রোগীদের প্রয়োজনের কথা মাথায় রেখে আংশিক ভাবে কাজে ফিরলেন জুনিয়র ডাক্তারেরা। ছবি: পিটিআই।
শনিবার থেকেই চেনা ছন্দে ফিরতে শুরু করেছে রাজ্যের সরকারি হাসপাতাল ও মেডিক্যাল কলেজগুলি। জরুরি পরিষেবায় কাজে যোগ দিতে শুরু করেছেন জুনিয়র ডাক্তারেরা। চিকিৎসকদের প্রতিবাদ ও আন্দোলনের যে ভরকেন্দ্র, সেই আরজি করেও পরিস্থিতি স্বাভাবিক ছন্দে ফিরতে শুরু করেছে। ইতিমধ্যে সেখানে জরুরি পরিষেবায় কাজে যোগ দিয়েছেন আন্দোলনরত জুনিয়র ডাক্তারেরা। অন্য সরকারি হাসপাতালগুলিতেও কম-বেশি একই চিত্র শনিবার সকাল থেকে।
আন্দোলনরত জুনিয়র ডাক্তারদের অন্যতম প্রতিনিধি আরজি করের আরিফ আহমেদ। শনিবার সকালে তিনি জানিয়েছেন, আরজি কর ও অন্য হাসপাতালগুলিতে জরুরি পরিষেবায় কাজে যোগ দিয়েছেন জুনিয়র ডাক্তারেরা। ইমার্জেন্সি বিভাগ পুরোদমে চালু হয়ে গিয়েছে। আরজি করে শনিবার সকালে যে জুনিয়র ডাক্তারদের ডিউটি ছিল, তাঁরা ইতিমধ্যে হাসপাতালের ট্রমা কেয়ার ভবনে পৌঁছে গিয়েছেন।
গত ৯ অগস্ট আরজি করে মহিলা চিকিৎসককে ধর্ষণ ও খুনের অভিযোগ উঠেছিল। তার পর থেকে বিচার চেয়ে এবং কর্মস্থলে নিরাপত্তার দাবিতে আন্দোলন শুরু করেছিলেন জুনিয়র ডাক্তারেরা। মোট পাঁচ দফা দাবিতে টানা আন্দোলন চালিয়ে গিয়েছেন তাঁরা। সরকার পক্ষের সঙ্গে দু’দফা বৈঠক হয়েছে। এক বার কালীঘাটে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাসভবনে। আর এক বার নবান্নে মুখ্যসচিব মনোজ পন্থের সঙ্গে।
দু’দফা বৈঠকের পর হাসপাতালে নিরাপত্তা ও পরিকাঠামোগত দিকগুলিতে প্রয়োজনীয় সংস্কারের বিষয়ে সরকারের তরফে ইতিবাচক পদক্ষেপ করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাজ্যের স্বাস্থ্যসচিব নারায়ণস্বরূপ নিগমকে এ বিষয়ে ১০ দফা নির্দেশিকা-সহ একটি চিঠি পাঠিয়েছিলেন পন্থ। এর পরেই স্বাস্থ্য ভবনের সামনে টানা ১০ দিনের অবস্থানে ইতি টানার সিদ্ধান্ত নেন জুনিয়র ডাক্তারেরা। শুক্রবার দুপুরে শেষ হয় অবস্থান।
নির্যাতিতার বিচারের দাবিতে শুক্রবার দুপুরে স্বাস্থ্য ভবন থেকে সিজিও কমপ্লেক্সে সিবিআই দফতর পর্যন্ত মিছিলের পরে ক্যাম্পাসে ফেরেন জুনিয়র ডাক্তারেরা। আরজি করে ফিরে তাঁরা সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে জানিয়েছিলেন শনিবার থেকে জরুরি পরিষেবায় কাজে যোগ দেবেন জুনিয়র ডাক্তারেরা। সঙ্গে তাঁরা এ-ও বলেছিলেন, ‘‘এই আন্দোলনের সঙ্গে জুড়েছিলেন এমন প্রচুর মানুষ, যাঁরা এখন বন্যাবিধ্বস্ত। আমরা তাঁদের জন্য ‘অভয়া ত্রাণশিবির’ খুলেছি। সেখানে চিকিৎসা পাচ্ছেন তাঁরা।” আন্দোলনকারীরা আশ্বস্ত করেছিলেন, আরজি করের জুনিয়র ডাক্তারেরা রোগীদের ফিরিয়ে দেবেন না। যথাযথ চিকিৎসা পরিষেবা দেওয়ার চেষ্টা করবেন তাঁরা।
জুনিয়র ডাক্তারেরা শুক্রবার জানিয়েছিলেন, বন্যা পরিস্থিতির মাঝে সাধারণ মানুষের দুর্ভোগের কথা মাথায় রেখে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তবে আরজি করের নির্যাতিতার বিচারের দাবিতে তাঁদের লড়াই জারি থাকবে। প্লাবন পরিস্থিতিতে সাধারণ মানুষের পাশে দাঁড়াতে জুনিয়র ডাক্তারেরা ইতিমধ্যে যে পদক্ষেপ করেছে, সে কথাও জানিয়েছিলেন তাঁরা। আন্দোলনকারীরা বলেছিলেন, ‘‘আমাদের একটি দল ইতিমধ্যে পাঁশকুড়ায় পৌঁছে গিয়েছে। সেখানকার বন্যাবিধ্বস্ত মানুষদের চিকিৎসার দায়িত্ব নিয়েছে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy