জামালপুরে সেচমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। — নিজস্ব চিত্র।
বালি-খাদান নিয়ে কাজিয়ায় রবিবারেই বর্ধমানের খণ্ডঘোষে শাসক দলের তিন জন খুন হয়েছেন। এই পরিপ্রেক্ষিতে বালি-মাফিয়াদের দৌরাত্ম্য বন্ধ করতে সোমবার পথে নামলেন রাজ্যের সেচমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। এ দিন দুপুর থেকে সেচ দফতরের আধিকারিক এবং পুলিশ-প্রশাসনের আধিকারিকদের নিয়ে বর্ধমানের বিভিন্ন এলাকার বালির খাদানে আচমকা অভিযান চালান তিনি।
নদী থেকে বেআইনি ভাবে বালি তোলা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই বিভিন্ন মহল থেকে অভিযোগ উঠছে। সিন্ডিকেট-দৌরাত্ম্যের মতো এ ক্ষেত্রেও তৃণমূলের বিভিন্ন গোষ্ঠী জড়িত বলে অভিযোগ। এই অবস্থায় এ দিন বর্ধমানের জামালপুর, দাঁতপুর, সাহারানপুর, পাল্লা রোড-সহ কিছু এলাকা পরিদর্শন করেন সেচমন্ত্রী। দামোদর নদের বালি খাদানে নেমে পড়েন। সেখানে বালি তুলে নিয়ে যাওয়ার জন্য তৈরি মাটির উঁচু রাস্তা দেখে বিস্ময় প্রকাশ করেন মন্ত্রী। বলেন, ‘‘এই রাস্তার জন্য নদীর জলপ্রবাহ ব্যাহত হচ্ছে। নদীর গতিপথ বদলে যাচ্ছে। ক্ষতি হচ্ছে বাঁধেরও।’’
নিছক পরিদর্শন নয়। হাতেকলমে কিছু ব্যবস্থাও নেন মন্ত্রী। দাঁতপুরে দু’টি বালির খাদান অবৈধ ঘোষণা করে বন্ধ করে দেন তিনি। সেখানে সাতটি বালি তোলার মেশিন বাজেয়াপ্ত করা হয়। বেআইনি ভাবে বালি নিয়ে যাওয়ার অভিযোগে মোট ২৭টি লরি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। তাদের থেকে জরিমানা আদায় হয়েছে প্রায় ১০ লক্ষ টাকা। মন্ত্রী বলেন, ‘‘বেআইনি ভাবে বালি তুলে সরকারের রাজস্ব ফাঁকি দেওয়া যাবে না। সেই জন্যই এই ধড়পাকড়। আর যে-সব খাদানে জল ঢুকেছে, সেখানে আর বালি তোলা যাবে না।’’
কয়েক দিন আগেই বর্ধমানের জেলা পরিষদের প্রশাসনিক বৈঠকে অবৈধ বালি খাদান চিহ্নিত করে সেচ ও ভূমি দফতরকে রিপোর্ট দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন জেলা পরিষদের সভাধিপতি দেবু টুডু। এ দিন মন্ত্রী দু’টি খাদান চিহ্নিত করলেও দেবুবাবুর কাছে এখনও অবৈধ খাদান সংক্রান্ত কোনও রিপোর্ট জমা পড়েনি।
সেচ দফতরের খবর, বছরখানেক আগে চন্দননগরে গিয়ে গঙ্গা থেকে বালি তোলা নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছিলেন সেচমন্ত্রী। তার পরেই তিনি জেলা প্রশাসনকে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেন। এ বিষয়ে সেচ দফতরের হাতে ক্ষমতা দেওয়ার জন্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চিঠিও লেখেন রাজীববাবু। তার জেরে নদী থেকে বালি তোলার জন্য স্বল্পমেয়াদি অনুমতি দেওয়ার ক্ষমতা পায় সেচ দফতর। রাজীববাবু বলেন, ‘‘অভিযান শুরু হয়েছে গত অক্টোবরে। বেআইনি বালির লরি বাজেয়াপ্ত করে এ-পর্যন্ত প্রায় ২৪ কোটি টাকা রাজস্ব আদায় হয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy