দুরবস্থা: হাওড়া স্টেশনের দিক থেকে বঙ্কিম সেতুতে ওঠার রাস্তা। ছবি: দীপঙ্কর মজুমদার।
হাওড়া সেতুর রাস্তা মেরামতির কাজ যে নিয়মের জেরে আটকে গিয়েছিল, সেই একই নিয়মের গেরোয় আটকে গেল হাওড়ায় ভাঙাচোরা রাস্তা সারাইয়ের কাজ। জাতীয় পরিবেশ আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী, রাস্তার মধ্যে আগুন জ্বেলে আর পিচ গলানো যাবে না। কারণ, পিচের সেই কালো ধোঁয়া ভয়ঙ্কর বায়ুদূষণ ঘটায়। এ দিকে, হাওড়া পুরসভার নিজস্ব কোনও হট মিক্স প্লান্ট নেই। তাই এত দিন রাস্তার উপরেই আগুন জ্বেলে পিচ গলিয়ে বা অন্য কোথাও হট মিক্স করে রাস্তা মেরামতির কাজ চলছিল। এ ভাবেই আদালতের নির্দেশ না মেনে নেতাজি সুভাষ রোড মেরামত করার সময়ে দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ নজরদারি শুরু করায় রাস্তাটি ম্যাস্টিক অ্যাসফল্ট করার কাজ যেমন বন্ধ হয়ে গিয়েছে, তেমনই আটকে গিয়েছে অন্য রাস্তা মেরামতিও।
বর্ষার জেরে বর্তমানে হাওড়ার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা ইস্ট-ওয়েস্ট বাইপাস, পঞ্চাননতলা রোড, নেতাজি সুভাষ রোড, বেনারস রোড, হাওড়া সেতু থেকে বঙ্কিম সেতুতে ওঠার মুখে অ্যাপ্রোচ রোডের অবস্থা খুবই শোচনীয়। সব থেকে খারাপ অবস্থা গলিপথগুলির। কোথাও পিচের চাদর উঠে বড় বড় গর্ত হয়ে গিয়েছে, কোথাও আবার সেই গর্তে জল জমে বোঝার উপায় থাকছে না যে, সেখানে গর্ত রয়েছে। এ দিকে মাসখানেক পরেই পুজো। প্রতি বছরই পুজোর আগে রাস্তা মেরামত করে পুরসভা। এ বারও ভাঙা রাস্তা মেরামত করার জন্য একটি তালিকা তৈরি করা হয়েছে। কিন্তু বাদ সেধেছে দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের হট মিক্স প্লান্ট সংক্রান্ত আইন।
হাওড়া পুরসভার চেয়ারপার্সন সুজয় চক্রবর্তী শুক্রবার বলেন, ‘‘পুরসভার নিজস্ব কোনও হট মিক্স প্লান্ট নেই। এ দিকে, রাস্তায় আগুন জ্বালিয়ে পিচ গলানোও যাবে না। সব মিলিয়ে পুজোর আগে রাস্তা মেরামত করার কাজে একটা সমস্যা দেখা দিয়েছে।’’ পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, এই সমস্যা এড়াতে ইতিমধ্যে হাওড়ার বহু রাস্তা পিচ দিয়ে সারানোর বদলে কংক্রিটের করে দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু, কংক্রিটে রাস্তা তৈরির খরচ পিচের রাস্তার তুলনায় অনেকটাই বেশি। পুরসভার আর্থিক সঙ্কটের কারণে তাই সমস্ত ভাঙা রাস্তা কংক্রিটের করা সম্ভব নয়। তবে কিছু রাস্তা কংক্রিট দিয়ে মেরামত করা হবে বলে পুরসভা সূত্রের খবর।
পুর চেয়ারপার্সন বলেন, ‘‘সব রাস্তা কংক্রিটের করে দেওয়া সম্ভব নয়। যেগুলি পিচের করতেই হবে, সেই রাস্তাগুলির মেরামতকারী ঠিকা সংস্থাকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের সমস্ত নির্দেশিকা মেনে কাজ করার জন্য।’’ তিনি আরও জানান, পুরসভার নিজস্ব হট মিক্স প্লান্ট এখনই তৈরি করা সম্ভব নয়। তবে জায়গার সন্ধান চলছে। এখন তাই অন্য কোনও বৈধ হট মিক্স প্লান্ট থেকে পিচ গলিয়ে নিয়ে এসে রাস্তাগুলি মেরামত করা যায় কি না, তা দেখা হচ্ছে। পাশাপাশি, যে রাস্তাগুলি কংক্রিট দিয়ে মেরামত করা যাবে, তার তালিকা তৈরি করা হচ্ছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy