হাসানের বসতবাড়ি। সামতা কাজীপাড়ায়। ছবি: সঞ্জীব ঘোষ
ছেলের সঙ্গে জঙ্গি সংগঠন আল কায়দার সংস্রব!
মানতে পারছেন না সফিউল্লাহ। আরামবাগের সামতা গ্রামের ওই প্রৌঢ় বৃহস্পতিবার ভোরে ছেলে কাজী আহসান উল্লাহ ওরফে হাসানের গ্রেফতারির কথা শুনে আকাশ থেকে পড়েছেন। গ্রামবাসীরাও হতবাক।
বুধবার রাতে রাজ্য পুলিশের স্পেশাল টাস্ক ফোর্স উত্তর ২৪ পরগনার শাসনের খড়িবাড়ি এলাকা থেকে আল কায়দার সঙ্গে সংস্রবের অভিযোগে যে দু’জনকে ধরেছে, তার মধ্যে একজন হাসান। তাদের কাছ থেকে ভারতের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণার বার্তা দেওয়া নথি মিলেছে বলে তদন্তকারীদের দাবি।
সফিউল্লাহ দু’সপ্তাহ অন্তর বাড়ি আসেন। পূর্ব বর্ধমানের কুসুমগ্রামে মাদ্রাসায় শিক্ষকতা করেন। বৃহস্পতিবার ভোরে সেখান থেকেই ফোনে তিনি বলেন, ‘‘আমার বিশ্বাস, ছেলের সঙ্গে জঙ্গি সংগঠনের কোনও যোগসূত্র নেই। কোনও ভুল তথ্যে বিভ্রান্ত হয়েই ছেলেকে গ্রেফতারকরা হয়েছে।”
সামতা গ্রামে হাসানের মা ফরিদা বেগম একাই থাকেন। তিনি অসুস্থ। তাঁর তিন ছেলের মধ্যে হাসান বড়। সে কোথায় থাকত, তা-ও ঠিকমতো বলতে পারেন না প্রৌঢ়া। শুধু জানান, বছর ছয়েক আগে নিজের পছন্দমতো বিয়ে করে আলাদা হয়ে যায় হাসান। বাড়িতে আনাগোনা কমে যায়। বিশেষ ধর্মীয় উৎসবে বা প্রয়োজনে দু’এক দিনের জন্য বাড়ি আসত।
কিন্তু ছেলের জঙ্গি-যোগের কথা ফরিদাও বিশ্বাস করছেন না। এ দিন বিভিন্ন সাংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধিদের কাছ থেকেই তিনি ছেলের গ্রেফতারির খবর পান। তারপরে গ্রামবাসীদের সঙ্গে কথা বলে এবং স্বামীকে ফোন করে নিশ্চিত হন। ঘরে টিভি নেই। একটা পুরনো রেডিয়ো আছে। তাতে কোনও খবর শোনেননি তিনি।
ফরিদার কথায়, ‘‘নিজের মতে বিয়ে করা ছাড়া ছেলের কোনও বেচাল বা অস্বাভাবিক আচরণ দেখিনি। কিছুই বুঝতে পারছি না। জঙ্গি-সঙ্গের কথা বিশ্বাস করতে পারছি না। ও পুরনো গাড়ি কেনাবেচা করত জানি। বাড়িতে এলে হাতে দু’পাঁচশো টাকা দিয়ে যেত। আমরা কিছু চাইতাম না। হাওড়া না হাবড়া কোথায় যেন থাকত। এর বেশি কিছু জানি না।”
গ্রামবাসীরা জানান, গ্রামের স্কুলে চতুর্থ শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করে বাবার মাদ্রাসায় চলে যায় হাসান। সেখানে ধর্মীয় পাঠ সেরে পরে রুটি-রুজির জন্য বিভিন্ন জেলার মসজিদে নমাজ পড়ানোর কাজ করেছে। কখনও দর্জির কাজও।
হাসানকে ছোটবেলা থেকে দেখা কাজী ফইজুল ইসলাম, শেখ জাহিরাউদ্দিনরা বলেন, ‘‘ছেলেটা ধর্ম-কর্ম নিয়ে থাকত। এ ধরনের কাজ করতে পারে বলে বিশ্বাস হচ্ছে না।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy