Advertisement
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪
Uttarkashi Tunnel Collapse

কখন উদ্ধার হবে ছেলেরা, চিন্তা বাড়ছে বাবা-মায়ের

স্নান করে বাড়িতে পুজো করার সময়ে ছেলের সুস্থতা কামনা করে ডুকরে উঠলেন তপতী। মঙ্গলবার ছেলের ভয়েস রেকর্ড পাওয়ার পরে কিছুটা চাঙ্গা হয়ে বুধবার দুপুরে বাড়িতে রান্না করেছিলেন।

জয়দেব পারমানিকের 'মা' ঠাকুরের কাছে প্রার্থনা করছেন । পুরশুড়ার নিমডাঙ্গি

জয়দেব পারমানিকের 'মা' ঠাকুরের কাছে প্রার্থনা করছেন । পুরশুড়ার নিমডাঙ্গি

নিজস্ব সংবাদদাতা
আরামবাগ শেষ আপডেট: ২৪ নভেম্বর ২০২৩ ০৮:২৮
Share: Save:

কাজে মন বসছে না। টাকা দিতে না পারায় কেবল্ স‌ংযোগ কাটা। তাই ছেলের উদ্ধারের খবরের ভরসা বলতে মোবাইল ফোন। তা থেকে নজর সরছে না। বৃহস্পতিবার বেলা ১২টা নাগাদ পুরশুড়ার নিমাডাঙির জয়দেব পরামানিকের মা তপতীর গলায় অস্থিরতা স্পষ্ট। বললেন, ‘‘আর স্থির থাকতে পারছি না! সুড়ঙ্গ থেকে কখন উদ্ধার হবে? ছেলেকে কখন সুস্থ অবস্থায় দেখতে পাব?”

বুধবার রাত ৯টা থেকে মোবাইল ফোনেই বিভিন্ন টিভির চ্যানেল খুলে দেখতে শুরু করেছেন তপতী এবং তাঁর স্বামী তাপস। রাত ১টা নাগাদ তাতেই জানতে পারেন উত্তরকাশীতে আটকে পড়া তাঁর ছেলে সহ ৪১ জনকে বৃহস্পতিবার সকালে উদ্ধার করা হবে। এ দিন সকাল ৭টা থেকে মোবাইল থেকে চোখ সরাচ্ছিলেন না। দুপুরে যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে উদ্ধার কাজে আরও বারো-চোদ্দো ঘণ্টা সময় লাগবে বলে খবর পেয়ে তাঁরা উদভ্রান্ত।

স্নান করে বাড়িতে পুজো করার সময়ে ছেলের সুস্থতা কামনা করে ডুকরে উঠলেন তপতী। মঙ্গলবার ছেলের ভয়েস রেকর্ড পাওয়ার পরে কিছুটা চাঙ্গা হয়ে বুধবার দুপুরে বাড়িতে রান্না করেছিলেন। কিন্তু বৃহস্পতিবার দিনভর বাড়িতে হাঁড়ি চড়েনি। দুপুরে তাঁকে জা মামণি জোর করে স্নানে পাঠান, নিজেদের বাড়িতে রান্না করা খাবার খাওয়ান।

জয়দেবের বাবা তাপস অবশ্য এ দিন সকাল থেকে গ্রামে তাঁর চায়ের দোকান খুলেছেন। দোকান না চালালে সংসার চলবে না জানিয়ে তিনি বলেন, “কষ্ট চেপে নিজেকে স্বাভাবিক রাখার চেষ্টা করছি। আমার একমাত্র ছেলে আর বাকিরা সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরুক।’’ তিনি জানান, ছেলের সুড়ঙ্গে আটকে পড়ার খবর পাওয়া থেকেই স্ত্রী অসুস্থ। রক্তচাপ কমে গিয়েছে। চিকিৎসকের পরামর্শে ওষুধ খাচ্ছেন।

একই রকম উৎকণ্ঠায় সুড়ঙ্গে আটকে পড়া পুরশুড়ারই হরিণাখালির বছর চব্বিশের সৌভিক পাখিরার বাবা-মা, আত্মীয়েরা। মা লক্ষ্মী বলেন, “সুস্থ ভাবে ছেলেদের বের করতে ঝুঁকি না নিয়ে উদ্ধারের কাজ চলছে। সবই টিভিতে দেখছি। খবরেও বলা হচ্ছে। তবু উদ্ধারের কাজ যত পিছোচ্ছে, ততই অস্থির লাগছে। ছেলেকে নিজের চোখে না দেখলে আর শান্তি হচ্ছে না।’’ ছেলের মঙ্গল কামনায় পুজোর আয়োজন করেছেন তিনি।

সৌভিকের বাবা অসিত আমন ধান ঝাড়ার কাজে শ্রমিকদের তদারকিতে ব্যস্ত ছিলেন। বললেন, “বাড়িতে বসে থাকলে চিন্তা বাড়ছে। তাই কাজে এসেছি। উদ্ধারে প্রশাসনের সক্রিয়তার কথা জেনে কিছুটা নিশ্চিন্ত লাগছে। তবে বুঝতে পারছি না, কখন বের করা সম্ভব হবে। ছেলেকে দেখার জন্য মনটা ছটফট করছে।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Arambagh migrant labour
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy