‘কিসান ক্রেডিট কার্ডে’ ঋণের পরিমাণ বাড়াল কেন্দ্রীয় সরকার। শনিবার কেন্দ্রীয় বাজেট পেশের সময় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণ জানিয়েছেন, কৃষকদের গুরুত্ব দিয়েই তৈরি হয়েছে বাজেট। কৃষকদের একটি অংশ খুশি হলেও অন্য অংশ অবশ্য মনে করছেন, কৃষকদের স্বার্থে বাজেট হয়নি। কৃষকদের উৎপাদিত ফসলের দামবৃদ্ধির বিষয়ে কিছু বলা হয়নি। শুধু তাই নয়, উত্তরবঙ্গের প্রধান ফসল ভুট্টা বা পাট নিয়েও কিছু বলা হয়নি।
উত্তরবঙ্গ মূলত কৃষিপ্রধান এলাকা। মালদহ থেকে কোচবিহারের কমপক্ষে ৮০ শতাংশ মানুষ কৃষির উপরে নির্ভরশীল। এই অঞ্চলে ধান, পাট, আলু, ভুট্টা এবং তামাক প্রধান ফসল। এ ছাড়া ডাল, শস্যজাতীয় ফসলও উৎপাদিত হয়। এই অংশের কৃষকদের বেশির ভাগের কিসান ক্রেডিট কার্ড রয়েছে। অর্থমন্ত্রী এ দিনের বাজেটে ছোট চাষিদের দিকে গুরুত্ব দেওয়ার কথা বলেছেন। ডাল উৎপাদনে ‘আত্মনির্ভরতা প্রকল্প’ নেওয়া হয়েছে আগামী ছয় বছরের জন্য। কিসান ক্রেডিট কার্ডে ঋণ তিন লক্ষ থেকে বাড়িয়ে পাঁচ লক্ষ টাকা করা হয়েছে। এ ছাড়া ‘প্রধানমন্ত্রী ধন-ধান্য কৃষি যোজনা’ তৈরি করতে চলেছে কেন্দ্রীয় সরকার। যে প্রকল্পে উপকৃত হবেন প্রায় ১ কোটি ৭০ লক্ষ কৃষক। মৎস্যজীবীদের জন্য ‘বিশেষ ইকোনোমিক জ়োন’ তৈরির কথাও জানানো হয়েছে।
কোচবিহারের একটি ফার্মার্স ক্লাবের সম্পাদক অমল রায় বলেন, ‘‘কেন্দ্রীয় বাজেটে প্রযুক্তি এবং রাজস্ব-সহ অন্যান্য বিষয়ে ভাবলেও কৃষকদের উৎপাদিত ফসলের দামবৃদ্ধির সুরাহা হয়নি। ফার্মার্স প্রোডিউসার্স অর্গনাইজ়েশন নিয়ে নতুনত্ব থাকলেও উত্তরবঙ্গে ভুট্টা, পাট শিল্প নিয়ে কোনও দিশা নেই।’’ সারা ভারত কৃষকসভার নেতা আকিক হাসান বলেন, ‘‘কৃষকদের কথা ভাবা হয়নি বাজেটে। গত বারের তুলনায় বরাদ্দ কমিয়ে দেওয়া হয়েছে। সহায়ক মূল্য নিয়ে আইনি নিশ্চয়তা, ক্রয় সম্প্রসারণ বা কৃষকদের ঋণমুক্ত করার মতো কিছুই বাজেটে নেই। শস্যবিমাতে বিরাট বরাদ্দ কমিয়ে দেওয়া হয়েছে। বন্যপ্রাণীর আতঙ্ক প্রশমনের জন্য কোনও বরাদ্দ দেওয়া হয়নি।’’
বিজেপির কিসান মোর্চার কোচবিহার জেলা সভাপতি মুরারী রায় বলেন, ‘‘এই বাজেট পুরোপুরি কৃষক স্বার্থে হয়েছে। কিসান ক্রেডিট কার্ডে বহু মানুষ উপকৃত হবেন। এ ছাড়া প্রধানমন্ত্রী ধন-ধান্য কৃষি যোজনা কৃষকদের উন্নতি করবে।’’
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)