচালনার যাবতীয় কাজকর্ম দেখভাল করতেন জ্যোতিপ্রিয় স্বয়ং। তাঁর অনুপস্থিতিতে সেই কাজ কে দেখবেন, তা নিয়েও প্রশ্ন থাকছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy