গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
তাদের পুজোয় গত বছর অসুরের মুখ হয়েছিল মহাত্মা গান্ধীর মুখের আদলে। শেষ পর্যন্ত কলকাতা পুলিশের হস্তক্ষেপে তা বদলানো হয়। এ বার হিন্দু মহাসভার দুর্গাপুজোর মণ্ডপে ঢোকার মুখে ‘উলঙ্গ রাজা’র অবয়বে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের আদলে দু’টি মুখ ছিল বলে অভিযোগ। পুজো সদ্য শেষ হয়েছে। প্রথা মাফিক চলছে পরস্পরকে বিজয়া দশমীর প্রীতি ও শুভেচ্ছা জানানোর পালা।
রাজ্যের মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিককে যখন জেরা করছে ইডি, তখন তাঁর বাড়িত বিজয়ার শুভেচ্ছা জানাতে হাজির হন তৃণমূলের বেশ কিছু কাউন্সিলর। এই আবহে হিন্দু মহাসভা সংগঠনের রাজ্য সভাপতি চন্দ্রচূড় গোস্বামী জানিয়েছেন, বিজয়া দশমীর শুভেচ্ছাবার্তা আর মিষ্টি দিতে নবান্ন এবং তৃণমূলের দফতরের পাশাপাশি ইডি-সিবিআই দফতরেও যাবেন। এ ছাড়াও তাঁর যাওয়ার কথা পশ্চিমবঙ্গ প্রদেশ কংগ্রেস আর রাজ্য বিজেপির দফতরে।
শনিবার এক বিবৃতিতে চন্দ্রচূড় বলেছেন, ‘‘আমরা বিজয়ার শুভেচ্ছা জানাতে শুভেচ্ছাবার্তার কার্ড এবং চিঠি, সুস্বাদু মিষ্টান্ন আর বুকভরা ভালবাসা নিয়ে বিজয়া করতে আসছি নবান্ন প্রশাসনিক ভবন, মতুয়া সম্প্রদায়ের শ্রদ্ধার ঠাকুরনগর, টিএমসি রাজ্য অফিস, বিজেপি রাজ্য অফিস, সিপিএম রাজ্য অফিস, কংগ্রেস রাজ্য অফিস, আরএসএস ভবন আর ইডি-সিবিআই ভবনেও।’’
কেন্দ্রীয় দুই তদন্তকারী সংস্থায় বিজয়ার মিষ্টিমুখ করাতে যাওয়ার ‘কারণ’ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে চন্দ্রচূড় আশ্রয় নিয়েছেন ‘গান্ধীগিরির’। লিখেছেন, ‘‘আমাদের চোখে দুর্ভাগ্যজনক হলেও বাংলায় ইডি-সিবিআই-এর ভূমিকা অনেকটা রাজনৈতিক দলের মতোই, কারণ তাঁরা নিরপেক্ষতা ভুলে রাজনৈতিক প্রভুদের খুশি করতে ব্যস্ত।’’ প্রসঙ্গত, এ বারের পুজোয় গান্ধীজিকে অপমানের রাস্তা থেকে সরে এ বার বিজেপিকে ‘চাপে’ ফেলার বার্তা দিয়েছিল হিন্দু মহাসভা। এখনও কেন ‘সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন’ (সিএএ) কার্যকর হচ্ছে না, সেই দাবি তুলে হিন্দু মহাসভার মণ্ডপে এ বার উমা এসেছিলেন ‘মতুয়া মা’ রূপে।
বিজয়া দশমীর শুভেচ্ছাবার্তাতেও পদ্ম-শিবিরকে খোঁচা দিয়ে চন্দ্রচূড় বলেছেন, ‘‘আক্রমণ, রক্তক্ষরণ এবং প্রতিহিংসার রাজনীতিতে বাংলা-সহ ভারতবর্ষ যখন জর্জরিত, তখন আমরা, ‘অখিল ভারত হিন্দু মহাসভা’ ভারতের অন্যতম প্রাচীন রাজনৈতিক দল সমাজে স্থাপন করতে চলেছি এক অভিনব রাজনৈতিক সংস্কৃতি। আমরা চাই লড়াইটা হোক যুক্তিতে গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে। রাজনৈতিক হিংসার বলি হয়ে আর যেন বাংলার কোন মায়ের কোল খালি না হয় বা সিঁথির সিঁদুর না মুছে যায়।’’
প্রসঙ্গত, গত ২৯ অগস্ট নবান্ন সভাঘরে একটি বৈঠক ডেকেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। সর্বদল সেই বৈঠকে বিজেপি যায়নি। তবে গিয়েছিলেন চন্দ্রচূড়। সে দিন মমতাকে ‘মাতৃসমা’ বলে সম্বোধন করেছিলেন তিনি। জবাবে বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার খোঁচা দিয়েছিলেন চন্দ্রচূড়কে। সেই থেকে দু’দলের টানাপড়েনের সূত্রপাত। বিজেপির অভিযোগ, হিন্দু মহাসভার নেপথ্যে শাসক দল তৃণমূলের সক্রিয় মদত আছে।
গত বৃহস্পতিবার রেশন বণ্টন ‘দুর্নীতি’ মামলায় রাজ্যের মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের বাড়িতে ইডির তল্লাশির অভিযানের সময় মিষ্টি নিয়ে ‘বিজয়া করতে’ পৌঁছে গিয়েছিলেন বিধাননগর পুরসভার চেয়ারম্যান সব্যসাচী দত্ত-সহ কয়েক জন তৃণমূল কাউন্সিলর। এ বার বাঙালির ‘বিজয়া সংস্কৃতিকে’ নতুন মাত্রা দেওয়ার বার্তা চন্দ্রচূড়ের হিন্দু মহাসভার।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy